চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

রাজধানীর ক্যাসিনো সাম্রাজ্য মতিঝিলের ৪ ক্লাবে তালা

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৬ পূর্বাহ্ণ

অবৈধভাবে ক্যাসিনো ও জুয়া চালানোর দায়ে রাজধানীর ক্যাসিনো সাম্রাজ্য হিসেবে পরিচিত মতিঝিলের চার ক্লাবে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে পুলিশ। একই সঙ্গে ক্লাবগুলো থেকে ক্যাসিনো ও জুয়া খেলার সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। ক্লাবগুলো হলো- মতিঝিলের আরামবাগ, দিলকুশা, ভিক্টোরিয়া ও মোহামেডান। গতকাল বিকেল ৩টার দিকে ডিসি আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে ভিক্টোরিয়া ও মোহামেডান ক্লাব এবং এডিসি শিবলি নোমানের নেতৃত্বে আরামবাগ ও দিলকুশা ক্লাবে অভিযান চালায় পুলিশ। এদিকে রাতে গুলশানের নাভানা টাওয়ারে ‘লাইফ স্টাইল এন্ড হেলথ’ ক্লাবেও অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অভিযান চলছিল। চারটি ক্লাবে অভিযান শেষে মতিঝিল জোনের উপ-পুলিশ কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পর আমরা আভিযান শুরু করেছি। এর আগে ইন্টেলিজেন্স বা অন্য কোনো গোয়েন্দা সংস্থা থেকে ক্যাসিনো চালানোর ব্যাপারে তথ্য পাইনি। আজ (রবিবার) ইন্টেলিজেন্স যখনই জানিয়েছে তখনই আমরা অভিযানে নেমেছি।’

প্রায় চার ঘণ্টার অভিযানে ক্লাবগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ ক্যাসিনো ও জুয়ার সামগ্রী উদ্ধার করা হয়। সেই সঙ্গে পাওয়া যায় নেশা সামগ্রী। অভিযান শেষে সন্ধ্যা ৭টার দিকে চারটি ক্লাবেই তালা ঝুলিয়ে দেয়া হয়। একই সঙ্গে ক্লাবগুলোতে থাকা ক্যাসিনো ও জুয়ার সামগ্রী জব্দ করে নিয়ে যায় পুলিশ।

মতিঝিল জোনের ডিসি আনোয়ার হোসেন জানান, ক্লাবের ভেতরের পরিবেশ দেখে মনে হচ্ছে এখানেও নিয়মিত ক্যাসিনো বসত। চারটি ক্লাবই পুলিশের নাকের ডগায়, এটাতো অস্বীকার করার উপায় নেই? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, চারটি ক্লাবই পুলিশের নাকের ডগায় ছিল, এটা অস্বীকারের কোনো উপায় নেই। তবে আমরা জানা মাত্রই অভিযান শুরু করেছি। ক্যাসিনো পরিচালনা করা অবৈধ। এখন আমরা এ ব্যাপারে তদন্ত করবো, কারা এর সঙ্গে জড়িত, কারা এর পৃষ্ঠপোষকাতা করে। তাদের সবাইকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো। জড়িত যেই হোক না কেনো কাউকে আমরা ছাড় দেবো না। আগে থেকে সবাই পালিয়ে যাওয়ায় অভিযানে কাউকে আটক করা যায়নি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এইসব ক্লাবের একটি অংশ জুয়া খেলার জন্য তৈরি করা হয়েছিল তাই ক্লাব চারটি সিলগালা করা হয়েছে।’
মতিঝিল থানার পাশে চারটি জুয়ার ক্যাসিনো চললেও পুশিল এতদিন জানতো না কেনো সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘আগে থেকে এ ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো গোয়েন্দা তথ্য ছিল না, আজ গোয়েন্দা তথ্য পাওয়ার পরই আমরা অভিযানে নেমেছি।’

পুলিশের মতিঝিল বিভাগের এডিসি শিবলি নোমান জানান, বিকেলে আরামবাগ ক্লাবে গিয়ে দেখা যায় সেখানে আগে থেকেই বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। অন্ধকারে সবকিছু দেখা যাচ্ছিল না। তবে সেখানে ক্যাসিনো চলে সেটা বোঝা যাচ্ছিল। এছাড়া অভিযানের খবর শুনে সবাই পালিয়ে গেছেন। দিলকুশায়ও কাউকে পাওয়া যায়নি।

ভিক্টোরিয়া ও মোহামেডান ক্লাব দুটি পাশাপাশি অবস্থিত। এর মধ্যে ভিক্টোরিয়া ক্লাবে অভিযান চালিয়ে নগদ এক লাখ টাকা, মদ, বিয়ার, জুয়া ও ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে পুলিশ। ভিক্টোরিয়া ক্লাব থেকে বের হয়ে ডিসি আনোয়ারের নেতৃত্বে পুলিশ মোহামেডান ক্লাবে প্রবেশ করে। এ ক্লাব থেকেও বিপুল পরিমাণ ক্যাসিনো ও জুয়ার সামগ্রী উদ্ধার করে।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর বিকেল থেকে শুরু করে গভীর রাত পর্যন্ত পল্টন ও মতিঝিল এলাকার কয়েকটি ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানে ক্যাসিনোগুলো থেকে বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা ও মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। পাশাপাশি আটক করা হয় দুই শতাধিক ব্যক্তিকে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট