চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

দুর্নীতির অভিযোগে হাইকোর্টের তিন বিচারপতিকে অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক , ঢাকা অফিস

২৩ আগস্ট, ২০১৯ | ১:৫২ পূর্বাহ্ণ

সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাদের সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত শুরু করেছে সুপ্রিমকোর্ট। অনিয়েমের অভিযোগে তদন্ত শুরু হওয়া হাইকোর্টের এই তিনজন হলেন বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী, বিচারপতি কাজী রেজাউল হক ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হক।

গতকাল সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিশেষ কর্মকর্তা সাইফুর রহমান তিন বিচারপতি বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মাননীয় তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে প্রাথমিক অনুসন্ধানের প্রেক্ষাপটে রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শক্রমে তাদের বিচারকাজ থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্তের কথা অবহিত করা হয় । পরবর্তীতে তারা ছুটির প্রার্থনা করেন।’

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগের অনুসন্ধান বিচার বিভাগের অন্যদের জন্য একটি বার্তা বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিন বিচারপতির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ জনসম্মুখে প্রকাশ করা বিচার বিভাগের ভাবমূর্তির জন্য শুভ হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি। এটর্নি জেনারেল সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি। মাহবুবে আলম বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে পরামর্শ করেই তিন বিচারপতিকে কাজ থেকে বিরত থাকতে এবং তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছেন বলে আমাকে জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এটর্নি জেনারেল বলেন, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া তিন বিচারপতির বিষয়ে অনুসন্ধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির। মাহবুবে আলম বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আলোচনা করেই এ সিদ্ধান্ত (তিন বিচারপতিকে বিচারকার্য থেকে বিরত রাখার) নিয়েছেন। আইনজীবীরা চান সব বিচারপতি বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকুক। আমরা অনেক আগে থেকেই বলে আসছি বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় ও কলুষমুক্ত করতে বারের (আইনজীবী সমিতি) অধিকাংশ সদস্য দাবি করে আসছিলেন। অভিযোগ ওঠা তিন বিচারপতির অনুসন্ধান কে কীভাবে পরিচালনা করবে, জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রধান বিচারপতি ও রাষ্ট্রপতি অনুসন্ধানের বিষয়ে ঠিক করবেন। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় তারাই সিদ্ধান্ত নেবেন। তবে এ ধরনের ঘটনা (একসঙ্গে তিন বিচারপতিকে বিচারকার্য থেকে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত) আগে কখনো ঘটেনি বলেও জানান রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা মাহবুবে আলম। তিনি আরও জানান, বিচার বিভাগকে সঠিক রাস্তায় রাখার প্রাথমিক দায়িত্ব রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির (বার) কেউ যেন খারাপ কথা না বলে (বিচারপতিদের নিয়ে) বা অভিযোগ না তুলতে পারে সে বিষয়টি তারা দেখবেন (রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতি)। বিচার বিভাগকে কলুষমুক্ত করতে যা যা করা দরকার তা তাদের করা উচিত। বিচারপতিদের বিরুদ্ধে ওঠা এ ধরনের অভিযোগের বিষয়ে পদক্ষেপ আরো অনেক আগেই নেয়া উচিত ছিল বলেও মন্তব্য করে তিনি। মাহবুবে আলম বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, তিনি নিজেই রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনা করে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি এ বিষয়ে আপিল বিভাগের বিচারপতিদের সঙ্গেও আলোচনা করেছেন।’

এদিকে দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল বলেন,আমি এ বিষয়ে অবগত না। আমাকে জানতে হবে যে কি হয়েছে ঘটনা। তার সত্যতা কতটুকু। আমার না জানার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে বিচারবিভাগ স্বাধীন। তাই এইসব পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আমার সাথে কোন পরামর্শের প্রয়োজন হয় না।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট