বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কারাবাস প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘পৃথিবীর কোনও কারাগারে কেউ কাজের বুয়া পায় না। খালেদা জিয়ার সুবিধার কথা ভেবে আমরা তা করেছি। আর খালেদা জিয়ার সেবা করার জন্য জেলে স্বেচ্ছায় একজন কারাবরণ করছেন। এই বাড়তি সুবিধা পর্যন্ত তাকে দেওয়া হচ্ছে। সরকারের মধ্যে কোনো প্রতিহিংসা থাকলে তিনি এই সুবিধা পেতেন না। কারাগারে রাজার হালে আছেন তিনি। নিয়মিত সুবিধার বাইরেও সুবিধা ভোগ করছেন।’

গতকাল প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতীয় কমিটির সভায় দলের নেতাদের বক্তব্যের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
সভা পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতির একপাশে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সভাপতিম-লির সদস্যরা ছিলেন। তিন বছর পর দলের জাতীয় কমিটির এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে, ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে সামনে রেখে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

শেখ হাসিনা বলেন, এ দেশে ‘সন্ত্রাসের গডমাদার’ হচ্ছেন খালেদা জিয়া। বাংলাভাই সৃষ্টি থেকে শুরু করে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, হরতাল-অবরোধ ডেকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, এতিমের টাকা চুরি করা হেন কোনো অপকর্ম নেই যা তিনি করেননি। দেশে বাকস্বাধীনতা নেই বলে অভিযোগকারীদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে মানুষ কথা বলার অবারিত সুযোগ পাচ্ছে। টকশোতে গিয়ে মিষ্টি-টক সব কথা বলে যাচ্ছে। তারপরও এ সরকারের আমলে কথা বলার অধিকার নেই! আসলে এ ধরনের পরচর্চা করা এটা তাদের অভ্যাস।

সভায় শেখ হাসিনা বলেন, ‘খালেদা জিয়া যে অসুস্থ, সেটি তো পুরনো খবর। তিনি যখন ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসেন, তখন আমেরিকায় গিয়ে পায়ের নি-ক্যাপ রিপ্লেস করেছিলেন, অপারেশনও হয়। তারপর আবার সৌদি আরবে অপারেশন করান। খালেদা জিয়া যখন বিদেশে গেছেন, তখন তো হুইল চেয়ারে শপিং করতেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ফালু হুইল চেয়ার ঠেলত, আর খালেদা জিয়া শপিং করত। সে (খালেদা জিয়া) যখন হজে যায়, তখন ফালু হুইল চেয়ার ঠেলেছে, খালেদা জিয়া হজ করেছে। কাজেই এই যে হুইল চেয়ারে বসা, এটি নতুন কিছু না। এটি তো আমরা বহু যুগ ধরে দেখে আসছি। তারপরও আবার তার জন্য আন্দোলন। তিনি এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আল্লাহ তো বলে দিয়েছেন যে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ নিজেই তার ব্যবস্থা নেন।
বিএনপির ভোট চুরি থেকে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়ানোর রাজনীতির বিভিন্ন নেতিবাচক রাজনীতির বিভিন্ন দিকও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভোট চুরি, তারপর মানুষ হত্যা, আগুন দিয়ে পোড়ানো। এতিমের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে মানুষ হত্যা এ ধরনের কালচার বিএনপির। জিয়াও যেমন খুনি ছিল, খালেদা জিয়াও খুনি, তার ছেলেও খুনি। গোটা পরিবারই খুনি পরিবার। এরা মানুষ খুন করা, দুর্নীতি করা, অর্থ আত্মসাৎ করা ছাড়া আর কিছুই জানে না। একমাত্র আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরই কিন্তু দেশের উন্নতি হচ্ছে।