চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

সৌদিতে কমছে বাংলাদেশি চিকিৎসকের সংখ্যা

কামাল পারভেজ অভি, সৌদিআরব সংবাদাদাতা

৩ ডিসেম্বর, ২০১৯ | ৩:৩৯ অপরাহ্ণ

অভিবাসী বাংলাদেশিদের সবচেয়ে বড় গন্তব্যস্থল মধ্যপ্রাচ্য। সাধারণ শ্রমিক থেকে ডাক্তার সকলেই পাড়ি জমান সৌদি আরবের পথে। কিন্তু দক্ষ জনশক্তি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসকরা সৌদি আরব গেলেও তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না।

কয়েক বছর ধরে সৌদি আরবের ডাক্তার নিয়োগের গেজেটে থাকছে না বাংলাদেশিদের নাম। এছাড়া সৌদি আরবে চিকিৎসা প্রদানের জন্য ভারত, ফিলিপিন্স, মিশর, জর্ডান, তিউনিসিয়া, নাইজেরিয়া, লেবানন, সুদান ও পাকিস্তান থেকে ডাক্তার চাওয়া হলেও বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেনি দেশটির কর্তৃপক্ষ। এ নয়টি দেশ থেকে ডাক্তারদের নিয়োগ দেওয়ার জন্য মোট ৪৮টি দল পাঠিয়েছে সৌদি আরবের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মিশরীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১০০০, পাকিস্তান থেকে ৯০০ জন এবং সুদান থেকে ২০০ জন ডাক্তার নেয়া হবে। সৌদি আরবে কাজের সুযোগের তালিকায় বাংলাদেশের নাম না থাকায় অবশ্য হতাশ হয়েছেন অনেক চিকিৎসক।

সৌদি আরবে বাংলাদেশের জন্য এমন পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ মেডিকেল  এসোসিয়েশনের (বিএমএ) সৌদি আরব শাখার সাবেক সভাপতি স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) সৌদি আরব শাখার সভাপতি ডাক্তার ইমারত হোসেন বলেন, একটা সময় ছিলো সৌদি আরবের প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে বাংলাদেশি চিকিৎসক ছিলেন। গত ৫ বছরে এখানে কোনো চিকিৎসক না এলেও চাকরির সময়সীমা শেষ হওয়াসহ নানা কারণে প্রতিদিনই বাংলাদেশি চিকিৎসকরা সৌদি আরব ছাড়ছেন। এতে কমছে বাংলাদেশি চিকিৎসকের সংখ্যা।

তিনি বলেন, সৌদি আরব বাংলাদেশ থেকে ১৯৭৬ সালের শেষের দিক থেকে চিকিৎসক ও নার্স নেয়া শুরু করে। তারা প্রথমে লিখিত ও পরে মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে তাদের নির্বাচন করত। কিন্তু বছর দু’য়েক আগে ওরা এসে যাদের নির্বাচন করেছিল পরে বোয়েসেল তাদের না পাঠিয়ে অন্য একদল চিকিৎসককে পাঠিয়ে দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে সৌদি আরব। এ কারণে তারা তালিকা থেকে আমাদের (বাংলাদেশের) নাম মুছে দেয়। এমন ঘটনা দেশের জন্য নেতিবাচক প্রভাব বয়ে এনেছে বলেই মনে করেন এই সভাপতি।

ডাক্তার ইমারত হোসেন আরও বলেন, এতে যেমন আমাদের বিদেশি আয়ের ক্ষেত্র সংকীর্ণ হল তেমনি দেশের বদনামও হল। এর ফলে অন্যান্য দেশও আমাদের চিকিৎসক নিতে বিমুখতা দেখাতে পারে। এই সমস্যার সমাধানে সৌদি প্রবাসী যেসব ডাক্তার আছেন তাদের সহযোগিতা পেলে এবং দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় দূতাবাস উদ্যোগী হলে কূটনীতিক তৎপরতায় চালিয়ে পূর্বের অবস্থানে ফেরত আনা সম্ভব। তবে এ সমস্যাকে খুব বড় করে না দেখে স্থানীয়ভাবে সম্ভবনার দিক হিসেবে দেখছেন বেসরকারি খাতের অন্যতম স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান ল্যাবএইড লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. এ এম শামীম। প্রফেশনাল (চিকিৎসক, প্রকৌশলী) বাংলাদেশি নিয়োগ করলে একদিকে যেমন রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়বে অন্যদিকে ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হবে দেশের। বাংলাদেশের এফসিপিএস ডিগ্রি নিয়ে আপত্তি রয়েছে সৌদি আরবের। অন্যান্য দেশের চিকিৎসকরা এফসিপিএস ডিগ্রি নিয়ে সৌদিতে এলে তারা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মর্যাদা পাচ্ছেন। কিন্তু বাংলাদেশিদের কাজ করতে হচ্ছে জেনারেল ফিজিশিয়ান হিসেবে। সৌদি কর্তৃপক্ষের দাবি, বাংলাদেশের এফসিপিএস কোর্স সৌদিতে চিকিৎসা দেয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। পাকিস্তানসহ কয়েকটি দেশ সৌদি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা এবং কোর্সের সময়সীমা বাড়িয়ে এর সমাধান চায়।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট