শিক্ষাকে বলা হয় জাতির মেরুদণ্ড। যে জাতি যত শিক্ষিত সে জাতি ঠিক ততটাই উন্নত। অথচ বাংলাদেশে ছেলেমেয়েদের শিক্ষা বাবদ ব্যয়ের ৭১ শতাংশই বহন করতে হয় পরিবারকে। এনজিও বা বেসরকারি স্কুলের ফি ও ব্যয় সরকারি প্রতিষ্ঠানের তুলনায় তিনগুণ। বেসরকারি কিন্ডারগার্টেনের ক্ষেত্রে এ ব্যয়ের পরিমাণ প্রায় নয়গুণ। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) রাজধানীর একটি হোটেলে “ইউনেসকোর গ্লোবাল অ্যাডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট ২০২২” শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদনে এমন চিত্রই উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বেসরকারি খাতে সবচেয়ে বেশি শিক্ষার্থী বাংলাদেশে। আবার বাংলাদেশে মাধ্যমিকে ৯৪ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী।
ইউনেস্কো গ্লোবাল অ্যাডুকেশন মনিটরিং রিপোর্ট প্রথমবারের মতো দক্ষিণ এশিয়ার শিক্ষায় বেসরকারি খাতের ভূমিকা সংক্রান্ত গবেষণা করেছে। এতে সহযোগী হিসেবে রয়েছে ব্র্যাক। প্রতিবেদনটি দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে প্রকাশ করা হচ্ছে।
এতে দেখা যায়, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় সর্বোচ্চ বেসরকারি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শ্রীলঙ্কায় ৮০ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বাংলাদেশে ৫৫ শতাংশ। প্রাথমিকে সর্বোচ্চ ভারতে ৪৫ শতাংশ, বাংলাদেশে ২৪ শতাংশ। মাধ্যমিকে বাংলাদেশের বেসরকারি বিদ্যালয়ে সর্বাধিক সংখ্যক শিক্ষার্থী ৯৪ শতাংশ, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভারতে ৫১ শতাংশ এবং উচ্চ শিক্ষায় সর্বোচ্চ ভারতে ৫৭ শতাংশ আর বাংলাদেশে এ হার ৩৬ শতাংশ। গড়ে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেসরকারি খাতে নির্ভরতা বেশি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তানে শিক্ষা ব্যয়ের ৫৭ শতাংশ বহন করে পরিবার। নেপালে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষায় পরিবারের ব্যয় ৬৩ শতাংশ এবং কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে ৭৫ শতাংশ, যেখানে সরকারি কারিগরি ও বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণে এই ব্যয় হার ৮ শতাংশ। দুটি প্রধান শহরে শীর্ষ চতুর্থাংশ পরিবারের ধারা মাসিক ফি প্রদানের হার নিম্ন চতুর্থাংশ পরিবারের তুলনায় চার থেকে আটগুণ বেশি।
ভারতে শীর্ষ ২০ শতাংশ পরিবার নিচের ২০ শতাংশ পরিবারের তুলনায় সরকারি, বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন সব রকম স্কুলে প্রায় চারগুণ বেশি ব্যয় করে। ২০১৭ এবং ২০১৮ সালে পরিবার সরকারি স্কুলের তুলনায় বেসরকারি অনুদানপ্রাপ্ত এবং অনুদানবিহীন স্কুলে পাঁচগুণ বেশি ব্যয় করেছে।