১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ | ১০:৪৪ পূর্বাহ্ণ
নিজস্ব প্রতিবেদক
অবৈধ, নিষিদ্ধ ও মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা ৯ ধরনের পণ্য নিলামে না তুলে সরকারি ও বিভিন্ন সংস্থার কাছে হস্তান্তর করার বিধিমালা জারি করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এতদিন আটক হওয়া ওই ৯ ধরনের আমদানি পণ্য শুধুমাত্র নিলামে তোলা যেতো। নিলামে তোলা না গেলে সেগুলো নষ্ট হতো। আবার কিছু কিছু পণ্য বার বার নিলামে তোলার পর বিক্রি না হয়ে দীর্ঘদিন পড়ে থাকায় নষ্ট হয়ে যেত। পরে নষ্ট হওয়া সেসব ধ্বংস করা হতো।
তবে এনবিআরের ওই বিধিমালার ফলে চট্টগ্রাম বন্দরসহ দেশের যেসব শুল্ক স্টেশনে পেঁয়াজ ও তেলের মত নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আটকে থেকে নষ্ট হতো, সে সব পণ্যের এবার কপাল খুলেছে। এখন আর ওইসব পণ্য নষ্ট হবে না। আটকের পর ওই পণ্য টিসিবিকে হস্তান্তর/বিক্রি করে ন্যায্যমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করা হবে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর জারি হওয়া ওই বিধিমালায় বিভিন্ন পণ্যের নিষ্পত্তি কীভাবে হবে তা বলা হয়েছে। বিধিমালায় নিলাম কিংবা বিভিন্ন সংস্থার কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর দুই ধরনের পদ্ধতির কথা বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, দেশের কাস্টম হাউস ও শুল্ক স্টেশনগুলোতে প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের পণ্য আটক করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এরপর এসব পণ্য তোলা হয় নিলামে। মূলত মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে পণ্য আনলে, পণ্য ছাড়িয়ে না নিলে ও নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করলেই কেবল পণ্য নিলামে তোলা হয় বা বাজেয়াপ্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়। রাজস্ব বোর্ডের বিধিমালায় ৯ ধরনের পণ্য নিলাম ছাড়াই সরাসরি বিভিন্ন সরকারি দপ্তর বা সংস্থার কাছে বিক্রি বা হস্তান্তর করা যাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
এর মধ্যে সয়াবিন তেল, চিনি, লবণ ও ডালের মতো পচনশীল পণ্য আটক বা বাজেয়াপ্ত হলে তা সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন বাংলাদেশের (টিসিবি) কাছে বিক্রি করতে হবে। চোরাচালানের দায়ে আটক করা ও বাজেয়াপ্ত পণ্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডারে জমা দিতে হবে।
একইভাবে মদ ও মদজাতীয় পণ্য এবং সিগারেট পর্যটন করপোরেশন বা ডিপ্লোমেটিক বন্ডেড প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করতে হবে। প্রত্নতত্ত্ব সামগ্রী আটক হলে তা দিতে হবে জাদুঘর বা সরকারি দপ্তরকে। এ ছাড়া ওষুধের কাঁচামাল ধরা পড়লে ঔষধ প্রশাসনের অনুমোদন সাপেক্ষে কেন্দ্রীয় ঔষধাগার বা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ওষুধ কোম্পানিকে দিতে হবে। আর প্রাণী বা প্রাণীর দেহাবশেষ আটক হলে সরকারি বা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কাছে বিক্রি বা বিনা মূল্যে হস্তান্তর করা যাবে। আটক হওয়া সুতা তাঁত বোর্ডকে দিতে হবে। ওই সুতা তাঁত বোর্ডে নিবন্ধিত প্রাথমিক তাঁতি সমিতির মধ্যে সংরক্ষিত মূল্যে বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।
সোনা, রুপা, প্লাটিনাম, হীরা বা অনুরূপ ধাতু ও গয়না এবং ডলারসহ বিদেশি মুদ্রা আটক বা বাজেয়াপ্ত হলে বাংলাদেশ ব্যাংকে স্থায়ীভাবে হস্তান্তর করতে হবে। একইভাবে বিস্ফোরক দ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা বাহিনী বা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এসব পণ্য ছাড়া অন্য কোনো পণ্য আটক হলে নিলাম করতে হবে। তবে শাড়ি, থ্রিপিস, কম্বল, লুঙ্গিসহ বিভিন্ন ধরনের কাপড় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার না নিলে নিলাম করা যাবে।
পূর্বকোণ/আর