চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

হেফাজতের কোনো কর্মসূচি নেই, আজ শুধু মোনাজাত

পূর্বকোণ ডেস্ক

৫ মে, ২০২৩ | ৩:১৪ অপরাহ্ণ

বিভিন্ন সময়ে নেতাকর্মীরা কারাবন্দী হলেও বিতর্কিত ৫ মে উপলক্ষে এবার কোনও কর্মসূচি নেই হেফাজতে ইসলামের। তবে এদিন তাদের প্রয়াত ও কারাবন্দী নেতাকর্মীদের জন্য মোনাজাতেই সীমাবদ্ধ থাকবেন বলে জানিয়েছেন হেফাজত নেতারা। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, হেফাজতের কাঁধে মামলা ঝুলছে ২০৩টি, যার বেশিরভাগেরই এখনও তদন্ত শেষ হয়নি। যেগুলোর তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর বিচার প্রক্রিয়াও চলছে ধীরগতিতে। রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান কর্মসূচি ও সহিংস ঘটনার ১০ বছর পূর্ণ হচ্ছে ৫ মে শুক্রবার। ১০ বছর আগে ২০১৩ সালের এ দিনে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় হতাহত হয়েছিলেন অনেকেই। হেফাজত নেতাকর্মীরা নাশকতা চালায় রাজধানীজুড়ে। ২০১৩ সালের ৫ মে’র পর থেকে ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস্থানে নাশকতা, দাঙ্গা-হাঙ্গামাসহ নানা অভিযোগে হেফাজতে ইসলামীর নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অন্তত ২০৩টি মামলা হয়। এসব মামলা থেকে নেতাকর্মীদের শর্তহীন অব্যাহতি চান হেফাজত নেতারা। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে বৈঠকও

করেছেন তারা। বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গেও। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, হেফাজতের সঙ্গে সরকারের অলিখিত সমঝোতা হয়েছে। যে কারণে তারা এবার কোনও কর্মসূচি হাতে নেয়নি। তবে প্রকাশ্যে বিষয়টি নিয়ে কেউ মন্তব্য করতে রাজি নন।
গত মাসের ১৪ এপ্রিল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল হাটহাজারী মাদ্রাসায় যান হেফাজতের প্রয়াত শীর্ষ নেতা আল্লামা শফীর কবর জিয়ারতের জন্য। সেখানে হেফাজতের বর্তমান শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মামলায় জামিনের বিষয়টি কোর্টের এখতিয়ার। হেফাজতের কারাবন্দী নেতাদের জামিনে মুক্তির বিষয়টি বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। আমরা পর্যায়ক্রমে সুপারিশ করছি। আদালত সেগুলো বিবেচনা করছে। অনেকগুলোই (জামিন) হয়ে গেছে। যেগুলো বাকি আছে, সেগুলোরও প্রক্রিয়া চলছে। আশা করি সেগুলোও হয়ে যাবে।’ হেফাজতের সঙ্গে বর্তমানে সরকারের সম্পর্কের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তখন বলেছিলেন, ‘সরকার কারও সঙ্গেই বৈরী সম্পর্ক রাখতে চায় না।’
সূত্র বলছে, সরকারের সঙ্গে হেফাজতে ইসলামের বর্তমান সুসম্পর্কের অংশ হিসেবে সংগঠনটির বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলাগুলো দ্রæত নিষ্পত্তি করতেও পুলিশ সদর দফতর থেকে পুলিশের সংশ্লিষ্ট ইউনিটগুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। তবে পুলিশ সদর দফতরের কোনও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি স্বীকার করেননি। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কোনও কোনও কর্মকর্তা হেফাজতে ইসলামের মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ফৌজদারি আইনের কোনও মামলা পুলিশের নিষ্পত্তি করার কোনও সুযোগ নেই। পুলিশের কাজ হচ্ছে তদন্ত শেষে মামলার চার্জশিট (অভিযোগপত্র) কিংবা ফাইনাল রিপোর্ট (চূড়ান্ত প্রতিবেদন) আদালতে দেওয়া। মামলার চূড়ান্ত নিষ্পত্তির বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার।’
২০১৩ সালের ৫ মে মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতের মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক সহিংসতা হয়। এছাড়া নারায়ণগঞ্জ, বাগেরহাট, ব্রাহ্মণবাড়িয়াসহ সাত জেলায় হেফাজতের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এসব ঘটনায় রাজধানীতে ৫৩টি মামলা দায়ের করা হয়।

 

পূর্বকোণ/ এ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট