বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর চলমান আন্দোলনের বিপরীতে বিভিন্ন এলাকায় ‘শান্তি সমাবেশ’ কর্মসূচি পালন করে আসছে আওয়ামী লীগ। এবার সারাদেশে ১১ ফেব্রুয়ারি ‘শান্তি সমাবেশ’ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাসীন দলটি। একই দিন সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি রয়েছে। শান্তি সমাবেশ উপলক্ষে দেশের ৪০ জেলায় সফর করবেন আওয়ামী লীগের ৫৩ কেন্দ্রীয় নেতা।

গতকাল রোববার সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে বৈঠকে কেন্দ্রীয় নেতারা অংশ নেন।

বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি সারাদেশে ইউনিয়ন পর্যায়ে একযোগে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্য ও সহিংসতার প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশ করবে আওয়ামী লীগ। এই কর্মসূচি সফল করতে জেলা নেতাদের সঙ্গে যোগ দেবেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের নেতাদের বিভিন্ন জেলায় কর্মসূচি বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ৪০টি জেলায় দায়িত্ব বণ্টন করা হয়েছে ৫৩ জন কেন্দ্রীয় নেতাকে।

যেখানে যার দায়িত্ব: শান্তি সমাবেশ উপলক্ষে লালমনিরহাট জেলার দায়িত্ব পেয়েছেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সফুরা বেগম রুমি। রংপুর যাচ্ছেন আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর রহমান, রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া।

জয়পুরহাটে যাচ্ছেন দলের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন। বগুড়ায় দলের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং নওগাঁয় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য শাখাওয়াত হোসেন শফিক দায়িত্ব পেয়েছেন।

রাজশাহীতে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও সিটি মেয়র খায়রুজ্জামান লিটন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আখতার জাহান দায়িত্ব পালন করবেন। সিরাজগঞ্জে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অধ্যাপক মেরিনা জাহান, পাবনায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, ঝিনাইদহে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য পারভিন জামান কল্পনা, যশোরে সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মাগুরায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য নির্মল কুমার চ্যাটার্জি, নড়াইলে যুব ও ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক মাশরাফি বিন মুর্তজা, বাগেরহাটে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট আমিরুল ইসলাম মিলন, খুলনায় সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস গ্লোরিয়া সরকার ঝর্ণাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বরগুনায় কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সিদ্দিকুর রহমান, পটুয়াখালীতে সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, বরিশালে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এবং আনিসুর রহমান যাবেন।

পিরোজপুরে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য গোলাম কবির রব্বানী চিনু, টাঙ্গাইলে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আবদুর রাজ্জাক এবং শিক্ষা ও মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, মানিকগঞ্জে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, মুন্সীগঞ্জে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, গাজীপুরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সিমিন হোসেন রিমি, নরসিংদীতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য সানজিদা খানম দায়িত্বে থাকবেন।

রাজবাড়ীতে দলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, ফরিদপুরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আবদুর রহমান, গোপালগঞ্জে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খান এবং উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সৈয়দ আব্দুল আওয়াল শামীম দায়িত্ব পেয়েছেন।

মাদারীপুরে সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শাজাহান খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন ও শাহাবুদ্দিন ফরাজী যাবেন।

শরীয়তপুরে দলের কার্যনির্বাহী সদস্য ইকবাল হোসেন অপু, জামালপুরে সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শেরপুরে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপি, নেত্রকোনায় সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল এবং কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং যাচ্ছেন।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শান্তি সমাবেশে যোগ দিতে বলা হয়েছে দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক নজিবুল্লাহ হিরুকে। কুমিল্লা উত্তরে দলের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক প্রকৌশলী আবদুস সবুর, চাঁদপুরে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদকে।

লক্ষ্মীপুরে যাচ্ছেন দলের কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী। চট্টগ্রাম উত্তরে যাচ্ছেন দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, চট্টগ্রাম দক্ষিণে ত্রাণ ও সমাজকল্যাণবিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, কক্সবাজারে ধর্মবিষয়ক সম্পাদক সিরাজুল মোস্তফা, রাঙামাটিতে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য দীপংকর তালুকদার এবং বান্দরবানে অর্থ ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক ওয়াসিকা আয়েশা খান।

এ ছাড়া যেসব জেলার নাম উল্লেখ করা হয়নি, সেগুলোতে স্থানীয় নেতা এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যদের অংশগ্রহণে ইউনিয়ন পর্যায়ের শান্তি সমাবেশ আয়োজন করতে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ