সৌদিআরবে ধরপাকড়ের শিকার হয়ে গত পাঁচ দিনে দেশে ফিরেছেন আরও ৪২১ বাংলাদেশি শ্রমিক। এদিকে গত বুধবার দেশে ফিরেছেন মোট ৯৬ জন বাংলাদেশি।
জানা যায়, রাত ১১টা ২০ মিনিটে সৌদি এয়ারলাইন্সের এসভি ৮০৪ বিমানযোগে তারা দেশে ফেরেন। এ নিয়ে এ মাসের প্রথম পাঁচদিনেই মোট ৪২১ জন দেশে ফিরলেন। এর মধ্যে ১ নভেম্বর ১০৪ জন, ২ নভেম্বর ৭৫ জন, ৩ নভেম্বর ৮৫ জন, ৪ নভেম্বর ৬১ জন ও গতকাল ৬ নভেম্বর ৯৬ জন ফিরেছেন। বিমানবন্দরের প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের দশ মাসে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরেছেন ২০ হাজার ৬৯২ বাংলাদেশি।
বুধবার ফেরাদের একজন কিশোরগঞ্জের তোফাজ্জল জানান, মাত্র আড়াই মাস আগে তিনি সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। এর মধ্যেই তাকে ফিরতে হলো।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মহিউদ্দিন জানান, তিনি তিন বছর ধরে ছিলেন সৌদি আরবে। সাড়ে ১৮ হাজার রিয়াল দিয়ে ইকামা নবায়ন করেছিলেন। কিন্তু তাকে এখন ধরপাকড়ে পড়ে ফেরত আসতে হলো শূন্য হাতে। গাজীপুরের মো. হান্নান মিয়া জানান, তিনি ১৫ বছর ধরে সৌদি আরবে। বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও সৌদি পুলিশ রাস্তা থেকে ধরে। আকামা দেখানোর পরেও তাকে ছাড়া হয়নি। নোয়াখালীর জয়নাল, ময়মনসিংহের আলম, জামালপুরের সবুজ মিয়া, বরিশালের মামুনসহ আরও অনেকই তাদের দুরবস্থার কথা জানান। বরাবরের মতো গতকাল ফেরত আসাদেরও প্রবাসী কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম থেকে খাবার-পানিসহ নিরাপদে বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করা হয়।
ব্র্যাক অভিবাসন কর্মসূচির প্রধান শরিফুল হাসান জানান, চলতি বছর এখন পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এ বছরের কোন মাসে কত কর্মী ফিরেছে সেই তথ্য বিশ্লেষণ করে আমরা দেখেছি গত দুই মাস ধরে ধরপাকড়ের তীব্রতা বেড়েছে। তিনি বলেন, অনেকেই মনে করেন ইকামা থাকলেই বৈধ। কিন্তু কেউ যদি বৈধ ইকামা থাকার পরেও যেখানে কাজ করার কথা সেখানে না করে অন্য জায়গায় কাজ করেন, সৌদি আইন অনুযায়ী সেটাও অপরাধ। এই বিষয়গুলো কর্মীদের বোঝাতে হবে। আর রিক্রুটিং এজেন্সিকেও নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোনো একজন কর্মী যেখানে যান সেখানে গিয়ে সেই কাজ পান। ফ্রি ভিসার নামে প্রতারণা বন্ধ করা উচিত।
পূর্বকোণ/পিআর