চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বিমানে বসে খুঁজে খুঁজে বাংলা সিনেমা দেখি : প্রধানমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

৯ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৪:২৩ পূর্বাহ্ণ

চলচ্চিত্র শিল্পে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ গতকাল রবিবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ ও ২০১৮ প্রদান করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সভাপতিত্ব করেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি পুরস্কারপ্রাপ্ত

সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন-শুভেচ্ছা জানাই। আমি আশা করি এখানেই যেন শেষ হয়ে না যায়, আপনারা আমাদের চলচ্চিত্রকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। আমি নিজে খুব একটা সিনেমা দেখার সুযোগ না পেলেও যখন বিদেশে যাই তখন বিমানে উঠলে আমি বিমানে বসে সিনেমা দেখি এবং আমাদের বাংলা বইগুলো খুঁজে খুঁজে আমি দেখি। আমার খুব ভালো লাগে যে এত চমৎকার সব সিনেমা আমাদের হয়। সেজন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাই এবং আমাদের আরও সুন্দর সুন্দর ছবি নির্মাণ হোক সেটাই আমি চাই।’
মাত্র ২৪ মিনিটেই শেষ হয়ে যায় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০১৭ ও ২০১৮’র প্রথম পবের আয়োজন। পুরস্কার প্রদান শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বক্তব্যে সকল বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান।

বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও গাজীসহ সব মুক্তিযোদ্ধার প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা চলচ্চিত্রের উন্নয়নে অনেক কিছু করেছি। আরও অনেক পরিকল্পনা রয়েছে। আমাদের সিনেমা দর্শক হারিয়েছে। কীভাবে দর্শককে আবারও হলে ফেরানো যায় সেজন্য অনেক উদ্যোগ হাতে নিয়েছি আমরা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি নিজেও হল মালিকদের সঙ্গে বসেছি। আমার মনে হয় দর্শক ফেরাতে হলে সিনেমাকে ডিজিটালাইজড করতে হবে। বিশেষ করে দেশের জেলা-উপজেলা পর্যায়েও সিনেমা হল ডিজিটাল করতে হবে। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এখন মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে। তাদের জন্য সময় উপযোগী বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শিল্পকলার সবগুলো মাধ্যমের ভেতরে সবচেয়ে শক্তিশালী মাধ্যম চলচ্চিত্র। এর মাধ্যমে মানুষের মনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা সম্ভব। মানুষের মনে গভীর দাগ কাটতে পারে এই চলচ্চিত্র। চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে মানুষের জন্য। দেশে জঙ্গিবাদ আমরা প্রতিরোধ করছি। শুধু আইনের মাধ্যমে মানুষের মধ্যে পরিবর্তন আনা সম্ভব নয়। চলচ্চিত্র এখানে বিরাট একটা ভূমিকা রাখতে পারে। সেদিকে আপনারা আরও বেশি নজর দেবেন।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকটা ঘটনা ও কাহিনী যখন তৈরি হবে সেটা যেন জীবনভিত্তিক হয়। দেশের অনেক শিল্পী বাইরে গিয়েও ভালো কাজ করছেন। দেশেও যেন তারা ভালো কাজ করে সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’ শেখ হাসিনা বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ হচ্ছে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায়। আমরা ভারতের প্রখ্যাত নির্মাতা শ্যাম বেনেগালকে পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছি। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে অনেক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে হবে।’

এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা সময় এ দেশে বঙ্গবন্ধুর নামও নেওয়া যেত না। আজকে জাতির পিতার নাম শুধু দেশে নয়, বিশ্বের দরবারে স্থান করে নিয়েছে। ইউনেস্কো বাংলাদেশের সঙ্গে জাতির পিতার জন্মদিন যৌথভাবে পালন করবে বলেছে। বঙ্গবন্ধু আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন। সিনেমার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে দিয়েছেন। এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।’

বাংলা নাটকের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আসলে এমনিতেও সময় পাই না। সারা দিন ফাইল দেখতে দেখতে আর নথি পড়তে পড়তেই দিন কেটে যায়। তবে মাঝেমধ্যে টেলিভিশনে আমি একটু একটু করে নাটক হয়তো সব দেখতে পারি না, কিছু কিছু দেখি কিন্তু আমি সত্যি কথা বলতে পারি আমি কাউকে বদনাম করতে চাই না। তবে অন্য জায়গায় যেমন শুধু শাড়ি আর গহনার কম্পিটিশন আর খুনসুটি দেখি সেখানে আমাদের প্রত্যেকটা নাটকের ভেতরে এত বেশি জীবনধর্মী স্পর্শ রয়েছে, যার থেকে অনেক কিছু জানা যায় শেখা যায় অনেক কিছু বোঝা যায়। কাজেই সেদিক থেকে আমি বলব আমাদের গুলিই সব থেকে শ্রেষ্ঠ।’ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শেষে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নেন চলচ্চিত্র ও সংগীতাঙ্গনের তারকারা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট