চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

উত্তরায় প্রেমিক সিন্ডিকেট আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৩ মে, ২০১৯ | ১২:৩৩ অপরাহ্ণ

উত্তরা এলাকার ফুটপাতে কাঁচা সবজির ব্যবসা করে নুরজাহান। সে এবং আশুলিয়ার নরসিংহপুরের জাকির নামে একজন একটি সিন্ডিকেট তৈরি করে বিভিন্ন মানুষের মোবাইল সংগ্রহ করতো। সেই নম্বরটি দেওয়া হতো সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য শ্রাবণীকে। শ্রাবণী বিভিন্ন কৌশলে টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং এক সময় তাকে জাকিরের বাসায় আসতে বলে।এরপর ঐ ব্যক্তিকে ভয়ভীতি দেখিয়ে সব কিছু কেড়ে নিত। শ্রাবণীর মাধ্যমে টার্গেট করা ব্যক্তিকে বাসায় নেওয়ার পরপরই জাকির, মানিক ও মাসুম নিজেরা বাসায় ঢুকত। এরপর বিবাহবর্হিভূত অবৈধ সম্পর্কের কারণে পুলিশে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তিকে আটকিয়ে রাখত। পরবর্তীতে তাকে মারধর করে বিকাশের মাধ্যমে অর্থ আদায় করত। পারিবারিক ঝামেলা ও সামাজিক সম্মানের ভয়ে প্রেমের ফাঁদে পড়ার কথা ভিকটিমরা এড়িয়ে যায়। এ সুযোগে অপরাধীরা দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে আসছিল।

শনিবার (১১ মে) এই প্রতারক প্রেমিক সিন্ডিকেটকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর পশ্চিম গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল । এই সিন্ডিকেটের সদস্যরা সামছুল হক নামে এক ব্যক্তিকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নগদ টাকা ও তার ব্যক্তিগত গাড়ি হাতিয়ে নিয়েছিল। এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে তারা প্রযুক্তির সহযোগিতায় সিন্ডিকেটটিকে শনাক্ত করে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পল্লবী জোনাল টিমের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার শাহাদাত হোসেন সুমা বলেন, ‘ঢাকা ও ঢাকার বাইরের বিভিন্ন এলাকা থেকে সিন্ডিকেটের পাঁচ সদস্য নুরজাহান বেগম (৪৪), জাকির (৩০), মানিক (২৩), মাসুম (২২) ও শ্রাবণীকে (১৮) আটক করে পুলিশ। আটক সবাই প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছে। তারা আরও একাধিক ব্যক্তিকে একই কায়দায় অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার কথা স্বীকার করেছে। আটকদের মধ্যে তিনজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আশুলিয়া এলাকা থেকে গাড়িটি উদ্ধার করা হয়।’

সামছুল হক জামান নামে ওই ব্যক্তি গত ১ মে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা করেন। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, তার ব্যবসায়িক অংশীদার ও গাড়িচালক মোস্তফাকে বিশেষ কৌশলে আশুলিয়া যাওয়ার কথা বলে অজ্ঞান করে প্রাইভেটকারটি নিয়ে যায়। গোয়েন্দা পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, আসলে গাড়িচালক মোস্তফা প্রেমের ফাঁদে পড়ে অর্থ ও গাড়িটি খুইয়েছেন।

জিজ্ঞাসাবাদে শ্রাবণী জানায়, তার গ্রামের বাড়ি নীলফামারী জেলার ডোমার থানার বানোয়ারি পাড়ায়। ছোটবেলায় তার বাবা মারা যাওয়ার পর সে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে খালার বাড়িতে কিছুদিন থাকে। সেখান থেকে তাকে অপহরণ করে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বিএসএফ তাকে ধরে শিলিগুড়ির একটি শেফহোমে পাঠায়। সেখান থেকে সে দু বছর আগে দেশে ফিরে আশুলিয়ায় গার্মেন্টসে কাজ করেছে। পরে জাকির ও নুরজাহানের সঙ্গে পরিচয় হলে তাদের সঙ্গে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার প্রতারণা চক্রে যোগ দেয়।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট