চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

জোড়া খুন : ওমান থেকে দেশে আনা হয়েছে গ্রেপ্তার মুসাকে

অনলাইন ডেস্ক

৯ জুন, ২০২২ | ১২:৪১ অপরাহ্ণ

রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম (টিপু) হত্যার সন্দেহভাজন মূল পরিকল্পনাকারী সুমন শিকদার ওরফে মুসাকে নিয়ে ওমান থেকে দেশে ফিরেছে পুলিশ। পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল তাকে নিয়ে দেশে পৌঁছেছেন। আজ বৃহস্পতিবার (৯ জুন) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে তারা দেশে পৌঁছান।

পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরোর (এনসিবির) সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি) মহিউল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘ওমান থেকে আসা ফ্লাইটটি প্রথমে চট্টগ্রামে আসে। চট্টগ্রামে এসে পুলিশের প্রতিনিধিদল আমাকে বিষয়টি নিশ্চিত করে।’
মতিঝিল এলাকায় দলীয় ও অপরাধ জগতের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধে গত ২৪ মার্চ রাতে রাজধানীর শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় এলোপাতাড়ি গুলিতে নিহত হন জাহিদুল ইসলাম। সে সময় ঘটনাস্থলে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতি (২২) গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

সুমন শিকদারকে ফিরিয়ে আনতে গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহিদুর রহমানের নেতৃত্বে পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল গত রবিবার ওমানে যায়। এর আগে ১০ মে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) সুমন শিকদারকে গ্রেপ্তারের জন্য ওমানের এনসিবিকে অনুরোধ জানায়। ১৭ মে ওমান পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে।

ডিবি জানায়, সুমন শিকদারের বিরুদ্ধে রাজধানীর মতিঝিল, মিরপুরের পল্লবী থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা, অস্ত্র মামলাসহ ১১টি মামলা রয়েছে। তিনি ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী প্রকাশ-বিকাশ গ্রুপ ও মানিক গ্রুপের সদস্য। মতিঝিল এজিবি কলোনিতে যুবলীগ নেতা রিজভী হাসান ওরফে বোঁচা বাবু হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সুমন শিকদার। রিজভী হাসান হত্যা মামলার বাদী তাঁর বাবা আবুল কালাম। এই আবুল কালাম আবার জাহিদুল ইসলামের ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত। রিজভী হত্যা মামলা মিটমাটের জন্য সুমন শিকদারসহ আসামিরা জাহিদুলের কাছে গিয়ে ব্যর্থ হন।

তদন্তসংশ্লিষ্ট পুলিশ ও র‍্যাবের কর্মকর্তারা বলেন, দলীয় প্রতিপক্ষ জাহিদুলকে হত্যা করতে রিজভী হাসান হত্যা মামলার আসামিদের ব্যবহার করে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তথ্যমতে, তিন-চার মাস আগে জাহিদুল হত্যার পরিকল্পনা করা হয়। এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিকাশ-প্রকাশ গ্রুপের অন্যতম সদস্য সুমন শিকদারের সঙ্গে ১৫ লাখ টাকার চুক্তি করেন মতিঝিল ১০ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওমর ফারুক। এর মধ্যে প্রথমে সুমন শিকদারকে ৯ লাখ টাকা দেন তিনি। ১২ মার্চ টাকা নিয়ে দুবাই চলে যান সুমন শিকদার ওরফে মুসা।

পুলিশ কর্মকর্তারা জানান, ইন্টারপোলের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পুলিশ দুবাই পুলিশের মাধ্যমে সুমন শিকদারকে আটকের চেষ্টা শুরু করে। বিষয়টি টের পেয়ে দুবাই থেকে ওমানে চলে যান তিনি। পরে ওমান পুলিশের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করে বাংলাদেশ পুলিশ।

আলোচিত এই হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে দুজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। তাদের মধ্যে ‘শুটার’ মাসুম মোহাম্মদের জবানবন্দিতে হত্যার পরিকল্পনায় সুমন শিকদারের নাম আসে।

পূর্বকোণ/পিআর

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট