চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হজ-ওমরাহ পালনের কাজও রমজানে সেরে ফেলতে হয়

রায়হান আজাদ

২৯ মে, ২০১৯ | ১:৪৩ পূর্বাহ্ণ

মাহে রমজান আল্লাহ পাকের সান্নিধ্য লাভের সময়। এ মাস হজে বায়তুল্লাহর প্রস্তুতিরও মাস। যাদের উপর হজ ফরজ করা হয়েছে তাদেরকে এ মাসেই হজ আদায়ের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। ইসলামের মৌলিক পাঁচ স্তম্ভের সবগুলোই রমজান মাসে বাস্তবায়নের সুযোগ রয়েছে। সে হিসেবে যাকাত যেমনি রমজানে দেয়া উত্তম, তেমনি হজের ভিসা গ্রহণসহ আনুষাঙ্গিক প্রয়োজনীয় কাজও রমজানের মধ্যেই সেরে ফেলতে হয়। হজ প্রাপ্তবয়স্ক, সুস্থ ও আর্থিকভাবে সক্ষম সকল মুসলমানকে জীবনে একবার অবশ্যই পালন করতে হবে। আল কুরআনে আদেশ করা হয়েছে, মানুষের মধ্যে যারা বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার সামর্থ্য রাখে তাদের উপর ফরজ হলো তারা আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহ শরীফে হজ করবে, আর যে তা করতে অস্বীকার করবে তার জানা উচিত আল্লাহ বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন। (সুরা আল ইমরান-৯৭)। অন্য জায়গায় এসেছে, আল্লাহর সন্তোষ বিধানের জন্য যখন হজ ও ওমরাহ’র নিয়্যত করবে, তখন তা পূর্ণ করবে। (সুরাতুল বাকারা-১৯৫)।
হজ একটি আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এ ইবাদতের গুরুত্ব ও তাৎপর্য সীমাহীন। হাদিস শরীফে এসেছে, যার কাছে বায়তুল্লাহ পর্যন্ত পৌঁছার বাহন ও পাথেয় আছে; তা সত্ত্বেও সে হজ করে না তবে সে ইহুদি হয়ে মরুক কিংবা নাসারা হয়ে মরুক।
আরেক জায়গায় ইরশাদ হয়েছে, হজ ইচ্ছা পোষণকারী যেন তাড়াতাড়ি তা সমাপন করে ফেলে। কেননা সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে, তার উট হারিয়ে যেতে পারে বা তার ইচ্ছা বাধাগ্রস্ত হয়ে পড়তে পারে। (ইবনে মাজাহ)।
হাদিস শরীফে মকবুল হজের বহু ফজিলত সম্পর্কে আলোকপাত করা হয়েছে। হজের ফলে এর পালনকারী নিষ্পাপ শিশুর মতো পবিত্র হয়ে যায়। মুমিন ব্যক্তি আল্লাহ তা‘য়ালা ও তার রাসুলের প্রতি গভীর ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ দেখায় বায়তুল্লাহ শরীফ তাওয়াফ ও রওজা মোবারক যিয়ারতের মাধ্যমে। হাদিসে এসেছে, মকবুল হজের বিনিময় জান্নাত ব্যতিত আর কিছুই নয়।
হজ ও ওমরাহ সফরকারী অবশ্যই মদিনাতুল মুনাওয়ারাহ গিয়ে বিশ্বনবীর রওজা পাক যিয়ারত করে থাকেন। আর এ যিয়ারত সম্পর্কে নবীজী ফরমাইয়েছেন, যে ব্যক্তি আমার রওজা যিয়ারত করবে তার জন্য আমার সুপারিশ আবশ্যক হয়ে পড়বে। হজে গমনের ফলে কা‘বা শরীফের সাথে সম্পর্ক বৃদ্ধি পায়। কা‘বা শরীফ সম্পর্কে আল কুরআনে ইরশাদ হয়েছে, বস্তুত সর্বপ্রথম গৃহ, যা ইবাদতের জন্য নির্মিত হয়েছে তা হচ্ছে ঐ গৃহ, যা মক্কায় বিদ্যমান। ইহা অত্যন্ত বরকতময় এবং সমস্ত বিশ্ববাসীর জন্য হিদায়াতের কেন্দ্রবিন্দু রূপে পরিগণিত। (সূরা আল ইমরান:৯৬)
রমজান মাসে ওমরাহ পালন করা অত্যধিক সওয়াবের কাজ। তাই প্রতি বছর মুসলিম বিশ্ব থেকে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলমান এ মাসে পবিত্র মক্কা শরীফে জমায়েত হন। তারা আল্লাহর পাকের সান্নিধ্য লাভে নিজেদের সকল সত্ত্বা বিলিয়ে দিয়ে দিনরাত ইবাদতে মশগুল থাকেন। একই উদ্দেশ্যে দৈনিক পূর্বকোণের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান বিশিষ্ট শিল্পোদ্যাক্তা আলহাজ মুহাম্মদ ইউসুফ চৌধুরী ২০০৭ সালে রমজানের প্রারম্ভে উমরাহ পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা শহরে গমন করলে বার্ধক্যজনিত রোগে ইন্তেকাল করেন এবং এ পবিত্র মক্কা নগরীতেই তাকে চিরতরে শায়িত করা হয়। হে আল্লাহ মালিক ! আপনি এ সৌভাগ্যময় মৃত্যুকে জান্নাতে যাওয়ার উসিলা বানিয়ে দিন আর আমাদের সবাইকে ফরজ হজ আদায় এবং পবিত্র রমজানে বেশি বেশি উমরাহ পালন করার তৌফিক দান করুন ॥ আমিন।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট