চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

ওমর ফারুকের মন্তব্য প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

যুবলীগ চেয়ারম্যানের মন্তব্য তার নিজস্ব, আমার কিছু বলার নেই

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

২০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:২৪ পূর্বাহ্ণ

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, ক্যাসিনো যদি চালাতে হয় তাহলে তারও একটা নীতিমালা হবে, তারও একটা সিদ্ধান্ত হবে, তার পরে আমরা তাদেরকে দিব, আমরা সেই রকমই চিন্তা করি। কিন্তু আপনারা না জানিয়ে এই অবৈধ ব্যবসায় ঢুকে যাবেন, এই অবৈধ ব্যবসা তো আমরা কাউকে করতে দিব না। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন তিনি।

বাংলাদেশের আইনে ক্যাসিনো বা জুয়ার আসরের অনুমোদন দেওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই, বরং সংবিধানে জুয়া বন্ধের বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে রাষ্ট্রকে নির্দেশনা দেওয়া আছে। সেক্ষেত্রে সরকার আইন সংশোধন করে ক্যাসিনো বা জুয়ার লাইসেন্স দেওয়ার কথা ভাবছে কি না- সেই প্রশ্ন তৈরি হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য আসার পর।
ক্যাসিনোর অনুমতি দিতে সরকার আইন সংশোধনের কথা ভাবছে কি না, তা পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আইনের বাইরেতো আমরা অনুমতি দেব না, অনুমতি দিতে হলো তো আমরা আইন দেখব। যেহেতু আইন নাই, অনুমতি দেব কেন?’
‘যুবলীগের চেয়ারম্যানের মন্তব্য তার নিজস্ব’:
ক্যাসিনোতে পুলিশের অভিযান চালানোর বিষয়ে যুবলীগের চেয়ারম্যানের মন্তব্য ‘তার নিজস্ব’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘আমার এখানে কিছু বলার নেই’। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।

যুবলীগ নেতার মালিকানাধীনসহ বিভিন্ন ক্যাসিনোতে অভিযান চালায় পুলিশ। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী বলেন, ‘আপনি বলছেন, ৬০টি ক্যাসিনো আছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আপনারা ৬০ জনে কি এতদিন আঙুল চুষছিলেন? তাহলে যে ৬০ জায়গায় এ ক্যাসিনো, সেই ৬০ জায়গার থানাকে অ্যারেস্ট করা হোক। সেই ৬০ থানার যে র‌্যাব ছিল, তাদের অ্যারেস্ট করা হোক’।

ওই বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা ওনার নিজস্ব মন্তব্য’। এ সময় সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, আমিও দেখেছি। পুলিশ বসে নেই। আমাদের নজরে যেগুলো আসছে আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। আরও যারা চিন্তা-ভাবনা করেছে আমরা অ্যাকশনে যাওয়ার পর বন্ধ করেছে, এটা আমরা জানতাম। ইদানিং আমরা শুনছিলাম এটা (ক্যাসিনো) নাকি বেশ কয়েকটি ঢাকা শহরে হয়েছে, সেই তদন্ত ও গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই এটা (অভিযান) হয়েছে’। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, প্রশাসন জানত না, না জানত- আমি সেখানে যাচ্ছি না। আমি বলছি প্রশাসন যখনই জানছে তখনই অভিযান শুরু করেছে। আমাদের মাননীয় চেয়ারম্যান যুবলীগের, উনি হয়তো তার নিজস্ব মন্তব্য করেছেন, আমার এখানে কিছু বলার নেই। হঠাৎ করে ক্যাসিনোগুলোতে অভিযানের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রথম কথা হলো, ঢাকাতে আমরা শুনেছিলাম কতগুলো অবৈধ ক্যাসিনো আছে। আমরা কোনো ক্যাসিনোকে পারমিশন দেইনি। বিভিন্ন হোটেল ও ক্লাবে আমরা বারের পারমিশন দিয়েছি। আমরা শুনেছিলাম, অনেক জায়গায় নাকি ক্যাসিনো চালাচ্ছে। আমাদের কাছে সেই তথ্য ছিল, সেই অনুযায়ী কাল রাতে (বুধবার) ক্লাব ও ক্যাসিনোগুলো চেক করা হয়েছে। সেই ইনফরমেশনের ভিত্তিতেই হয়েছে’।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা মনে করি ক্যাসিনো করতে হলে সরকারের একটা অনুমতি লাগে, সেগুলো তারা নেয়নি। যেহেতু অনুমতি নেয়নি, তারা এগুলো করে অপরাধ করেছে’। এতদিন ক্যাসিনোগুলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারির বাইরে চলেছে- এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এর আগেও আমার কাছে যে খবর এসেছিল, কলাবাগান ক্লাব, সেটা আমরা বন্ধ করে দিয়েছি। কারওয়ান বাজারে একটা হয়েছিল, সেটাও আমরা বন্ধ করেছি। যখন যেটার খবর আসছে আমরা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিচ্ছি’।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পেয়েছি মাত্র, দেখব এখন। কে কতখানি সহযোগিতা করেছে, কিংবা এটার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে, এগুলো তদন্তের পর আসবে। আমরা এখন দেখেছি, সিলগালা করছে, ম্যাজিস্ট্রেট তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছেন। তদন্তের পর বেরিয়ে আসবে, কে কোনটার সাথে জড়িত ছিল, কার কতখানি ভূমিকা ছিল, সেটা দেখা যাবে’। ক্যাসিনোর ঘটনায় জড়িতদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘এখানে যদি কোনো প্রশাসনের লোক জড়িত থাকে কিংবা তারা এগুলোতে সহযোগিতা করেছেন, তাদের নিয়ন্ত্রণে এগুলো হয়েছে, আইন অনুযায়ী তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে’।

 

পূর্বকোণ/ এস

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট