চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

৭ মার্চ ছাড়া স্বাধীনতার ইতিহাস অপূর্ণ, বিএনপি দিনটি পালনই করে না : তথ্যমন্ত্রী

৭ মার্চ, ২০২৩ | ১০:০৩ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ, জনসভাকে বাদ দিয়ে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয় না, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ হয় না। বিশ্বের লিপিবদ্ধ ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই ভাষণ একটি দেশ বদলে দিয়েছে, পৃথিবীর মানচিত্রই বদলে দিয়েছে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, ৭ মার্চ বিএনপি পালন করে না। যারা ৭ মার্চ পালন করে না, অস্বীকার করে, তারা স্বাধীনতাকে কতটুকু স্বীকার করে, কতটুকু বিশ্বাস করে সেটিই হচ্ছে বড় প্রশ্ন।’ 
 
মঙ্গলবার (৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর কাকরাইলে তথ্য ভবনে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় আয়োজিত ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য ঐতিহাসিক ৭ই মার্চের ভাষণ অনুষ্ঠানমালা’য়  প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সভাপতিত্বে অতিরিক্ত সচিব মো. ফারুক আহমেদ স্বাগত ভাষণ এবং বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক জাফর ওয়াজেদ আলোচকের বক্তব্য দেন।  এ দিন সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন প্রাঙ্গণে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর এবং তথ্য অধিদফতর আয়োজিত আলোকচিত্র ও বই প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন সচিব হুমায়ুন কবীর খোন্দকার।
 
ড. হাছান বলেন, ‘৭ মার্চকে অস্বীকার করে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রাম হয় না, অথচ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পরে বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় বেতার যন্ত্রে, টেলিভিশনে, রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানমালায় বন্ধ ছিলো, এমন কি ভাষণের সিডি সব জায়গা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল, ধ্বংস করা হয়েছিল। ১৯৭৭ সালে ঘরোয়া রাজনীতির অনুমতি দেওয়ার আগে পর্যন্ত ৭ মার্চের ভাষণ বাজানোর অপরাধে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের সরকার আমাদের দলের অনেককে গ্রেপ্তার করেছে।’ 
 
নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৮, ’৭৯, ’৮০,’ ৮১ সালে ছাত্রলীগের নবীন কর্মী হিসেবে আমি চট্টগ্রাম শহরে জনসভার মাইকিং করতাম। কোনো গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে গেলে প্রথমে আমরা ৭ মার্চের ভাষণ বাজিয়ে দিতাম, মানুষ জমে যেতো। তারপর জনসভার কথা বলতাম।’ 
 
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকে ৭ মার্চের ভাষণ বিশ্ব ইতিহাসের একটি অনন্য প্রামাণ্য দলিল হিসেবে ইউনেস্কো সংরক্ষণ করেছে, বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছে। পৃথিবীতে অনেক কালজয়ী ভাষণ আছে। সেই কালজয়ী ভাষণগুলোর বেশিরভাগই যেমন মেনসন ম্যান্ডেলা, নেতাজী সুভাষ বসুর ভাষণ ছিলো লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর এই ভাষণে আমরা দেখি কোনো দাড়ি-কমা-সেমিকোলন ছাড়া, কোনো ইতস্তত ভাব ছাড়া তিনি এক নাগাড়ে দাঁড়িয়ে সব কথা বলে গিয়েছেন এবং গণমানুষের ভাষায় কথা বলেছেন।’ 
 
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭০ সালে আদমশুমারি অনুযায়ী ঢাকা শহরের লোকসংখ্যা ছিলো ১২ লাখ কয়েক হাজার। আর জনসভায় হাজির ছিলো ১০ লাখ মানুষ। শহরের বেশিরভাগ পুরুষ সেখানে চলে গিয়েছিল, আশেপাশের জেলা থেকেও মানুষের সমাগম ঘটেছিল। এই ভাষণের মাধ্যমে একটি জাতির জন্ম হয়েছিল। একটি নিরস্ত্র জাতি, সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত হয়ে এক সাগর রক্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনেছে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। জাতির পিতার ৭ মার্চের ভাষণ একটি দেশ বদলে দিয়েছে, পৃথিবীর মানচিত্রই বদলে দিয়েছে, তাই এই ভাষণ আমার বিবেচনায় বিশ্বের লিপিবদ্ধ ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষণ এবং জাতিসংঘ সেই স্বীকৃতি দিয়েছে।’ 
 
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আজকের এই দিনে জাতির পিতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাই। শ্রদ্ধা জানাই ১৫ আগস্ট শহীদ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ সকল শহীদদের প্রতি। আমি প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে শুনেছিলাম যে, ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানে যাওয়ার আগে বঙ্গবন্ধুর গায়ে একটু তাপ, জ্বর জ্বর ভাব ছিলো। তখন অনেকেই অনেক নোট দিয়েছিলেন বলার জন্য। বঙ্গমাতা বলেছিলেন যে, তুমি যেটি দেশের জন্য, মানুষের জন্য, জাতির জন্য ভালো মনে করবে সেটাই বলবে। এবং বঙ্গবন্ধু সেটাই বলেছিলেন। তাই এখানে বঙ্গমাতারও ভূমিকা ছিল।’
পূর্বকোণ/জেইউ/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট