চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

‘ছাত্রলীগ মারছিল ভিসিপন্থী শিক্ষকরা হাত তালি দিয়ে উৎসাহ দিচ্ছিল’

অনলাইন ডেস্ক

৬ নভেম্বর, ২০১৯ | ৪:৪১ অপরাহ্ণ

দুর্নীতির অভিযোগে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় আহত হয়েছেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস। এ হামলায় উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা উৎসাহ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন সাঈদ ফেরদৌস।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের প্লাটফর্ম, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ মঞ্চের অন্যতম মুখপাত্র ও সংগঠক সাঈদ ফেরদৌস। মঙ্গলবার দুপুরে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তাকে মেরে রক্তাক্ত করে। হামলায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এই শিক্ষক। এতেও শেষ রক্ষা হয়নি তার। সেখানে তাকে মারধর করা হয়।

ছাত্রলীগের হামলার বিষয়ে সাঈদ ফেরদৌস বলেন, ‘ছাত্রলীগ আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারতে এলে উপাচার্যপন্থী আমার সহকর্মীরা হাততালি দিয়ে তাদের স্বাগত জানায় এবং উৎসাহ দেয়। এই দেশে এমনই হওয়ার কথা? এখানে এটিও সম্ভব, শিক্ষকরা অন্য শিক্ষকের গায়ে হাত তুলতে ছাত্র-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নির্দেশ দেন। আমি কারও কাছে কোনো নালিশ দেব না, দিতে চাইও না।’

সহকর্মীদের বিষয়ে আক্ষেপ করে জ্যেষ্ঠ এই শিক্ষক বলেন, ‘হামলার সময় উপাচার্যপন্থী শিক্ষকরা ধর ধর, মার মার বলে স্লোগান দেন। একজন জুনিয়র শিক্ষক একজন সিনিয়র শিক্ষককে ধমকাতে দেখেছি। আমি তাদের নাম বলতে চাই না।’

হামলার বর্ণনা দিয়ে অধ্যাপক সাঈদ বলেন, ‘মঙ্গলবার সকালে ভিসির বাসভবনের সামনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান করছিলাম। উপাচার্যপন্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একটি দল আমাদের মাড়িয়ে যেতে চায়। এর পর দুপুর ১২টার দিকে ছাত্রলীগ সেখানে গেলে দৃশ্যপট পাল্টে যায়। তারা অনেককে শিবির বলে তুলে নিয়ে যেতে চায়। অনেককেই টেনেহিঁচড়ে নিয়ে মারধর করে। আমরা বাধা দিতে চাই। এ সময় দেখি কয়েকজন আমার পা ধরে টানছে। একপর্যায়ে আমাকে চ্যাংদোলা করে তুলে নিয়ে যাওয়া হলো। ধাক্কা দিয়ে ওখান থেকে বের করল। একসময় দু-জন শিক্ষক ও ছাত্র এবং একজন কর্মচারী আমাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চায়।’

আক্ষেপ করে অধ্যাপক সাঈদ আরও বলেন, ‘এই সমাজ, রাষ্ট্র এমন জায়গায় পৌঁছেছে, যেখানে কারও কাছে কিছু প্রত্যাশা করি না। কোনো প্রতিষ্ঠান কাজ করছে না। ব্যক্তিগত সম্মান, মূল্যবোধ কাজ করছে না। সবকিছু দলীয়ভাবে বিবেচনা করা হচ্ছে।’

এদিকে বুধবারও উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন চলছে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট