চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বিচারকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে নির্দেশনা

নিজস্ব প্রতিবেদক

২২ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ৮:৪৫ অপরাহ্ণ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের উপস্থিতি কঠোরভাবে পরিহার করার নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। বিচারিক কর্মঘণ্টার পূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে (সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত) এমন নির্দেশ দিয়েছে ।

রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল ড. মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশ দেয়া হয়।

অতিমাত্রায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ফলে এক ধরনের আসক্তি তৈরি হয়, যা ব্যক্তি জীবনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এই পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সব সরকারি কর্মচারীদের জন্য ‘সরকারি প্রতিষ্ঠানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্ত নির্দেশিকা-২০১৬’ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের কোনও নীতিমালা বা নির্দেশিকা গ্রহণ করা হয়নি।  সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর জুডিসিয়াল রিফর্মসের সুপারিশক্রমে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে একটি অনুসরণীয় নির্দেশনা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

এসব নির্দেশনায় যে ১১ দফা কাজ অবশ্যই বিচারকদের পরিহার করতে বলা হয়েছে, তা হলো 

১. জাতীয় ঐক্য ও চেতনার পরিপন্থী কোনও প্রকার তথ্য, মন্তব্য ও অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

২. কোনও সম্প্রদায়ের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত লাগতে পারে, এমন কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৩. রাজনৈতিক মতাদর্শ বা আলোচনা সংশ্লিষ্ট কোনও তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৪. কোন সম্প্রদায়ের প্রতি বৈষম্যমূলক বা হেয়প্রতিপন্নমূলক কোন তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৫. কোনও ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা রাষ্ট্রকে হেয় প্রতিপন্ন করে কোন তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৬. লিঙ্গ বৈষম্যমূলক কোন তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৭. জনমনে অসন্তোষ ও অপ্রীতিকর মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে, এমন কোন তথ্য, মন্তব্য বা অনুভূতি প্রকাশ ও প্রচার।

৮. কোন মামলার বিষয়ে বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।

৯. নিয়ন্ত্রণকালীন কর্তৃপক্ষ বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের কোনও সিদ্ধান্তের বিষয়ে কোনও বিরূপ মন্তব্য বা ব্যক্তিগত অনুভূতি প্রকাশ বা প্রচার।

১০. বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের ছবি বা ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ ও প্রচার।

১১. অপ্রাসঙ্গিক, অপ্রয়োজনীয়, মানহানিকর এবং নৈতিকতা পরিপন্থী কোন স্ট্যাটাস, পোস্ট, লিংক, ছবি ইত্যাদি অন্যজনকে সংযুক্তকরণ, আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচার।

এছাড়া যে ৭ দফা অনুসরণ করতে বলা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে 

১. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিতব্য লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও ইত্যাদি নির্বাচন ও বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে হবে।

২. প্রকাশিত তথ্য ও উপাত্তের যথার্থতা ও নির্ভরযোগ্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

৩. ব্যক্তিগত ও পারিবারিক তথ্য আদান-প্রদান, প্রকাশ ও প্রচারের ক্ষেত্রে অবশ্যই সতর্কতা এবং বিচারকসুলভ মনোভাব অবলম্বন করতে হবে।

৪. অপ্রয়োজনীয় ও গুরুত্বহীন বিষয়ে তথ্য, স্ট্যাটাস বা পোস্ট দেওয়া যাবে না।

৫. বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের জন্য একটি পোর্টাল, গ্রুপ থাকতে পারে, যেখানে বিচারাধীন মামলার বিষয় এবং ব্যক্তিগত বিষয় ব্যতীত কেবল আইনগত বিষয়ে আলোচনা ও তথ্য আদান-প্রদান করা যাবে।

৬. সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল ও বিচারকসুলভ আচরণ করতে হবে এবং রাষ্ট্রীয় অনুশাসন মেনে চলতে হবে।

৭. তথ্য আদান-প্রদান ও বন্ধু নির্বাচনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। নিজ কর্মক্ষেত্রে মামলার স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা মামলা পরিচালনার সঙ্গে জড়িত কোনও ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যক্তিগত একাউন্টে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না।

পূর্বকোণ/তাসফিয়া

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট