চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে গ্রেফতার ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট ও তার সহযোগী আরমানকে ডিবি থেকে র্যাবের দপ্তরে নেওয়া হয়েছে। গতকাল বিকেল ৪টা নাগাদ সম্রাট ও আরমানকে র্যাব-১ এর দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মিজানুর রহমান ভূঁঞা।
রাজধানীর রমনা থানায় অস্ত্র ও মাদক আইনে ক্যাসিনো খ্যাত সম্রাটের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত দুই মামলার তদন্তভার পেয়েছে র্যাব-১। গত রাতে মামলা দুটি তদন্ত করার আদেশ পাওয়ার পরই সম্রাটকে ডিবি দপ্তর থেকে র্যাব-১ এর কার্যালয়ে নেওয়া হয়েছে। এর আগে গত ১৫ অক্টোবর অস্ত্র ও মাদকের দুটি মামলায় সম্রাটকে ৫দিন করে ১০দিন এবং তার সহযোগী আরমানকে মাদক মামলায় ৫দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। পরে ওইদিন রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত আলাদাভাবে সম্রাট ও আরমানকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ডিবি।
প্রসঙ্গত, গত ৭ অক্টোবর সম্রাটের বিরুদ্ধে দুটি মামলা দায়ের করে র্যাপিড একশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। উভয় মামলার এজাহারে বলা হয়েছে- মতিঝিল, আরামবাগ, ফকিরাপুল ও পল্টনসহ রাজধানীতে ১০টি ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসা ছিল সম্রাটের। সবার কাছে সে ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি, দলীয় পদের অপব্যবহার করে চাঁদাবাজি ও টেন্ডারবাজি করতো। কেউ চাঁদা দিতে না চাইলে তাকে ধরে নিয়ে নির্যাতন করতো তার ক্যাডাররা। সম্রাটের কার্যালয় থেকে র্যাব অবৈধ অস্ত্র, মাদকসহ নির্যাতন করার জন্য ইলেকট্রিক শক দেয়ার মেশিন উদ্ধার করেছে বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিভিন্ন স্পোর্টস ক্লাবের আড়ালে ক্যাসিনো ব্যবসা চালানোর অভিযোগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর থেকে অভিযান শুরু করে র্যাব। এরই ধারাবাহিকতায় ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে। এর দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় যুবলীগ নেতা জিকে শামীমকে। অভিযানের প্রথম দিন থেকেই আলোচনায় আসে ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের নাম। গত ২৩ সেপ্টেম্বর অন্যদের সঙ্গে সম্রাটেরও দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও ব্যাংক হিসাব তলব করা হয়। গত ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে গ্রেফতার করা হয়। তার সঙ্গে আরমানকেও গ্রেফতার করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে র্যাব।
একইদিন দুপুরে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্বে একটি দল কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। এ দিন নিজ কার্যালয়ে পশুর চামড়া রাখার দায়ে তার ছয় মাসের জেল দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এরপর সম্রাটকে কারাগারে পাঠানো হয়।