চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

১২৮ কি.মি. রেললাইন ‘হাওয়া’

নিজস্ব প্রতিবেদক

৭ জানুয়ারি, ২০২৩ | ১১:০০ পূর্বাহ্ণ

ব্যবহার না থাকায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ১২৮ কিলোমিটার রেলপথ অকেজো হয়ে গেছে। এসব রেলপথের অধিকাংশ যন্ত্রাংশ চুরি হয়ে গেছে। যেটুকু আছে তাও মাটির নিচে চাপা পড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় রেললাইন তুলে রাখা হলেও ফিশপ্লেট, ফিশবোল্ট, স্লিপারের মতো গুরুত্বপূর্ণ মালামালের কোনো অস্তিত্বই নেই। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব ও অবহেলায় সরকারি সম্পত্তি এভাবে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

 

সূত্র জানায়- দীর্ঘদিন ট্রেন চলাচল না থাকায় রেলওয়ের প্রায় দেড়শ কিলোমিটার রেললাইন অকেজো হয়ে যায়। এসব রেললাইন সংরক্ষণে উদ্যোগ না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করে রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটির নির্দেশনায় সম্প্রতি জেলাভিত্তিক অকেজো রেললাইনের তালিকা তৈরি করে রেলওয়ে। সম্প্রতি রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় এই তালিকা উত্থাপন করা হয়।

 

রেলওয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান- রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের অধীন ১২টি জেলায় ১২৮ কিলোমিটার পরিত্যক্ত রেললাইন রয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি ৪১ দশমিক ৩৯ কিলোমিটার রয়েছে সিলেট বিভাগের হবিগঞ্জ জেলায়। এরপরেই রয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের ফেনী জেলায়। এই জেলায় পরিত্যক্ত রেললাইনের পরিমাণ ২৭ দশমিক ২ কিলোমিটার। ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ জেলায় পরিত্যক্ত রয়েছে ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেললাইন।

 

ময়মনসিংহে পরিত্যক্ত রেললাইনের পরিমাণ ১২ কিলোমিটার। চট্টগ্রামে পরিত্যক্ত হয়ে গেছে ১০ দশমিক ৬৮ কিলোমিটার রেললাইন। জামালপুরে পরিত্যক্ত রেললাইনের পরিমাণ ৪ দশমিক ৬ কিলোমিটার। এছাড়া নেত্রকোনায় ৩ দশমিক ৯, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩ দশমিক ৪৬, নরসিংদীতে ২ দশমিক ২৫, মৌলভীবাজারে ১ দশমিক ১৬, কিশোরগঞ্জে ১, এবং গাজীপুরে শূন্য দশমিক ৫ কিলোমিটার রেললাইন পরিত্যক্ত আছে।

 

পরিত্যক্ত রেললাইনগুলোর মধ্যে কয়েকটি বন্ধ হয়ে যাওয়া শাখা লাইন এবং বিভিন্ন স্টেশনের সাইডিং লাইন। এগুলো দীর্ঘদিন পরিত্যক্ত থাকায় মাটিতে ঢেকে গিয়েছে। ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে বিদ্যমান স্লিপার। চট্টগ্রামে পরিত্যক্ত রেললাইনগুলোর মধ্যে টিএসপি সাইডিং লাইনটি রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়, হারিয়ে গেছে সব স্লিপার। একই অবস্থা স্টিল মিলস সাইডিং লাইনেরও। আর জেটি ইয়ার্ডের ৭০ শতাংশ রেলের কোনো অস্তিত্ব নেই।

 

জানতে চাইলে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের প্রকৌশল বিভাগের একজন কর্মকর্তা পূর্বকোণকে জানান- দীর্ঘদিন রেলওয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়ন এবং জনবল নিয়োগ হয়নি। ফলে ২০০৯ সালের আগে অনেক স্টেশন এবং রেললাইন বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন ব্যবহার না থাকার কারণেই শত কিলোমিটার রেললাইন অকেজো হয়ে গেছে। তবে এখন রেল খাতে প্রচুর উন্নয়ন হচ্ছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া রেললাইন ও স্টেশনগুলো চালু হচ্ছে।

পূর্বকোণ/আর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট