চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বঙ্গবন্ধুর খুনি নূর চৌধুরীকে ফেরাতে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিলেন কানাডার আদালত

অনলাইন ডেস্ক

১৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অন্যতম আত্মস্বীকৃত খুনি এস এইচ এম বি নূর চৌধুরীকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে বাংলাদেশের পক্ষে রায় দিয়েছেন কানাডার আদালত। গত মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বাংলাদেশের পক্ষে এ রায় দেন কানাডার ফেডারেল আদালত।এমনটিই জানিয়েছে কূতনৈতিক সূত্র।

সেদিন বিচারক জেমস ডব্লিউ ওরেইলি সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, নূর চৌধুরীর অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য প্রকাশে জনস্বার্থের ব্যাঘাত ঘটবে না। সুতরাং তার বিষয়ে বাংলাদেশকে তথ্য না দেয়ার সিদ্ধান্ত কানাডা সরকারকে পুনর্বিবেচনা করতে হবে।

কিন্তু এর আগে কানাডা সরকার বরাবরই দেশটিতে অভিবাসিত নূর চৌধুরীর বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ না করার সিদ্ধান্ত জানিয়ে আসছিল। কেননা কানাডার আইন অনুযায়ী, মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত কাউকে প্রত্যর্পণে বাধা থাকায় সে দেশের সরকার জনস্বার্থ রক্ষার্থে নূর চৌধুরীর বিষয়ে তথ্য প্রকাশ করছিল না। মঙ্গলবার এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে এলো কানাডা।

সেই রায়ের পর বাংলাদেশ মনে করছে, বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত এই খুনিকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় এক ধাপ অগ্রগতি হয়েছে।

মৃতুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক এ সেনা কর্মকর্তাকে ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে সর্বদাই চেষ্টা করে আসছিল আওয়ামী লীগ সরকার। জাতির পিতার খুনিদের একজন কীভাবে কানাডায় বসবাস করছেন, সেই অভিবাসন সংক্রান্ত তথ্য দেশটির সরকারের কাছে চেয়ে আসছিল বাংলাদেশ।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরলে আইন করে বন্ধ করে দেয়া বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ খোলে। এ নিয়ে মামলার পর বিচার শুরু হলেও বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় যাওয়ার পর মামলার গতি মন্থর হয়ে যায়।

১৯৯৯ সালে কানাডার একটি কোর্ট নূরের শরণার্থী সংক্রান্ত একটি আবেদন খারিজ করে তাকে বহিষ্কারের আদেশ দেয়। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করা হলে ২০০৭ সালে নিম্নকোর্টের আদেশ বহাল রাখে উচ্চ আদালত এবং তাকে আবার বহিষ্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য ২০০৭ সালে কানাডিয়ান সরকার একটি চিঠি দেয় বাংলাদেশকে। কিন্তু তৎকালীন সরকারের অনাগ্রহের সুযোগ নিয়ে কানাডায় অবস্থান করছে নূর চৌধুরী।

২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ পুনরায় ক্ষমতায় এলে মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তি করে দণ্ডিত পাঁচজনের ফাঁসি কার্যকর করা হয়।

২০১০ সালের ২৮ জানুয়ারি সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান, মহিউদ্দিন আহমদ (ল্যান্সার), একে বজলুল হুদা ও একেএম মহিউদ্দিনকে (আর্টিলারি) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়।

কিন্তু মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খন্দকার আবদুর রশিদ, এএম রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম, এসএইচএমবি নূর চৌধুরী, আবদুল মাজেদ ও রিসালদার মোসলেম উদ্দিন খান পলাতক থেকে যান।

তাদের মধ্যে নূর কানাডায় এবং রাশেদ যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন। বাকিদের অবস্থান এখনও শনাক্ত হয়নি। সবাইকে দেশে ফেরানোর চেষ্টায় ইন্টারপোল থেকে রেড নোটিশ জারি করা হলেও তাতে কোনো সুফল আসেনি।

প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর একটি বিপদগামী দল স্বাধীনতার স্থপতি শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে তাঁর ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে বাসভবনে হত্যা করে।

পূর্বকোণ/পলাশ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট