চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বজনীন পেনশন স্কিম বাস্তবায়ন নিয়ে সংশয়

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা অফিস

৬ জুন, ২০২৩ | ১১:২২ পূর্বাহ্ণ

বেসরকারি খাতের বিপুল জনগোষ্ঠীকে আর্থিক নিরাপত্তা দিতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। প্রস্তাবিত বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী নতুন অর্থ বছরের শুরু থেকে এটি চালু করার কথা জানান। তবে, এটি বাস্তবায়নে এখন পর্যন্ত কোন প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর কাজ শুরু না করায়, বাস্তবায়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। এ বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপও দেখতে চেয়েছেন তারা।

 

সরকারের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অর্থ বিভাগের আওতায় আলাদা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ স্কিম পরিচালিত হবে। তহবিলে জমা হওয়া অর্থ লগ্নি করা হবে সরকারি বন্ড বা ট্রেজারি বিলে। বিশ্লেষকরা মনে করেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে পারলে, রাষ্ট্রের সব নাগরিককে এমন সুবিধা দেয়া সম্ভব। তবে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রয়েছে নানা ধরনের চ্যালেঞ্জ। অর্থনীতিবিদ ড. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের জন্য প্রাথমিক তহবিলের অর্থ কোথা থেকে সংস্থান করা হবে, তা স্পষ্ট না করায় কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তার বাইরে এ সংগঠনের আইনি ও প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো কেমন হবে, কীভাবে গঠন হবে পেনশন কর্তৃপক্ষ, তাদের দায়দায়িত্ব কী হবে, কার্যপ্রণালী কেমন হবে, ন্যূনতম প্রিমিয়াম হার কত হবে, তহবিল ব্যবস্থাপনা কেমন হবে, কীভাবে এবং কোথায় পেনশন তহবিল বিনিয়োগ হবে, লভ্যাংশ কীভাবে বণ্টন করা হবে- এ সব বিষয়েও রয়েছে অস্পষ্টতা। তাছাড়া বিপুলসংখ্যক মানুষের নামে পৃথক হিসাব খোলা, সেটি স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনা করা যাবে কিনা, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছেন অনেকেই।

 

জানা গেছে, দেশে মোট জনসংখ্যার মধ্যে কর্মক্ষম তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে চার কোটি ৭৪ লাখ। ৬০ বছরের বেশি মানুষ রয়েছে মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ ভাগ। ২০৩০ সালে এই সংখ্যা আরো দুই ভাগ বেড়ে ১২ শতাংশে দাঁড়াবে। তরুণ, মধ্যবয়স্ক কিংবা বৃদ্ধ, দেশের বিপুল এই জনগোষ্ঠীর জন্য সর্বজনীন পেনশন সুবিধা চালু করতে চায় সরকার। এর জন্য ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সীদের নিয়ে একটি তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যেখানে মাসিক কিস্তিতে নির্দিষ্ট হারে অর্থ জমা দিতে হবে। সর্বনি¤œ কিস্তি হবে ১০০ টাকা।

 

প্রস্তাবিত পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হলে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের অধিক বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর পর্যন্ত চাঁদা দেয়া সাপেক্ষে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করতে পারবেন।

 

সরকারের ঘোষণায় বলা হয়েছে, পেনশন স্কিমে ৬০ বছর বা এর বেশি বয়সীরা অবসরে যাবার পর এককালীন বা অবসরকালীন ভাতা পাবেন। কেউ মারা গেলে তার পরিবার এই অর্থ পাবে। পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি পেনশনারের ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন প্রাপ্য হবেন। থাকবে জমা করা অর্থের বিপরীতে ঋণের ব্যবস্থাও। মিলবে করমুক্তির সুবিধাও। দেশের বাইরে কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিকরাও অংশ নিতে পারবেন এ স্কিমে।

 

সরকারি ঘোষণায় জানানো হয়েছে, শুরুতে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মীরা এই কর্মসূচির বাইরে থাকবেন। কারণ তাঁরা এরই মধ্যে পেনশন সুবিধা পাচ্ছেন।

পূর্বকোণ/পিআর 

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট