চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

জালিয়াত চক্র ইসিতেই

রোহিঙ্গা ভোটার ও ভুয়া এনআইডি : কর্মচারীসহ তিন সদস্য আটক, উদ্ধার খোয়া যাওয়া ল্যাপটপ

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ভোটার নিবন্ধনের অভিযোগে গতকাল রাতে এক মহিলাসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে জয়নাল আবেদীন ডবলমুরিং নির্বাচন কার্যালয়েল অফিস সহায়ক। তাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। যে ল্যাপটপটি ঘিরে ছিল জালিয়াতির রহস্য।

আটককৃত জয়নাল আবেদীন নগরীর ডবলমুরিং থানা নির্বাচন কার্যালয়ের অফিস সহায়ক। তার বাড়ি বাঁশখালী উপজেলায়। তিনি নির্বাচন কমিশনের সাবেক এক সচিবের ভাগ্নে। অন্যরা হলেন বিজয় দাস (২৬)। তিনি পটিয়ার ভাটিখাইন লালমোহন বাড়ির মৃত হারাধন দাসের ছেলে। আরেকজন হলেন বিজয় দাসের বোন সীমা দাস ওরফে সুমাইয়া জাহান। চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মুনীর হোসাইন খান পূর্বকোণকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমরা তদন্ত করছি।’ একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করা হয়েছে। ২০১৫ সালে নির্বাচন কার্যালয় থেকে একটি ল্যাপটপ হারিয়ে যায়। এই ল্যাপটপ থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে রোহিঙ্গা ভোটার করার অভিযোগ রয়েছে। হারিয়ে যাওয়া এই ল্যাপটপকে ঘিরে এতদিন ধরে রহস্যের দানা বেঁধেছিল। গত ১৮ আগস্ট লাকী নামে এক রোহিঙ্গা নারী জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য হাটহাজারী নির্বাচন অফিসে যান। আইডি কার্ড নিয়ে সন্দেহ হলে পরদিন জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে আনা হয়। ইসির কেন্দ্রীয় সার্ভারে লাকীর ভোটারের তথ্য থাকলেও হাটহাজারী উপজেলা নির্বাচন কার্যালয়ের তথ্যে লাকী নামে কোন এনআইডি ইস্যু করা হয়নি। এভাবে ভুয়া এনআইডি তৈরির জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ পায়।

এছাড়াও চট্টগ্রাম থেকে এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী নূর মোহাম্মদ প্রকাশ নুরু ডাকাতের স্মাটকার্ড উদ্ধারের পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়। টনক নড়েছে নির্বাচন কমিশনের। বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

এসব জালিয়াতি ঘটনার পর নির্বাচন কমিশনের টনক নড়ে। ঘটনার তদন্তে নামে নির্বাচনের কমিশনের একাধিক তদন্ত টিম। এছাড়াও পুলিশ ও দুদকও আলাদাভাবে ঘটনার তদন্তে মাঠে নেমেছে।
জালিয়াতির রহস্য উদ্ঘাটনে নির্বাচন কমিশনের একটি টিম ঢাকা থেকে কক্সবাজার ও চট্টগ্রামে আসেন। সেই টিম চট্টগ্রামে এসে রহস্যের উদ্ঘাটন উন্মোচন করেছে।

ইসি’র লাইসন্সেধারী (নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ডধারী ল্যাটপট ও ইন্টারনেট মডেম) ল্যাপটপ ছাড়া ইসির কেন্দ্রীয় সুরক্ষিত সার্ভারে আপলোড করা অন্য কারো পক্ষে সম্ভব নয়। দুদক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তদন্তে ভুয়া এনআইডি তৈরিতে নির্বাচন কার্যালয়ের কর্মচারীদের যোগসাজশের বিষয়টি ওঠে আসে। অবশেষে বেরিয়ে এল সর্ষের ভূত।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট