চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

অজয় রায়ের মরদেহ শহীদ মিনারে নেয়া হবে সকালে

অনলাইন ডেস্ক

১০ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা জানাতে মুক্তিযোদ্ধা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক একুশে পদকজয়ী পদার্থবিদ অজয় রায়ের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।

আজ মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মরদেহ রাখা হবে। এরপর অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা শেষে তার মরদেহ গবেষণার জন্য রাজধানীর বারডেম হাসপাতালকে দান করা হবে।

অজয় রায়ের ছোট ছেলে অনুজিৎ রায় জানান, বাবার মরদেহ মঙ্গলবার সকালে বারডেম হাসপাতালের হিমঘর থেকে আমাদের বেইলি রোডের বাসভবনে নেওয়া হবে। সেখান থেকে সকাল ১১টার দিকে নেওয়া হবে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে মরদেহটি সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য ঘণ্টাখানেক রাখা হবে। এরপর দুপুর ১২টার দিকে মরদেহটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে নেওয়া হবে। সেখান থেকে জগন্নাথ হলে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেওয়া হবে। এরপর বাবার শেষ ইচ্ছা অনুযায়ী, চিকিৎসাবিজ্ঞানে গবেষণার জন্য তার মরদেহ বারডেম হাসপাতালে দান করা হবে। 

এর আগে সোমবার দুপুরে রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান অজয় রায়। শিক্ষা আন্দোলনের অগ্রপথিক অজয় রায়ের বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর। জ্বর, শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়ে গত ২৫ নভেম্বর বারডেম হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি। 

অধ্যাপক অজয় রায় ১৯৩৫ সালের ১ মার্চ দিনাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৫৭ সালে এমএসসি পাস করে যোগ দেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে। তিনি ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পদার্থবিদ্যা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৬ সালে ইংল্যান্ডের লিডস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৬৭ সালে সেখানেই করেন পোস্ট ডক্টরেট। পুনরায় যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে তিনি পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। 

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানেও তিনি ছিলেন সামনের কাতারে। অবসর নেওয়ার আগ পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই তিনি শিক্ষকতা করেছেন। ২০০০ সালে অবসর নেওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েই ইউজিসি অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তার দুটি গবেষণা প্রবন্ধ নোবেল কমিটিতে আলোচিত হয়।

অধ্যাপক অজয় রায় ২০১২ সালে পদার্থবিজ্ঞানে একুশে পদক পান। দেশি-বিদেশি বহু জার্নালে তার নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। স্বাধীনতার পর তিনি বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির জেনারেল সেক্রেটারি, সম্প্র্রীতি মঞ্চের সভাপতি, বাংলাদেশ ইতিহাস পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট, এশিয়াটিক সোসাইটির বিজ্ঞান বিভাগের সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য প্রভৃতি দায়িত্ব পালন করেন।

অজয় রায়ের বড় ছেলে অভিজিৎ রায়কে ২০১৫ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি কুপিয়ে হত্যা করে উগ্রবাদীরা। অমর একুশে গ্রন্থমেলা থেকে ফেরার পথে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। সেদিন হামলার শিকার হয়ে হাতের আঙুল হারান অভিজিতের স্ত্রী ব্লগার রাফিদা আহমেদ বন্যাও। এ ঘটনায় সেনাবাহিনী থেকে পালিয়ে যাওয়া মেজর জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট