চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

দুই ঢাকা সিটির ভোট ডিসেম্বরে, চট্টগ্রামে মার্চে

অনলাইন ডেস্ক

২৫ জুলাই, ২০১৯ | ৫:৩৯ অপরাহ্ণ

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পরিকল্পনায় থাকলেও এবার একইদিনে ভোট হচ্ছে না ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে।

নির্বাচন উপযোগী হওয়ায় চলতি বছরেই হতে যাচ্ছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন। এক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষ দিকে নির্বাচন হবে। ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের সম্ভাবনা বেশি। অপরদিকে চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন হতে পারে আগামী বছর মার্চের মাঝামাঝি সময়ে। সরকার ও নির্বাচন কমিশনের একাধিক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, আগামী বছর জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে ঘোষিত ‘মুজিববর্ষ’ পালনের সুবিধার্থে আগেভাগে সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের ভাবনা হয়েছে সরকারের। যার কারণে চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করে সরকার। তবে, ওই সময়ের মধ্যে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপযোগী হলেও মেয়াদ শেষ না হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এ সময়ে নির্বাচনের জন্য বিবেচনায় আসছে না। যার কারণে এ বছর ডিসেম্বরে ঢাকার দুই সিটি ও আগামী বছর মার্চে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচনের পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। যদিও শুরুতে নির্বাচন কমিশন তিন সিটির নির্বাচন একসঙ্গেই করার পরিকল্পনা নিয়েছিল। সর্বশেষ ২০১৫ সালে এই তিন সিটিতে একই দিনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়ছিল। কিন্তু ওই সময় মেয়াদ পূর্ণ না হওয়ার কারণে চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচিত মেয়র আ জ ম নাছিরের দায়িত্ব গ্রহণে বিলম্ব হয়েছিল। যার কারণে সিটির প্রথম বৈঠকও দেরিতে হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, জাতির পিতার জন্মদিন ১৭ মার্চ থেকে শুরু করে পরের বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের ২৬ মার্চ পর্যন্ত মুজিববর্ষ পালিত হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রথম বৈঠক হয়েছিল ২০১৫ সালের ১৪ মে ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের বৈঠক ১৭ মে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। অপরদিকে, এর প্রায় তিন মাস পরে ৬ আগস্ট অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশেনের প্রথম বৈঠক। সেই হিসেবে এ বছর ১৭ নভেম্বর ঢাকা উত্তর ও ২০ নভেম্বর ঢাকা দক্ষিণ এবং আগামী বছর ৯ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের উপযোগী হবে।

সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী একশ আশি দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। আর আইন অনুযায়ী করপোরেশনের প্রথম বৈঠক থেকে এর মেয়াদ গণনা শুরু হয়।

সব মিলিয়ে কমিশন চাইলে এ বছর ২০ নভেম্বর বা তারপরে তফসিল ঘোষণা করে ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকার দুই সিটির ভোট সম্পন্ন করতে পারবে। অবশ্য ডিসেম্বরের মধ্যে ভোট করতে না পারলে সেক্ষেত্রে জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি বাদ দিয়ে মার্চে যেতে হবে। কারণ, জানুয়ারির ১ তারিখে নতুন ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে, যা চূড়ান্ত হবে ৩১ জানুয়ারি। ফলে এ সময়ে ভোট করতে গেলে নতুন ভোটারদের ভোট দেওয়া না দেওয়ার প্রশ্নে আইনি জটিলতার আশঙ্কা রয়েছে। অপরদিকে ফেব্রুয়ারিতে রয়েছে এসএসসি পরীক্ষা।

প্রসঙ্গত, গত ৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত কমিশনের ৪৭তম বৈঠকে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে শতভাগ ইভিএম ব্যবহার করে ভোটগ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। একইসঙ্গে তিন সিটি করপোরেশনে একইদিনে ভোটগ্রহণের বিষয়ে কমিশন প্রাথমিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তাদের ধারণা, আগের বার একইদিনে ভোট হলেও মেয়াদের পার্থক্য বিবেচনায় এবার ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটির নির্বাচন আলাদাভাবেও করতে পারে। সেক্ষেত্রে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচন চলতি বছরের ডিসেম্বরে হতে পারে। আর চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন মার্চে কিংবা ঈদের পরে জুলাইতে হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের যুগ্ম সচিব মর্যাদার এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের বিষয়ে তাদের কাছে একটি সিগন্যাল আছে। তবে, এখন পর্যন্ত কোনও প্রস্তুতি বা কার্যক্রম শুরু হয়নি।

আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির একজন প্রভাবশালী নেতা ও দলের কেন্দ্রীয় নেতা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এ বছরের মধ্যে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আলোচনা দল ও সরকারের মধ্যে আছে। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম সিটি নির্বাচন উপযোগী না হলে ঢাকার দুটো হয়তো হবে।

স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনও কিছু জানানো হয়নি। সিটি করপোরেশনগুলোর মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিন পূর্বে আমরা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়ে দেবো। আইনে বলা আছে সিটি করপোরেশনের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই অনুযায়ী নির্বাচন হবে বলে সাবেক নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন জানান।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. আলমগীর হোসেন বলেন, ঢাকা বা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের তরফ থেকে এখন পর্যন্ত কোনও চিঠি আসেনি। কমিশনেও নির্বাচন নিয়ে কোনও আলোচনা হয়নি। নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে আইনে যে বিধান রয়েছে, সেই অনুযায়ী হবে। আশা করছি নির্বাচন উপযোগী হলে চিঠি আসবে। সেই অনুযায়ী কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়ে নির্বাচন করবে।

ডিসেম্বরে ভোট হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বিষয়টি নিয়ে এই মুহূর্তে কিছু বলার সুযোগ নেই। নির্বাচনের উপযোগী হলে কমিশন এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে।

তথ্যসূত্র: বাংলা টিব্রিউন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট