চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রেপ্তার দুই ইসি কর্মচারী সাতদিনের রিমান্ডে

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৪ নভেম্বর, ২০১৯ | ২:০৮ পূর্বাহ্ণ

রোহিঙ্গাদেরকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) দেওয়ার ঘটনায় জড়িত নির্বাচন কমিশনের দুই কর্মচারীকে গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। এরা হলেন চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়ের উচ্চমান সহকারী আবুল খায়ের ভুঁইয়া (৪৫) ও মিরসরাই উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন (৪৫)। নির্বাচন কমিশনের অনুমতি পাওয়ার পর

মঙ্গলবার তাদেরকে নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিএমপির কাউন্টার টেররিজম ও ট্রান্সন্যাশনাল ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক রাজেশ বড়–য়া জানান, এনআইডি জালিয়াতির ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে এই দুজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আদালতে তোলা হয়েছে। আদালত সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে।

গত আগস্টে এক রোহিঙ্গা নারী ভুয়া এনআইডি সংগ্রহ করে চট্টগ্রামে পাসপোর্ট নিতে গিয়ে ধরা পড়ার পর জালিয়াত চক্রের খোঁজে নামে নির্বাচন কমিশন; আটকে দেয় রোহিঙ্গা সন্দেহে অর্ধশত এনআইডি বিতরণ। এনআইডি জালিয়াতিতে সম্পৃক্ততার অভিযোগে গত ১৬ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক জয়নাল আবেদীন নামে একজনকে তার দুই সহযোগী ও এক ল্যাপটপসহ আটক করে পুলিশে দেয় কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় চট্টগ্রামের ডবলমুরিং উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা পল্লবী চাকমা বাদি হয়ে কোতোয়ারী থানায় মামলা করেন। মামলার তদন্তভার পায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। জয়নালের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যে মোস্তফা ফারুক নামে প্রকল্পের অধীনে কারিগরি সহায়তাকর্মীকে এবং তার দেওয়া তথ্যে আইডিইএ প্রকল্পের কারিগরি বিশেষজ্ঞ শাহনুর মিয়াকে ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। শাহনূর দেশের বিভিন্ন উপজেলার পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সার্ভারে প্রবেশ করতে পারতেন। তার মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের এনআইডি তৈরি করে দেওয়া হতো বলে জানান জয়নাল। এরমধ্যে কোতোয়ালী থানার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মো. শাহীন, বন্দর থানার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জাহিদ এবং ডবলমুরিং থানার ডেটা এন্ট্রি অপারেটর পাভেল বড়ুয়াকেও গ্রেপ্তার করা হয়। এদের মধ্যে শাহীন শাহনূর মিয়ার স্ত্রীর বড় ভাই। গ্রেপ্তার আটজনের মধ্যে শাহনূর, মোস্তফা, শাহীন, জাহিদ, পাভেল এনআইডি প্রকল্পের অধীনে কর্মরত। বাকি দুজন জয়নালের বন্ধু। এদের মধ্যে আদালতে জয়নাল, মোস্তফা ও শাহনূর জবানবন্দি দিয়েছেন।

তাতে নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তা, স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মচারীসহ এনআইডি জালিয়াতিতে অন্তত ৩০ জনের নাম এসেছে বলে তদন্ত কর্মকর্তা জানান।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এই কর্মচারীরা ২০১৪ সাল থেকে জালিয়াতি করে রোহিঙ্গাদের ভোটার করা ও এনআইডি দেওয়ার কাজ শুরু করেন। পুলিশের তদন্তে যাদের নাম এসেছে অতীতে তারা সবাই একসাথে মিলেমিশে কাজ করলেও টাকার ভাগ নিয়ে বছরখানেক আগে তাদের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হয়; ভেঙ্গে যায় ‘ঐক্য’। নিজেদের বিরোধে একে একে বেরিয়ে আসছে জালিয়াত চক্রের সাথে জড়িতদের নাম। এদের মধ্যে কর্মচারীদের পাশাপাশি অনেক কর্মকর্তার নামও জানতে পেরেছে তারা।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট