চট্টগ্রাম মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আজ ১৬২তম জন্মবার্ষিকী

পূর্বকোণ ডেস্ক

৮ মে, ২০২৩ | ১২:৫৬ অপরাহ্ণ

আজ পঁচিশে বৈশাখ। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অন্যতম শীর্ষ রূপকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬২তম জন্মবার্ষিকী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মগ্রহণ করেন ৭ মে ১৮৬১, ২৫ বৈশাখ ১২৬৮ বঙ্গাব্দ। তিনি ছিলেন অগ্রণী বাঙালি কবি, ঔপন্যাসিক, সংগীতস্রষ্টা, নাট্যকার, চিত্রকর, ছোটগল্পকার, প্রাবন্ধিক ও দার্শনিক। রবীন্দ্রনাথকে ‘গুরুদেব’, ‘কবিগুরু’ ও ‘বিশ্বকবি’ অভিধায় ভূষিত করা হয়। রবীন্দ্রনাথের ৫২টি কাব্যগ্রন্থ, ৩৮টি নাটক, ১৩টি উপন্যাস ও ৩৬টি প্রবন্ধ ও অন্যান্য গদ্যসংকলন তাঁর জীবদ্দশায় বা মৃত্যুর পরে প্রকাশিত হয়।

রবীন্দ্রনাথের সর্বমোট ৯৫টি ছোটগল্প ও ১৯১৫টি গান গল্পগুচ্ছ ও গীতবিতান সংকলনের অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের যাবতীয় প্রকাশিত ও গ্রন্থাকারে অপ্রকাশিত রচনা ৩২খণ্ডে রবীন্দ্র রচনাবলী নামে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯১৩ সালে গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থের ইংরেজি অনুবাদের জন্য সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতার এক ধনাঢ্য ও সংস্কৃতিবান ব্রাহ্ম পিরালি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। বাল্যকালে প্রথাগত বিদ্যালয় শিক্ষা তিনি গ্রহণ করেননি, গৃহশিক্ষক রেখে বাড়িতেই তাঁর শিক্ষাব্যবস্থা করা হয়েছিল। ১৮৭৪ সালে তত্ত¡বোধিনী পত্রিকা-এ তাঁর ‘অভিলাষ’ কবিতাটি প্রকাশিত হয়। এটিই ছিল রবীন্দ্রনাথের প্রথম প্রকাশিত রচনা। ১৯০৫ সালে তিনি বঙ্গভঙ্গ-বিরোধী আন্দোলনে জড়িয়ে পড়েন। ১৯১৫ সালে ব্রিটিশ সরকার তাকে ‘নাইট’ উপাধিতে ভূষিত করেন। ১৯১৯ সালে জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে তিনি সেই উপাধি ত্যাগ করেন। তিনি বহুবার বিদেশ ভ্রমণ করেন এবং বিশ্বভ্রাতৃত্বের বাণী প্রচার করেন। দীর্ঘ রোগভোগের পর ৭ আগস্ট ১৯৪১, ২২ শ্রাবণ ১৩৪৮ বঙ্গাব্দ কলকাতার পৈত্রিক বাসভবনে তার মৃত্যু হয়।

রবীন্দ্রসাহিত্যের গতি-প্রকৃতি : রবীন্দ্রনাথের কাব্যসাহিত্যের বৈশিষ্ট্য ভাবগভীরতা, গীতিধর্মিতা চিত্ররূপময়তা, অধ্যাত্মচেতনা, ঐতিহ্যপ্রীতি, প্রকৃতিপ্রেম, মানবপ্রেম, স্বদেশপ্রেম, বিশ্বপ্রেম, রোমান্টিক সৌন্দর্যচেতনা, ভাব, ভাষা, ছন্দ ও আঙ্গিকের বৈচিত্র্য, বাস্তবচেতনা ও প্রগতিচেতনা। রবীন্দ্রনাথের গদ্যভাষাও কাব্যিক। ভারতের ধ্রুপদী ও লৌকিক সংস্কৃতি এবং পাশ্চাত্য বিজ্ঞানচেতনা ও শিল্পদর্শন তাঁর রচনায় গভীর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কথাসাহিত্য ও প্রবন্ধের মাধ্যমে তিনি সমাজ, রাজনীতি ও রাষ্ট্রনীতি সম্পর্কে নিজের মতামত প্রকাশ করেছিলেন। সমাজে কল্যাণের উপায় হিসেবে তিনি গ্রামোন্নয়ন ও গ্রামের দরিদ্র মানুষকে শিক্ষিত করে তোলার পক্ষে মত প্রকাশ করেন। এর পাশাপাশি সামাজিক ভেদাভেদ, অস্পৃশ্যতা, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধেও তিনি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। রবীন্দ্রনাথের দর্শনচেতনায় ঈশ্বরের মূল হিসেবে মানব সংসারকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছে। রবীন্দ্রনাথের গান তাঁর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কীর্তি। তাঁর রচিত ‘জনগণমন-অধিনায়ক জয় হে’ ও ‘আমার সোনার বাংলা’ গান দুটি যথাক্রমে ভারত ও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত।

 

 

পূর্বকোণ/এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট