চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

সর্বশেষ:

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে জনগণের প্রত্যাশা

মুহাম্মদ মুসা খান

১০ আগস্ট, ২০২৪ | ১২:৩৮ অপরাহ্ণ

দেশের একটি বিশেষ মুহূর্তে ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার’ গঠিত হলো। বিগত দেড় দশক ধরে অহংকার, বিভেদ, বিভাজন ও প্রতিহিংসার রাজনীতির মাধ্যমে বাংলাদেশকে কার্যত একটি মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত করা হয়েছিল। যোগ্যতা বা মেধা নয়, সবক্ষেত্রে সুবিধা পেতো তৈলমর্দনকারী ও মাস্তানচক্র। যারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ লোপাটের সাথে জড়িত ছিলেন। অপ্রয়োজনীয় মেগাপ্রকল্প নিয়ে দেশকে দেউলিয়ার দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ‘পেশাজীবীরা’ দায়িত্ব পালনের পরিবর্তে ‘দলবাজিতে’ নিয়োজিত ছিলেন। নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতির একমাত্র যোগ্যতা ছিলো ‘দলীয় রাজনীতির’ সাথে সম্পৃক্ততা। পদোন্নতি ও বদলীর জন্য লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ নির্ধারণ করা হতো। বিচার বিভাগকে দলীয়করণ করে ক্যাংগারু কোর্টে পরিণত করেছিল। ভিন্ন মতাবলম্বিদের লাগিয়ে দেওয়া হতো ‘রাজাকারের ট্যাগ’। বঙ্গবন্ধু ও মুক্তিযুদ্ধকে ব্যবহার করে নিজেদের স্বার্থ আদায় করা হতো। বৃটিশদের ‘ডিভাইড এন্ড রুল’ পলিসির মতো দেশের নাগরিকদের মধ্যে ‘বিভাজন তৈরি করা হয়েছিল।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ফলে সরকারের পতন হলে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবানুসারে সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে আমরা পেলাম সমগ্র বিশ্বব্যাপী সুপরিচিত সৃজনশীল ও প্রজ্ঞাবান মানুষ নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে (জন্ম: ২৮ জুন,১৯৪০)। তিনি ১৬জন উপদেষ্টাকে সাথে নিয়ে গত ৮ আগস্ট শপথ গ্রহণ করলেন। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে সৃষ্টি হলো এক অবিস্মরণীয় মুহূর্ত। আমরা লক্ষ্য করেছি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘দুইজন সমন্বয়ক (ছাত্র)’ ছাড়া বাকি সবাই স্ব স্ব কর্মক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত ও অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ও ক্ষুদ্রঋণ ধারণার প্রবর্তক। শিক্ষকতা পেশায় থাকা অবস্থায়ই তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ‘গ্রামীণ ব্যাংক’। ২০০৬ সালে তিনি এবং গ্রামীণ ব্যাংক শান্তিতে ‘নোবেল পুরস্কার’ পান। শুধু তাই নয়, বিশ্বের ২৪টি দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ৬১টি সম্মানসূচক ডিগ্রি পেয়েছেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে আছে ১০টি দেশের রাষ্ট্রীয় সম্মাননাসহ বিভিন্ন দেশের ১৫০-এর অধিক পুরস্কার ও সম্মাননা। এখন পর্যন্ত ‘নোবেল শান্তি পুরস্কার’, ‘ইউনাইটেড স্টেটস প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম’ এবং ‘ইউনাইটেড স্টেটস কংগ্রেশনাল গোল্ড মেডেল’ পাওয়া মাত্র সাত ব্যক্তির মধ্যে তিনি একজন। পৃথিবীর ২০জন সম্মানিত ব্যক্তির তালিকায় তিনি নবম স্থানে ছিলেন। তাঁর ‘সোস্যাল বিজনেস থিওরি’ সমগ্র পৃথিবীতে আলোচিত একটি বিষয়। তাঁর ‘তিন শূন্য অর্জন’র (শূন্য কার্বন, শূন্য বেকারত্ব, শূন্য সম্পদ কেন্দ্রীভূতকরণ) আহবান বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রকে উজ্জীবিত করেছে। ২০২০ সালে তিনি অন্যান্য নোবেল বিজয়ীদের সাথে নিয়ে ‘করোনা ভাইরাসের টিকা বরাদ্ধ ও বন্টনে সমতা সৃষ্টির’ ব্যাপারে (ধনি-গরিব সব দেশই যেনো টিকা পায়) উন্নত বিশ্বকে উদ্ভুদ্ধ করেছিল। কিন্তু গত প্রায় দেড় দশক যাবৎ তিনি শেখ হাসিনার রোসানলে পড়ে (রাজনীতিতে আসার ঘোষণার পর হতে) বায়বীয় অভিযোগে শতাধিক মিথ্যা মামলার আসামি হয়েছেন। উল্লেখ্য, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস ১৯৯৬ সালে সাবেক প্রধান বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।

 

নবগঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি দেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা। দীর্ঘদিন যাবত বাংলাদেশে একটি দলের শাসনের কারণে যেসব সমস্যা পুঞ্জিভূত হয়েছে, সেগুলোর ‘মূলোৎপাটন করা’ দেশের সব মানুষের প্রত্যাশা। বিশেষ করে, পাহাড়সম বৈদেশিক ঋণ (১০০ বিলিয়ন ডলারের অধিক), রিজার্ভের নিম্নমুখিতা, ডলারের মূল্য বৃদ্ধি, ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, দুর্নীতি ইত্যাদি কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি নাজুক অবস্থায় এখন। বৈদেশিক ঋণের কিস্তি দিতেই বাজেটের সিংহভাগ টাকা চলে যাচ্ছে। এরূপ পরিস্থিতিতে নতুন সরকারকে অনেক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে। তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে সহজে বুঝা যাবে যে-দেশের মূল সমস্যা ‘দুর্নীতি’, যা ওপেন সিক্রেট। সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দশম। ২০২২ সালে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১২তম। বার্লিনভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের (টিআই) দুর্নীতির ধারণাসূচক ২০২৩ শীর্ষক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বলা যায়, দুর্নীতিকে সরকার প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিয়ে ফেলেছিল। ১০০ কোটি টাকার প্রজেক্ট কে দুর্নীতির কারণে এক হাজার কোটি টাকা পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল। ইউরোপে যেখানে এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ৩০ কোটি টাকার মতো, চীন-ভারতে ১৫-২০ কোটি টাকার মতো , সেখানে বাংলাদেশে এক কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ব্যয় হয় ৭৫-৮০ কোটি টাকা বা আরও বেশি। এক প্রতিবেদনে বিশ্ব ব্যাংক দেখিয়েছিল যে, প্রতি কিলোমিটার সড়ক নির্মাণে ভারত ও চীনের তুলনায় অনেক বেশি অর্থ ব্যয় করে বাংলাদেশ। এই বাড়তি খরচের জন্য ‘উচ্চমাত্রায় দুর্নীতি, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়া ও দরপত্রে প্রতিযোগিতা না থাকাকে’ দায়ী করেছিল। এমপিদের ‘থোক বরাদ্ধ’, কাজের বিনিময়ে খাদ্য, স্বাস্থ্যখাত, বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণকাজে দুর্নীতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল। করোনা টিকার কোন হিসাব পাওয়া যায়নি। ‘বাংলাদেশ বিমান’ লোকসানি প্রতিষ্ঠান হলেও রিজার্ভের টাকা দিয়ে বিমান কেনা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি বোয়িং বাদ দিয়ে ফ্রান্স হতে ১০টি এয়ারবাস কেনার আদেশ দেওয়া হয়েছে (প্রথম দফায় ৪ টি ক্রয়ের অনুমোদন দেয়া হয়েছে, যার প্রতিটির দাম প্রায় ১৮০ মিলিয়ন ডলার)। বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এয়ারবাস উড়োজাহাজ কেনা হলে এর জন্য বিমানকে ২৫ বছরে (উড়োজাহাজের জীবনকাল) ৪৬৩ দশমিক শূন্য ৮ মিলিয়ন ডলার পর্যন্ত নগদ আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে(ডেইলি স্টার,৩০ মে’২০২৪)। সরকারি অফিস মানে ‘ভীতিকর’ এক জায়গা হয়ে উঠেছিল । অবস্থা দেখে মনে হতো, সরকারি অফিস গুলো তৈরি হয়েছে মানুষকে কষ্ট দেওয়ার জন্য। এ প্রসঙ্গে অন্তর্র্বতীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুস বলেন, ‘সরকার বলে একটা জিনিস আছে, কিন্তু মানুষের আস্থা নাই। সরকারের কথা শুনলে মনে হয় ভয়ের একটা জিনিস। তাকে সামাল দিয়ে চলতে হবে। কিন্তু এটা হবার কথা না। সরকার মানুষকে রক্ষা করবে, মানুষের আস্থাভাজন হবে। সরকারি লোক দেখলে(মানুষ) বলবে আমার লোক।’ তাই আমরা মনে করি, সরকারের প্রথম দায়িত্ব হবে বিভিন্ন সেক্টরের (যেমন- জ্বালানি, স্বাস্থ্য, পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, গণপূর্ত, শিক্ষা, নৌ পরিবহন, তথ্যপ্রযুক্তি, স্থানীয় সরকার, সড়ক ও সেতু প্রভৃতি) দুর্নীতির গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলো চিহ্নিত করা এবং প্রতিটি প্রকল্পের (মেগা বা ছোট) বাজেট পূন:নিরীক্ষা করা। তাহলে সে প্রকল্পসমূহ থেকে দুর্নীতির জন্য বা ভাগ-বাটোয়ারার জন্য বরাদ্দ রাখা টাকার অংশ বেরিয়ে আসবে। দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একটি তালিকা তৈরি করতে হবে। তা ব্যতীত প্রতিটি সরকারি অফিসকে ‘দলীয় রাজনীতির প্রভাব মুক্ত করতে হবে’, সরকারি কর্মচারিদের বেতন দেওয়া হয় দেশ ও জনগণের কাজ করার জন্য। সেখানে তাঁরা দলীয় রাজনীতি নিয়ে মেতে থাকে। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের (ওয়াসা, রাজউক, সিডিএ, কারা পরিদর্শক, ব্যাংক, স্কুল-কলেজ প্রভৃতি) পরিচালনা বোর্ড হতে রাজনৈতিক দলের লোক বাদ দিতে হবে। সেখানে যোগ্য, সৎ ও শিক্ষিত লোক নমিনেট করতে হবে।

 

বাংলাদেশের পরিবহন সেক্টর চাঁদাবাজির একটা সোনার খনি। আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের একবার বলেছিলেন, চাঁদাবাজি বন্ধ করা সম্ভব নয়। নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানও চাঁদাবাজদের পক্ষে ছিল। পরিবহন সেক্টরকে সম্পূর্ণ চাঁদাবাজ মুক্ত করতে হবে। পাশাপাশি ‘ঘুষ মুক্ত’ করতে হবে বিআরটিএ’কে। এসিল্যান্ড অফিস, সাব রেজিস্টার অফিস, পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রভৃতি অফিস ঘুষের আড্ডাখানা। ভূমি অধিগ্রহণের টাকা ছাড়-এর জন্য এলএ শাখার (ল্যান্ড একুইজিশন) ঘুষের গল্প সবাই জানে। চট্টগ্রামের সিডিএতে ঘুষের মাত্রা আগে ১০/২০ হাজার থাকলেও এখন নাকি ৫/৭ লাখ। অর্থাৎ (সম্ভবত) এমন কোন সরকারি অফিস নাই যেখানে ঘুষ দিতে হয় না। সরকার অফিসের এই ঘুষ বানিজ্য বন্ধ করা না গেলে সরকারের কোন স্বপ্নই বাস্তবায়ন হবে না। নতুন শিক্ষা কারিকুলাম নিয়ে ব্যাপক অভিযোগ। এই শিক্ষা কারিকুলামে কোন লেখাপড়া নাই, কোন পরীক্ষা নাই, মেধা যাচাই এর কোন সুযোগ নাই। এই শিক্ষা কারিকুলাম মেধাশূন্য জাতি তৈরি করবে- যা নিশ্চিত। তাই আমাদের পুরাতন শিক্ষা কারিকুলামের সাথে আধুনিক তথ্য-প্রযুক্তির সংমিশ্রণে দ্রুত ‘নতুন শিক্ষাকারিকুলাম’ তৈরি করতে হবে । দারিদ্রতা ও বেকারত্ব আমাদের দেশের দুটি অন্যতম সমস্যা। এই দুটি সমস্যা নিরসনেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহকে দলীয় রাজনীতির প্রভাব মুক্ত করার জন্য দেশবাসী একমত (শুধুমাত্র দু তিনটা রাজনৈতিক দল ছাড়া)। বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলের সিট দখল করে রাজনীতির নামে একটি সন্ত্রাসী প্রজন্ম তৈরি হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনীতির নামে ‘হেলমেট বাহিনীর তান্ডব’ আমরা দেখেছি। বিশ্ববিদ্যালয় তথা সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করতে। বিগত বেশ দেড় দশকে নির্বাচনী ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা হয়েছে। ভোটডাকাতি, ভোটকেন্দ্র দখল, ভোটারদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, রাতে ব্যালট পেপারের সিল মারা ইত্যাদি সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে। এই ভোট ডাকাতি বন্ধ করতে না পারলে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে। তাই ভোট ডাকাতিসহ নির্বাচন কেন্দ্রিক সব অপরাধকে ‘ফৌজদারি অপরাধ’ গণ্য করে এবং কঠোর শাস্তির বিধান করে দ্রুত বিচারের জন্য নতুন আইন প্রণয়ন করতে হবে। জনগুরুত্বপূর্ণ সেক্টরের গুরুত্ব বিবেচনা করে (স্বাস্থ্য, পুলিশ, ফায়ার ব্রিগেড) তাদের সুযোগ সুবিধা বাড়াতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য পুলিশ বাহিনীকে আধুনিকীকরণ করতে হবে। চিকিৎসাখাতে এমনভাবে নজর দেওয়া হোক, যেন এক দুই বছর পর থেকে বিদেশ থেকে মানুষ এই দেশে চিকিৎসা নিতে আসে। চিকিৎসকদের পদোন্নতি ও বদলীর জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা প্রয়োজন। চমেক হাসপাতাল ও চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়কে সর্বাধুনিক ‘চিকিৎসা কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে’ পরিণত করতে হবে।

 

বিচারব্যবস্থা ও নির্বাহী বিভাগসহ সব বিভাগ যেন রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত থাকে, তা নিশ্চিত করতে হবে। রাজনৈতিক মতাদর্শের ল’ইয়ার যেনো বিচারপতি নিয়োগ না পায়- সেটা নিশ্চিত করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়সমূহে দলীয় মতাদর্শের ভিসির পরিবর্তে মেধাবি, সৎ ও উচ্চশিক্ষিত ভিসি নিয়োগ করতে হবে। বিদেশের সকল মিশনগুলোকে প্রবাসীদের আস্থা ও ভরসার জায়গায় নিয়ে আসা, বিমানবন্দরে ও বিমানে রেমিটেন্স যোদ্ধারা যেনো বিশেষ মর্যাদা পায়। সরকার পতনের পরদিন যে সন্ত্রাস হয়েছে, লুটপাট হয়েছে সেসবের তদন্তপূর্বক অপরাধের বিচার করতে হবে। একথা বুঝতে হবে যে, মানুষ পরিবর্তন চায়। একটা বৈষম্যহীন নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখে জনগণ। কেউ যেন ফ্যাসিস্ট হতে না পারে। জবাবদিহিতার সংস্কৃতি চালু করতে হবে।

 

আমরা আশাকরি বাংলাদেশ আবারো ঘুরে দাঁড়াবে। সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়’ কবিতার মতো তারুণ্যের জয়গানে সমৃদ্ধ হয়ে উঠবে এ দেশ। আমাদের প্রিয় নেতা নোবেল বিজয়ী প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে আগামীতে আমরা একটি সুখের সমৃদ্ধশালী দেশ দেখতে পাবো- এ প্রত্যাশা করছি।

মুহাম্মদ মুসা খান কলামিস্ট ও সমাজকর্মী।

পূর্বকোণ/এসএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট