চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

পাচার হওয়া টাকা ফেরত আসবে না: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক

১০ জুন, ২০২২ | ৮:০২ অপরাহ্ণ

বাজেটে পাচার হওয়া টাকা ফেরত আনতে যে সুবিধা দেয়া হয়েছে এটি কোনো কাজে আসবে না। বাজেটে দেয়া সুবিধা অনুযায়ী কর দিয়ে পাচার হওয়া অর্থ বৈধ করা হলে আয়কর কিংবা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষ প্রশ্ন তুলতে পারবে না। তবে এই উদ্যোগের ফলে বিদেশ থেকে কোনো টাকাই ফেরত আসবে না। বরং সৎ ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারাবেন।

আজ শুক্রবার রাজধানীর একটি হোটেলে জাতীয় বাজেট ২০২২-২৩ পর্যালোচনায় এসব কথা বলেন বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলেসি ডায়লগ (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। এসময় প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন সংস্থাটির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। অনুষ্ঠানে সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম এবং সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ব্যাংকঋণ নিয়ে দুর্নীতি করে অন্যায়ভাবে যারা অর্থ নিয়ে গেছে, তাদের আবার সুযোগ-সুবিধা দিয়ে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। এটা চরম অনৈতিক। এর ফলে যারা আইন মেনে ব্যবসায় করেন, কর দেন, বৈধভাবে আয় করেন, তারা উত্সাহ হারাবেন। এ উদ্যোগ কোনো সফলতা বয়ে আনবে না। বরং এটি সৎ করদাতাদের নিরুত্সাহিত করা ও নৈতিকভাবে তাদের নীতিভ্রষ্ট করার একটা প্রচেষ্টা। অন্যদিকে যারা অবৈধ উপায়ে অর্থ-সম্পদ বাইরে নিয়ে যায়, তাদের প্রকারান্তরে উত্সাহিত করা হয়েছে। এছাড়া শুধু জিডিপি প্রবৃদ্ধির ওপর নজর না দিয়ে মূল্যষ্ফীতির চাপের পরিপ্রেক্ষিতে জনগণকে সুরক্ষা দেয়া এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষার ওপর জোর দেয়া প্রয়োজন।

তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে যারা সম্পদশালী, ধনিক শ্রেণি তাদের জয়টাই বেশি দেখা যাচ্ছে। সে অর্থে গরীবদের জন্য সুবিধা দেয়া হয়নি। এ বাজেটে সবচেয়ে বেশি উপেক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণি। ল্যাপটপের ওপর করের হার বাড়ানো ঠিক হয়নি। এতে বোঝা যাচ্ছে যারা বাজেট তৈরি করেন, তাদের বর্তমান বাজারের সঙ্গে কোনো সংযোগ নেই। এমন একটি বাজেট দেয়া হলো যেখানে পাচারকারীদের দেশে টাকা ফিরিয়ে আনার সুযোগ দেয়া হলো। অথচ কর ফাঁকি রোধে কঠোর কোনো পদক্ষেপের কথা বলা হলো না। প্রাতিষ্ঠানিক পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ নেই।

খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, পাচার হওয়া টাকা দেশে ফিরিয়ে আনার উদ্যোগকে সৎ করদাতাদের জন্য চপেটাঘাত। এটি শুধু সুযোগই নয়, ওই ব্যক্তির জন্য দায়মুক্তিরও সুযোগ। সরকার এই সিদ্ধান্ত নেবে না এবং এখান থেকে সরে আসবে বলে মনে করি। প্রস্তাবিত বাজেটে মোট দেশজ উত্পাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে, তা অর্জিত হবে না। এ বছর জিডিপির লক্ষ্য ধরা হয়েছে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ। এ ছাড়া রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য উচ্চাভিলাষী, এ লক্ষ্যও অর্জিত হবে না।

 

পূর্বকোণ/রাজীব/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট