চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মাত্র ‘১০ হাজার’ চামড়া নষ্ট হয়েছে : শিল্পমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৮ আগস্ট, ২০১৯ | ১১:৩৬ অপরাহ্ণ

দরপতনের কারণে এবার কুরবানির ঈদের পর মৌসুমী ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ কাঁচা চামড়া ফেলে দেয়ার খবর এলেও ব্যবসায়ীরা হিসাব দিয়েছেন সব মিলিয়ে ১০ হাজার চামড়া নষ্ট হয়েছে বলে। চামড়া নিয়ে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে রবিবার (১৮ আগস্ট) এ খাত সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বৈঠকে এই হিসাব দেয়া হয় বলে শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন সাংবাদিকদের জানান। ত্রিপক্ষীয় এ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানও ছিলেন।

বরাবরের মতো এবারও কুরবানির ঈদকে সামনে রেখে সরকারের পক্ষে থেকে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে কাঁচা চামড়ার দাম নির্ধারণ করে দেয়া হলেও ভিন্ন ছিল মাঠের চিত্র। দেশের বিভিন্ন স্থানে আড়তদারদের কাছে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মৌসুমী ব্যবসায়ীদের কেউ লাখ লাখ চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলেন, কেউ বা ফেলে দেন। চট্টগ্রাম, সিলেট, উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৩শ কোটি টাকার চামড়া নষ্ট হয় বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছিল।

বাংলাদেশে চামড়াজাত দ্রব্য তৈরি করতে ট্যানারিগুলোতে চামড়ার চাহিদার সিংহভাগই মেটে ঈদুল আযহায় কুরবানি হওয়া পশু থেকে আসে। কুরবানির পশুর চামড়া মূলত কেনেন মৌসুমী ব্যবসায়ীরা। তাদের কাছ থেকে কাঁচা চামড়া যায় আড়তগুলোতে। সেখান থেকে চামড়া কেনেন ট্যানারি মালিকরা। তবে এবার কাঁচা চামড়ার দর দেখে হতাশ মৌসুমী ব্যবসায়ীরা শুধু চট্টগ্রাম নগরীর বিভিন্ন এলাকায় লাখখানেক পশুর চামড়া সড়কে ফেলে যান অনেকে। দিনাজপুর, শেরপুরেও অনেক চামড়া এভাবে ফেলে দেয়া হয়।আড়তদার ও ট্যানারি মালিকদের চামড়া নিয়ে টানাপড়েনে অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে আজ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক বৈঠকের পর শিল্পমন্ত্রী হুমায়ুন বলেন, আমরা হিসাব করে দেখলাম, প্রতি বছর ৫ হাজার চামড়া নষ্ট হয়, সব সময় এটা হয়ে থাকে। দেশের এ আবহাওয়ায় জেলাওয়ারী হিসাবে ব্যবসায়ীরা দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন, ১০ হাজার চামড়া নষ্ট হতে পারে।

এবার চামড়ার দরপতনের পেছনে কারসাজি ছিল বলে দাবি তোলে বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশের শিল্প ধ্বংসের উদ্দেশ্যে কাঁচা চামড়া রপ্তানি করতেই এ কারসাজি করা হয়েছে। অপরদিকে, চামড়া দরপতনের পেছনে কোনো ‘সিন্ডিকেট’ রয়েছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে বলে জানিয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহনমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

এবার চামড়ার দরপতনে কাঁচা চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করতে রপ্তানির সুযোগ দেওয়ার কথা জানায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়; যদিও তার বিরোধিতা ছিল ট্যানারি মালিকদের। এরপর সরকারের অনুরোধে ট্যানারি মালিকরা শনিবার থেকে কাঁচা চামড়া কেনার উদ্যোগ নিলেও তা ভেস্তে যায় আড়তদারদের পদক্ষপে। তারা ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে পাওনা টাকা না পাওয়া পর্যন্ত কাঁচা চামড়া বিক্রি বন্ধের ঘোষণা দেয়। এ পরিস্থিতিতে সঙ্কটের সমাধানে ট্যানার্স এসোসিয়েশন ও হাইড এন্ড স্কিন মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের নেতাদের নিয়ে বৈঠকে বসেন শিল্পমন্ত্রী ও উপদেষ্টা।

পূর্বকোণ/রাশেদ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট