চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সংসদে প্রধানমন্ত্রী আইন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি সম্মান দেখানো যাবে না

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

১৬ জানুয়ারি, ২০২০ | ৪:২১ পূর্বাহ্ণ

আইন করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি মন থেকে সম্মান দেখানো যাবে না বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, ’৭৫-এর পর বাংলাদেশ অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। সেই অন্ধকার ভেদ করে এখন বাংলাদেশ আলোর পথে যাত্রা শুরু করেছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন ও আদর্শ নিয়ে দেশকে স্বাধীন করেছিলেন, তা বাস্তবায়নে আমরা অনেক দূর এগিয়ে গেছি। তাই মুজিববর্ষকে (বিএনপি) মানলো, কে মানলো না- সেজন্য জাতি বসে নেই, বসে থাকেনি। তারা যদি কাউকে সম্মান না দেখাতে চায়, তাহলে সেটা আইন দিয়েই তো তাদের মনের ইচ্ছাটা পূরণ করা যাবে না।

গতকাল জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ কথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে তিনি বিএনপি-জামায়াত জোটের কড়া সমালোচনা করে বলেন, যারা বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িত, যারা সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর হত্যকা-ের জড়িত খুনিদের বিচারের হাত থেকে মুক্ত করে পুরস্কৃত করেছে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী-যুদ্ধাপরাধী, যাদের বিচার শুরু হয়েছিল- তাদের বিচারের পথ বন্ধ করে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দিয়ে মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী বানিয়েছিল- তাদের (বিএনপি) কাছ থেকে ভালো কিছু আশা করা যায় না। তারা যদি কাউকে সম্মান না দেখাতে পারে, সেজন্য জাতি বসে থাকেনি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তাঁর অবদান, নাম, স্লোগান ও ভাষণ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল, ইতিহাসকে বিকৃত করা হয়েছিল। আজকে সেই সঠিক ইতিহাস উদ্ভাসিত হয়েছে। শুধু বাঙালির মুখে নয়, সারাবিশ্বে বঙ্গবন্ধুর অবদান স্বীকৃতি পেয়েছে।
তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভান্ডারীর সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, ’৭৫-এর পর ২১টি বছর জাতির পিতার নাম-নিশানা ইতিহাস থেকে মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছিল। কিন্তু বাংলার মাটিতে সত্যকে কখনো মিথ্যা দিয়ে চাপা দিয়ে রাখা যায় না, মুছে ফেলা যায় না- সেটা আজ প্রমাণিত সত্য। প্রমাণিত সত্য বলেই বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ ইউনেস্কোর প্রামাণ্য দলিলে স্থান পেয়েছে। গত আড়াই হাজার বছরে বিশ্বের যত নেতৃত্বের ভাষণ তাঁর দেশ ও দেশের মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছে- তার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ। এটা গোটা বিশ্বই স্বীকার করে নিয়েছে।

বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মো. ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সবাই এমপি, কেউ উঁচু বা নিচুতে নেই। আর আমি কখনো নিজেকে উঁচুতে রয়েছে তা কখনো ভাবি না। আর কী পেলাম আর কী পেলাম না, সেই হিসাব আমি কখনো মেলাই না। বরং দেশের মানুষকে, দেশকে কতটুকু দিতে পারলাম, যে মানুষগুলোর জন্য আমরা পিতা (বঙ্গবন্ধু) জীবন দিয়ে গেলেন, সেই মানুষের জন্য কতটুকু করতে পারলাম- সেটাই আমার কাছে সবচেয়ে বড় কথা। আর আমার কাছে কখনোই আমিত্ব বলে কোন কিছু নেই।

বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে মুজিববর্ষ উদযাপন করবে ইউনেস্কো

জাতিসংঘের শিল্প, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২০ সালের ১৭ মার্চ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত সময়কে ‘মুজিববর্ষ’ ঘোষণা করা হয়েছে।
ঢাকা-১১ আসনের সংসদ সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহর তারকাচিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী যথাযথ মর্যাদায় উদযাপনের লক্ষ্যে জাতীয়, আন্তর্জাতিক এবং স্থানীয় পর্যায়ে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় জাতিসংঘের শিল্প, বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করবে। তিনি বলেন, শিক্ষা, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও বাকস্বাধীনতা সমুন্নত রাখার অনন্য সাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০২০ সালে ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। জাতি হিসেবে এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের সংবাদ।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট