চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

প্রেস কাউন্সিলের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় তথ্যমন্ত্রী

অনলাইন গণমাধ্যমকে নিবন্ধনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৯ মে, ২০১৯ | ২:৫৮ পূর্বাহ্ণ

অনলাইন গণমাধ্যমকে নিবন্ধনের আওতায় আনার প্রক্রিয়া চলছে জানিয়ে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, এখন কেউ একটা অনলাইন খুলে ৫ জনের হাতে সাংবাদিকতার কার্ড তুলে দিচ্ছে। এদের কেউ কেউ এসব কার্ড ব্যবহার করে অপকর্মে যুক্ত হয়ে সাংবাদিকতা পেশার অমর্যাদা করছে। সাংবাদিকতা পেশার মর্যাদা রক্ষায় এসব গণমাধ্যমকে শৃংখলার মধ্যে আনতে প্রেস ক্লাব ও সাংবাদিক ইউনিয়নসমূহকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান তিনি। গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, দেশে অনলাইনের পাশাপাশি দৈনিক ও টেলিভিশনের অনলাইন রয়েছে। অনলাইনকে নিবন্ধনের আওতায় আনছি। বিভিন্ন সংস্থা অনেক অনলাইন সম্পর্কে প্রতিবেদনও দিয়েছে। অনলাইনগুলোকে শৃঙ্খলায় আনতে হবে। এক্ষেত্রে সাংবাদিক ইউনিয়ন ও প্রেস ক্লাবগুলোকে এগিয়ে

আসতে হবে। তিনি বলেন, যে ধরনের সমাজ ও রাষ্ট্র চাই তা গঠনে সবার অংশগ্রহণ জরুরি। বস্তুগত উন্নয়ন দিয়ে উন্নত জাতি গঠন সম্ভব না। বস্তুগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নত জাতি গড়তে হবে। স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে সাংবাদিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধন উন্নত রাষ্ট্র থেকে এগিয়ে। এ বন্ধন অটুট রাখতে হবে। গণমাধ্যমে অনুসন্ধানী রিপোর্টের ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, অনেক রিপোর্ট সমাজে তৃতীয় নয়ন খুলে দেয়। এ ধরনের রিপোর্টের জন্য সংশ্লিষ্ট রিপোর্টারকে বিশেষভাবে মূল্যায়ন করা উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
সমাজ পরিচালনা ও উন্নত জাতি গঠনে গণমাধ্যমের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, শুধু বস্তুগত উন্নয়নের মাধ্যমে অবকাঠামো তৈরি করা হয়। কিন্তু উন্নত জাতি গঠন ভিন্ন বিষয়। উন্নত জাতি গঠনে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু হলে অনুষ্ঠিত এ কর্মশালায় রিসোর্স পার্সন হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি ও প্রেস কাউন্সিলের সদস্য মনজুরুল আহসান বুলবুল ও বাংলাদেশ প্রতিদিন সম্পাদক নঈম নিজাম। প্রেস কাউন্সিলের সচিব মো. শাহ আলমের সঞ্চালনায় এতে অন্যান্যের মধ্যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি আলহাজ আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, বিএফইউজে সহ সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী ও সিইউজের সাধারণ সম্পাদক হাসান ফেরদৌস বক্তব্য রাখেন। চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক কামাল হোসেন কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন গণমাধ্যমের অর্ধ শতাধিক সাংবাদিক কর্মশালায় অংশ নেন। কর্মশালা উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ মমতাজ উদ্দিন আহমেদ।
তিনি গণমাধ্যমকে রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ উল্লেখ করে বলেছেন, সাংবাদিক ছাড়া জাতি বাঁচবে না। অনলাইনে অবাধ তথ্য সরবরাহের কারণে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সমস্যা হচ্ছে। নানা বিপদ সৃষ্টি হচ্ছে। দেশে ৮ হাজার অনলাইন পোর্টাল রয়েছে। সাংবাদিকদের নামে চাঁদাবাজি, অনৈতিকতা, হলুদ সাংবাদিকতা থেকে পরিত্রাণ চাই। এটা প্রকৃত সাংবাদিকদের করতে হবে। সাংবাদিক নেতৃত্বকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। অনৈতিকতার লাগাম টানতে হবে। সাংবাদিকদের অধিকারের প্রশ্ন রয়েছে। প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধন বা যুগোপযোগী করার জন্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে। সাংবাদিকতাকে আন্তর্জাতিক মানের করতে চেষ্টা করছি।
মনজুরুল আহসান বুলবুল বলেন, সাংবাদিকতা মূর্খ লোকের পেশা নয়। অতীতকে ধারণ করে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ চিন্তা করতে হবে। তিনি ১৯৭৪ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের অর্ডিন্যান্সমূলে গঠনের দিনটিকে গণমাধ্যম দিবস ঘোষণার দাবি জানান।
নঈম নিজাম বলেন, সাংবাদিকদের মর্যাদার আসন ধরে রাখতে সর্বোচ্চ পেশাদারিত্ব বজায় রাখতে হবে। সাহসের সঙ্গে গণমানুষের কথা বলতে হবে। মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতার পক্ষে থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট