চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

আবরারকে হত্যা করে সরকার পতনের বীজ বপন করল : বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১২ অক্টোবর, ২০১৯ | ১১:২৩ অপরাহ্ণ

বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে হত্যা করে ফ্যাসিবাদী পতনের বীজ বহন করল বলে মন্তব্য করেছে বিএনপি। আজ শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে এই মন্তব্য করা হয়।
সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে ভারতের সঙ্গে দেশবিরোধী চুক্তি করেছে অভিযোগ বিএনপির। দলটির নেতারা বলছেন, দেশবিরোধী চুক্তির প্রতিবাদ করায় বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। জিহাদকে হত্যার মাধ্যমে এরশাদ যেমন তার পতনের বীজ বপন করেছিলেন, তেমনি আবরারকে হত্যা করে এই ফ্যাসিবাদী সরকারও তার পতনের বীজ বপন করল।
আবরারের রক্ত বৃথা যেতে দেওয়া হবে না মন্তব্য করে নেতারা আরও বলেন, দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ও আবরার হত্যার প্রতিবাদে আরও কর্মসূচি আসবে। নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তারা বলেন, ঐক্যবদ্ধ থেকে আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন, এই সরকারের পতন হবেই।
দেশবিরোধী চুক্তি বাতিল ও বুয়েট ছাত্র আবরার ফাহাদ হত্যার প্রতিবাদে দুদিনের কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল বিএনপির। ঢাকা ছাড়াও অন্যান্য বিভাগী শহরেও একই কর্মসূচি হয়। আগামীকাল রবিবার একই কর্মসূচি হবে দেশের বিভিন্ন জেলা সদরে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সভাপতি হাবিব উন নবী খান সোহেলের সভাপতিত্ব সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘ফেনী নদীর পানি সরবারহ, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার, বঙ্গোপসাগরের উপকূল পর্যবেক্ষণে যৌথ রাডার স্থাপন, আমদানিকৃত এলজিপি রপ্তানি করা-এই চারটি বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ বিরোধী বলে আমরা মনে করি। এই চারটি চুক্তি অথবা সমঝোতা একটিও জাতীয় স্বার্থে নয়। নতজানু পররাষ্ট্র নীতি এবং ভারত তোষণের নীতি হিসেবে সরকার এসব চুক্তি করে এসেছে।’

সরকারের ভারতপ্রীতি নীতির কঠোর সমালোচনা করেন মোশাররফ। তিনি বলেন, ‘২০০১ সালে আজকের প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, “গ্যাস ভারতকে না দেয়ায় কারণে আমি ক্ষমতায় আসতে পারি নাই।” আজকে জনগণের প্রশ্ন, দেশের আমদানি করা এলপিজি দিয়ে তাহলে কি ২০০১ সালের সেই খেসারত এবার দিচ্ছেন? এই চুক্তি কত বড় স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিরোধী চুক্তি এবং দেশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার এক চুক্তি-এর প্রতিবাদ করেছে বুয়েটের মেধাবী ছাত্র আবরার একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিল। এজন্য তাকে প্রাণ দিতে হয়েছে।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনা ও দেশনেত্রীর মুক্তির জন্য এদেশে আগামী দিনে যে সমস্ত কর্মসূচি আসবে আপনারা সাহসের সাথে আজকের মতো সফল করার জন্য আপনারা সকলে ঐক্যবদ্ধ থাকবেন। আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে এদেশের জনগনকে আমরা ঐক্যবদ্ধ করতে পারব এবং ইস্পাত কঠিন গণঐক্য ছাড়া এই ফ্যাসিবাদের পতন হবে না। ইনশাল্লাহ ফ্যাসিবাদের পতন হবেই।’
আবরার ফাহাদ হত্যার প্রসঙ্গে মওদুদ বলেন, ‘আবরারের হত্যাকাণ্ড সারা দেশের মানুষকে অবাক করেছে, মর্মাহত করেছে। একজন আবরার হত্যা করে কোনো লাভ হবে না, তার মতো শত শত আবরারের জন্ম দেবে।
ভারতের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিরও সমালোচনা করেন সাবেক আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি বাংলাদেশের কোনো স্বার্থ বিক্রি করেন নাই। কিন্তু দেশের মানুষ বোকা নয়, তারা জানে আপনি বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে বিক্রি করে এসেছেন ভারতে গিয়ে।’
স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, ‘দুই দেশের মধ্যে বিনিময়ে চুক্তি হবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একতরফা দান করে দিয়ে আসলেন। আমি অত্যন্ত গর্বিত আমার দেশের প্রধানমন্ত্রী দান করতে জানেন। আবার অত্যন্ত লজ্জিত আমি দেখলাম ভারতের বিমানবন্দরে লাল কার্পেট নাই, এক প্রতিমন্ত্রী তাকে (শেখ হাসিনা) অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। এতে আমি লজ্জা পেয়েছি। শহীদ আবরারের মতো লক্ষ-কোটি আবরার জন্ম নেবে আপনার অপকর্ম বাংলাদেশে সফল হতে দেবে না।’
সিনিয়র যুগ্মমহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অত্যন্ত মুমূর্ষ অবস্থা। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে ফেনী নদীর পানি ভারত দেয়া সম্ভব হতো না।’

পূর্বকোণ/ এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট