চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ : দুই শতাধিক স্থানে ভেঙে পড়ল গাছ

অনলাইন ডেস্ক

২৫ অক্টোবর, ২০২২ | ১২:০৭ অপরাহ্ণ

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর প্রভাবে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাজধানীতে টানা বৃষ্টিতে পানি জমে কোথাও কোথাও তৈরি হয়েছে জলাবদ্ধতা। এছাড়াও অন্তত দুই শতাধিক স্থানে ভেঙে পড়েছে গাছ। অধিকাংশ স্থানেই স্থানীয়দের সহযোগিতায় পুলিশ, ট্রাফিক বিভাগ, ফায়ার সার্ভিস ও সিটি কর্পোরেশন সড়ক থেকে ভেঙে পড়া গাছ সরিয়ে নিয়েছে। তবে এখনো যান চলাচল বিঘ্নিত রয়েছে বেশ কিছু সড়কে।

ফায়ার সার্ভিস, ডিএমপির ক্রাইম বিভাগ ও ট্রাফিক বিভাগের সূত্রে বিষয়টি জানা গেছে।

 

 

ফায়ার সার্ভিস জানায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে রাজধানীর ৪৭ স্থানে গাছ পড়ার খবর পাওয়া গেছে। দুর্ঘটনা ঘটেছে দুটি, আগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে ১৭টি। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বর্তমানে ৬টি স্থানে গাছ অপসারণের কাজ চালাচ্ছেন।

জানা যায়, সোমবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যার পর থেকে মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত ঝোড়ো হাওয়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে। তবে এতে কোনো হাতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।

ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর প্রভাবে ভারী বৃষ্টির সঙ্গে সন্ধ্যার পর ঢাকায় ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায়। ঢাকায় এ সময় ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ৭০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যায় বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।

 

 

রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর জিরো পয়েন্টে সচিবালয়ের দিকে একটি বড় ইউক্যালিপটাস গাছ ভেঙে পড়ে। গাছ ভেঙে পড়ে রাস্তার অনেকটা অংশ বন্ধ হয়ে যায়।

রমনা ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) জয়নুল আবেদীন বলেন, মৎস্য ভবনের সামনে একটি লেনে যানচলাচল বিঘ্নিত রয়েছে। রাতে একটি বড় গাছ পড়ে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। নিউ মার্কেট এলাকায় একটি গাছ এখনো সড়কে পড়ে আছে। সেখানে একটি লেন পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। সিটি কর্পোরেশনকে জানানো হয়েছে, তারা কাজ করছেন।

 

 

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এর প্রভাবে রমনা ট্রাফিক এলাকার অন্তত ২৫ স্থানে গাছ ভেঙে পড়েছিল। খবর পাওয়ার পর থেকে খুব দ্রুতই স্থানীয়দের সহযোগিতায় ট্রাফিক পুলিশ সেগুলো অপসারণে কাজ শুরু করে। যেগুলো পুলিশ সদস্যরা অপসারণ করতে পারছিলেন না তা সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে সরানো হয়েছে। আপাতত মৎস্য ভবন ও নিউ মার্কেট এলাকায় সমস্যা রয়ে গেছে।

 

অন্যদিকে মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মইনুল হাসান বলেন, মতিঝিল ট্রাফিক বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২৪টি স্থানে গাছ পড়ার খবর আমরা পেয়েছিলাম। অধিকাংশ স্থানেই অপসারণ সম্ভব হয়েছে। তবে শান্তিনগর পুলিশ লাইনের বিপরীতে ডিটিএস এর সামনে একটি বড় গাছ পড়েছে। তা এখন পর্যন্ত অপসারণ সম্ভব হয়নি। এতে সে সড়কে যানবাহন চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। অনেক বার্তা দেওয়ার পর ডিটিএস কর্তৃপক্ষ তাদের লোকজন নিয়ে আসার পর গাছ অপসারণের কাজ শুরু করেছে। সিটি কর্পোরেশনকেও বিষয়টি জানানো হয়েছে।

 

তিনি জানান, গুলিস্তানের মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের সীমানার ভেতরে বড় একটি গাছ ভেঙে পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

ট্রাফিক মতিঝিল বিভাগের রামপুরা ট্রাফিক জোনে বনশ্রী ইউলুপের মুখে গাছ ভেঙে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। সার্জেন্ট শুভ কুমার দে ফোর্সসহ গাছ কেটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করেছেন।

অন্যদিকে রাত ১১টার দিকে যাত্রাবাড়ীর ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের রায়েরবাগ বাস স্টপেজের কাছে উত্তর রায়েরবাগে প্রবেশের মুখে বাঁশের একটি তোরণ ভেঙে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সকালে সেটি অপসারণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়ারি ট্রাফিক বিভাগ।

 

রাজধানীর গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) রবিউল ইসলাম বলেন, অনেক স্থানেই গাছ পড়ে চলাচল বিঘ্নিত হয়েছিল। আমরা এরইমধ্যে সবার সহযোগিতায় অন্তত ৩০ স্থানে যোগাযোগ স্বাভাবিক করতে পেরেছি। বেশ কিছু স্থানে এখনো সমস্যা রয়েছে। তবে যান চলাচল বিঘ্নিত হওয়ার মতো নয়।

 

তিনি বলেন, ইসিবি চত্বর, গুলশান-২ থেকে নতুন বাজার রুটে বড় গাছ পড়েছিল। সব অপসারণ করা হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতার কারণে দুটি স্থানে এখনো যান চলাচল বিঘ্নিত রয়েছে। উত্তরা থেকে কুড়িল ফ্লাইওভারের পর নামতে পানি জমেছে। সেখানে সিটি কর্পোরেশন কাজ করছে।

 

পূর্বকোণ/আর/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট