চট্টগ্রাম সোমবার, ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩

সর্বশেষ:

হুন্ডি বন্ধের সুফল রেমিটেন্সে

করোনায় দেশে ফেরত প্রবাসীদের পুনর্বাসন প্রকল্প

সুফল পেতে যাচ্ছেন ২ লাখ প্রবাসী

মোহাম্মদ আলী 

২৩ অক্টোবর, ২০২৩ | ৪:৪০ অপরাহ্ণ

করোনা মহামারিতে দেশে ফেরত অভিবাসী কর্মীদের পুনর্বাসনে একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে উপকৃত হবে দুই লাখ প্রবাসী। এর আগে সারাদেশ থেকে ৮টি এনজিও সংস্থার মাধ্যমে দুই লাখ প্রবাসীর রেজিস্ট্রেশন করা হবে। রেজিস্ট্রেশনকৃত প্রত্যেককে দেওয়া হবে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। এছাড়া রেজিস্ট্রেশনকৃত থেকে বাছাইকৃত ২৩ হাজার ৫০০ জনকে দেওয়া হবে কারিগরি সহায়তা ও বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ।

ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড সূত্র জানায়, ‘প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের জন্য অনানুষ্ঠানিক খাতে কর্মসংস্থান সৃজনে সহায়ক’ শীর্ষক প্রকল্পটির কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের জানুয়ারিতে। ৪ বছর মেয়াদী প্রকল্পটির কাজ শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। বিশে^র বিভিন্ন দেশ হতে করোনার কারণে ফেরত অভিবাসী কর্মীদের পুনঃএকত্রীকরণের লক্ষ্যে রেইস প্রকল্পের আওতায় দেশের ৩০টি জেলায় স্থাপিত ওয়েলফেয়ার সেন্টারের মাধ্যমে নিবন্ধন কার্যক্রম চলছে। ২০২০ সালের জানুয়ারিতে করোনার কারণে বিদেশ ফেরত অভিবাসী কর্মীগণ ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বিনামূল্যে নিবন্ধন করতে পারবেন।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য মতে, বিশ্বের ১৭৫টি দেশে প্রায় এক কোটি ২৫ লাখের বেশি বাংলাদেশি কর্মী কাজ করছেন। করোনা মহামারির কারণে প্রায় ৬ লাখ প্রবাসী কাজ হারিয়ে দেশে ফেরত আসেন। তাদের মধ্যে অনেকে কর্মস্থলে পুনরায় ফিরে যান। কিন্তু কাজ হারিয়ে বিশাল একটি অংশ আর কর্মস্থলে ফিরতে পারেননি, দেশে থেকে যেতে বাধ্য হন। কাজ হারিয়ে ফেরত আসা এসব প্রবাসী বেকার এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন। এ অবস্থায় সরকার তাদের মধ্যে থেকে রেজিস্টেশনকৃত দুই লাখ প্রবাসীকে প্রকল্পের আওতায় নগদ অর্থ সহায়তা দেবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের ওয়েলফেয়ার সেন্টার, চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মো. আজিজুল ইসলাম ভূঞা দৈনিক পূর্বকোণকে বলেন, ‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতিতেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসীরা কাজ হারিয়েছেন। তাদের বড় একটি অংশ দেশে ফিরে এসেছেন। তাদের অনেকেই আর কর্মস্থলে ফিরে যেতে পারেনি। এসব প্রবাসীর পাশে থাকতেই এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে সরকার। দেশে ফিরে আসাদের মধ্যে রেজিস্ট্রেশনকৃত দুই লাখ প্রবাসীর প্রত্যেককে দেওয়া হবে ১৩ হাজার ৫শ’ টাকা। এছাড়া এদের মধ্যে থেকে বাছাইকৃত ২৩ হাজার ৫০০ জন যেন দেশে কিংবা বিদেশে কিছু করতে পারেন, সে জন্য দেওয়া হবে প্রশিক্ষণ ও  কারিগরি সহায়তা। আর এসব কিছু করার জন্যই বিশ^ ব্যাংকের অর্থায়নে ৪৩০ কোটি টাকার এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়াধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড।

সূত্র জানায়, এই প্রকল্পে অধীনে করোনা ধাক্কা সামলাতে প্রত্যাগত অভিবাসী কর্মীদের দেশে ও বিদেশে কর্মসংস্থানের জন্য আরপিএলের মাধ্যমে সনদ দেওয়ার পরিকল্পনা রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে তৈরি করা হবে পূর্ণাঙ্গ ডাটাবেজ। এছাড়া অর্থনৈতিকভাবে পুনর্বাসনের জন্য প্রত্যাগত অভিবাসীদের আর্থিক, কারিগরি ও অন্যান্য সুবিধাও দেওয়া হবে। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তাদের সংযোগ স্থাপন করে দেওয়া হবে। কর্মসংস্থান তৈরির জন্য বিভিন্ন উৎপাদনশীল কার্যক্রম ও ছোট ব্যবসায়ের উদ্যোগের সঙ্গে সম্পৃক্ত করা হবে। ফলে প্রবাসীরা নিজেদের দক্ষতা ও পছন্দ অনুযায়ী চাকরি বা ব্যবসায়িক উদ্যোগে যুক্ত হতে পারবেন।

 

পূর্বকোণ/এসি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট