চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ধনীর সংখ্যা বেড়ে দিগুণ

নিজস্ব প্রতিবেদক

২১ জানুয়ারি, ২০২০ | ৭:১০ অপরাহ্ণ

অক্সফামের বার্ষিক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে ২০১৯ সালে ২ হাজার ১৫৩ জন বিলিয়নেয়ারের সম্পদের পরিমাণ বিশ্বের ৪৬০ কোটি বা ৬০ শতাংশ মানুষের সম্পদকে ছাড়িয়ে গেছে।

এএফপি ও সিএনবিসির খবরে বলা হয়েছে, এ বৈষম্যের ফলে আমাদের অর্থনীতি গোড়াতেই হোঁচট খাচ্ছে। গত দশকে বিশ্বে বিলিয়নেয়ারদের সংখ্যা বেড়ে দ্বিগুণ হয়েছে। তীব্র এ ধনবৈষম্যের সবচেয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে দরিদ্র নারী ও কিশোরীদের ওপর। অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও সমাজকে বাঁচিয়ে রাখতে তাদের অবদান সবচেয়ে বেশি। কিন্তু শিক্ষা, সন্তোষজনক আয় কিংবা সামাজিক ব্যাপারে তাদের মতামত গুরুত্ব পেয়েছে সবচেয়ে কম।

বৈশ্বিক জনসংখ্যার এ অংশের দৈনিক ১ হাজার ২৫০ কোটি ঘণ্টা অবৈতনিক ‘কেয়ার ওয়ার্কে’ (প্রবীণ ও শিশু পরিপালন) ব্যয় হয়, যার বার্ষিক আর্থিক পরিমাণ আনুমানিক ১০ লাখ ৮০ হাজার কোটি ডলার। এদিকে প্রবীণ ও সন্তান পরিপালনের কারণে বিশ্বের ৪২ শতাংশ নারী চাকরি করতে পারেন না। এক্ষেত্রে নারীর তুলনায় চাকরি করতে না-পারা পুরুষের হার মাত্র ৬ শতাংশ।

বৈশ্বিক ধনী-গরিব ধনবৈষম্য সম্পর্কে অক্সফামের ভারতের প্রধান অমিতাভ বেহার বলেন, আমাদের বিধ্বস্ত অর্থনীতিগুলো বিলিয়নেয়ার ও অতিকায় ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পকেট ভারী করছে। এর মাশুল গুনতে হচ্ছে সাধারণ নারী-পুরুষ উভয়কেই। বিলিয়নেয়ারদের প্রয়োজন আছে কিনা, মানুষ এমন প্রশ্ন করতে শুরু করলে বিস্মিত হওয়া ছাড়া কিছু করার থাকবে না বলেও জানান তিনি। অন্যদিকে পরিকল্পিত বৈষম্য বিমোচন নীতিমালা ছাড়া বিরাজমান ধনী-গরিব দুস্থর ব্যবধান সমাধান করা সম্ভব নয় বলেও জানান বেহার। প্রসঙ্গত, আজ থেকে সুইজারল্যান্ডের দাভোসে শুরু হওয়া ওয়াল্ড ইকোনমিক ফোরামের (ডব্লিওইএফ) বার্ষিক সভায় অক্সফামের প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি।

প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বের শীর্ষ ২২ ধনীর সম্পদের পরিমাণ আফ্রিকার মোট নারীদের সম্পদের চেয়ে বেশি। আরেকটা মজার তবে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য, মিসরের পিরামিড নির্মাণের সময় থেকে কেউ রোজ ১০ হাজার ডলার করে জমা করলে তার পক্ষে বর্তমান শীর্ষ পাঁচ ধনীর সম্পদের ৮০ শতাংশের বেশি সঞ্চয় করা সম্ভব হবে না।

এদিকে ফোর্বসের হিসাবে বিশ্বের বর্তমান শীর্ষ ধনী অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। তার নিট সম্পদের পরিমাণ ১১ হাজার ৬৪০ কোটি ডলার। দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী বিলাসী পণ্যের প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচের কর্ণধার বার্নাড আরনাওল্ট। ফরাসি ভদ্রলোকের সম্পদের নিট পরিমাণ ১১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।

এ পরিস্থিতিতে বিশ্বের সরকারগুলোকে ধনবৈষম্য কমাতে সহায়ক নীতিমালা বাস্তবায়নের জন্য আহ্বান জানিয়েছে অক্সফাম। এজন্য আগামী দশকজুড়ে শীর্ষ ধনীদের ওপর দশমিক ৫ শতাংশ কর বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে। শীর্ষ ধনীদের ১ শতাংশ আগামী এক দশকজুড়ে এ হারে অতিরিক্ত কর দিলে প্রবীণ ও শিশু পরিপালন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে আগামী ১০ বছরে ১১ কোটি ৭০ লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার মতো অর্থ জোগাড় করা যেতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনটিতে।

পূর্বকোণ/-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট