চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশন মাত্রা নির্ণয়ে বিশেষজ্ঞ কমিটি হাইকোর্টের

অনলাইন ডেস্ক

১৪ নভেম্বর, ২০২২ | ১১:৪২ অপরাহ্ণ

স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় মোবাইল টাওয়ারের রেডিয়েশনের মাত্রা আন্তর্জাতিক মানের ১০ শতাংশের এক শতাংশ হওয়া উচিত কি না, সে বিষয়ে মতামত দিতে সাত সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সাবেক সদস্য মো. কামরুজ্জামানকে। সদস্য সচিব করা হয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) পরিচালক মো. গোলাম রাজ্জাককে।

সাত সদস্যের এ কমিটিকে আগামী চার মাসের মধ্যে মতামত জানিয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির জন্য আগামী বছরের ৪ এপ্রিল দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।

মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) আবেদনে সোমবার (১৪ নভেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদেশের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রিটকারী আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

এদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। আইনজীবী মনজিল মোরসেদ আরও জানান, যেসব দেশের ভিত্তিতে বিকিরণমাত্রা প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৪ দশমিক ৫ ওয়াট করা হয়েছে সেসব দেশ শীতপ্রধান। সেখানে জনবসতি কম। কিন্তু বাংলাদেশ উষ্ণ ও ঘনবসতিপূর্ণ।

ভারতে একটি রায়ের ভিত্তিতে আন্তর্জাতিক মাত্রা নির্ধারণের পর নিজের দেশের প্রেক্ষাপটে মাত্রা দশমিক ৪৫ অর্থাৎ আন্তর্জাতিক মাত্রার ১০ শতাংশের এক শতাংশ করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে তা করা হয়নি।

মোবাইল টাওয়ার বিকিরণের ক্ষতিকর প্রভাব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন হলে সেসব প্রতিবেদন যুক্ত করে মোবাইল ফোন টাওয়ারের রেডিয়েশন নিঃসরণ নিয়ে ২০১২ সালে হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ। এ রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের নির্দেশের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করে।

ওই কমিটি রাজধানীর মতিঝিল, গুলশান ও মিরপুর এলাকায় ছয়টি মোবাইল কোম্পানির ১৮টি টাওয়ারের বিকিরণ পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণ করে ২০১৩ সালে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে তিন দফা সুপারিশ করে প্রতিবেদন দেয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব টাওয়ারের মধ্যে মাত্র একটি টাওয়ারে মাত্রাতিরিক্ত রেডিয়েশন পাওয়া গেছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আদালতের দেওয়া নির্দেশনার আলোকে বিটিআরসি নীতিমালা করে।

পরবর্তী সময়ে আদালতের দেওয়া আদেশে কয়েক দফা এ নীতিমালা সংশোধন করে বিটিআরসি। এ প্রেক্ষাপটে মামলাটি চলমান রেখে ২০১৯ সালের ২৫ এপ্রিল রায় দেন উচ্চ আদালত। রায়ে ১১ দফা নির্দেশনা দিয়ে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে বিকিরণের সম্ভাব্যতা যাচাই করতে বলেন আদালত।

বিটিআরসি সম্ভাব্যতা যাচাই না করে নীতিমালা চূড়ান্ত করে তা আদালতে দাখিল করে। বিটিআরসির চূড়ান্ত নীতিমালায় বিকিরণের মাত্রা আগের মতো রাখা হয়। পরে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ মত নিতে গত ১৬ অক্টোবর হাইকোর্টে আবেদন করে পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশ।

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট