চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সারাহর চোখে পৃথিবী দেখছেন ফেরদৌস ও সুজন

অনলাইন ডেস্ক

২৯ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১:৩৬ অপরাহ্ণ

মরেও অমর হয়ে রইলেন দেশের প্রথম ব্রেন ডেথ রোগী সারাহ ইসলাম। মৃত্যুর আগে নিজের কিডনি আর চোখ দান করে যাওয়া সারাহ ইসলামের চোখে এখন পৃথিবীর আলো দেখতে পাচ্ছেন শিক্ষিকা ফেরদৌস আখতার ও মোহাম্মদ সুজন।

 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ।

 

আজ রবিবার (২৯ জানুয়ারি) সকালে সারাহ ইসলামের সারাহর দুটি কর্নিয়া বসানো মোহাম্মদ সুজন ও শিক্ষিকা ফেরদৌস আখতারের চোখ পরীক্ষা করেন।

 

এসময় উপাচার্য জানান, গত ১৮ জানুয়ারি রাতে সারাহ ইসলামের দুটি কিডনি অন্য দু’জন রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। একইসঙ্গে তার দুটি কর্নিয়া দুইজনের চোখে বসানো হয়েছে। তার অঙ্গদানের মাধ্যমে চারজন মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছেন। এটি দেশের চিকিৎসাসেবায় মাইলফলক।

 

বিএসএমএমইউ কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২০১৬ সালে ফেরদৌস আখতারের ডান চোখে ভাইরাসজনিত সমস্যা দেখা দেয়। এক পর্যায়ে দৃষ্টিশক্তি হারান। পরে সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ শীষ রহমানের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। সাত বছর আগে কর্নিয়া প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেন এ চিকিৎসক। তবে কর্নিয়া সংকটে এটি এতদিন করা সম্ভব হয়নি।

 

জানা গেছে, কর্নিয়া জোগাড় করতে অগ্রিম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে রেখেছিলেন এ শিক্ষিকা। সারাহর কর্নিয়া দানের সম্মতি পেয়েই চিকিৎসক শীষ রহমান ফোন করে ফেরদৌসকে আখতারকে ঢাকায় আসতে বলেন। এরপর তাঁর ডান চোখে কর্নিয়া প্রতিস্থাপন করা হয়। ডান চোখে এখন স্বাভাবিকভাবে দেখতে পাচ্ছেন তিনি।

 

এদিকে মোহাম্মদ সুজনের চোখের অস্ত্রোপচারের নেতৃত্ব দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চক্ষু বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. রাজশ্রী দাশ। মোহাম্মদ সুজন এখন ভালো আছেন।

 

প্রসঙ্গত, দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ছিলেন ২০ বছরের তরুণী ফাইন আর্টসের মেধাবী শিক্ষার্থী সারাহ ইসলাম। তিনি তাঁর অঙ্গ দান করে যান। গত ১৯ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে সারাহ ইসলাম ব্রেন ডেড হওয়ার পরপরই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাডাভেরিক সেলের আহ্বায়ক ও রেনাল ট্রান্সপ্লান্টেশনের অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলালের নেতৃত্বে তাঁর দুই কিডনি বের করেন আনেন।

 

এরপর একটি কিডনি শামীমা আক্তার নামের এক রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করেন অধ্যাপক ডা. মো. হাবিবুর রহমান দুলাল। সারাহ ইসলামের অপর কিডনিটি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইউরোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. খুরশিদুল আলমের নেতৃত্বে হাসিনা আক্তার নামের অপর এক রোগীর শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করা হয়। তারা দু’জনেই ভালো আছেন।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট