চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ঢাকায় বৈঠক : চট্টগ্রাম বন্দরের অনুরোধে কর্মপরিকল্পনা তৈরির সিদ্ধান্ত এনবিআর’র

জট কমাতে আইসিডি’র পণ্য রেলের পরিবর্তে যাবে নৌপথে

সারোয়ার আহমদ

২৪ জুলাই, ২০১৯ | ২:১৪ পূর্বাহ্ণ

ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোর (আইসিডি) পণ্য দ্রুত খালাস করতে রেল পথের পরিবর্তে পানগাঁও বন্দরকে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। ফলে রেল পথের জটিলতায় আইসিডি’র আটকে যাওয়া পণ্যগুলো এখন দ্রুত খালাসের আশার আলো দেখা দিচ্ছে।
গতকাল মঙ্গলবার ঢাকার দিলকুশায় একটি অভিজাত হোটেলে চট্টগ্রাম বন্দর আয়োজিত এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে পণ্য খালাসে শুল্ক আদায়ের প্রক্রিয়া কিভাবে সম্পন্ন হবে এবং কবে নাগাদ পানগাঁও দিয়ে আইসিডি’র পণ্য খালাস হবে তা বৈঠকে নির্দিষ্ট করে বলা হয়নি। এই ব্যাপারে এনবিআর দ্রুত একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করে সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে বৈঠকে জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ব্যবসায়ীদের আমদানি করা পণ্য স্বাভাবিক সময়ে রেলপথে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার কমলাপুর আইসিডি’তে পৌঁছাতে সাধারণত দুই থেকে তিনদিন সময় লাগার কথা। অথচ সেখানে এখন সময় লাগছে দুই সপ্তাহেরও বেশি। ক্ষেত্র বিশেষ কখনও একমাসেরও বেশি সময় লেগে যায়। এ সমস্যা নিরসনে বন্দর কর্তৃপক্ষ ঢাকায় ব্যবহারকারী ও রাজস্ব বোর্ডে কর্মকর্তাদের নিয়ে এই বৈঠক করেন।
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালক (ট্রাফিক) এনামুল করিম পূর্বকোণকে জানান, ‘বৈঠকে বন্দর ব্যবহারকারী ও রাজস্ব বোর্ডের সাথে আইসিডি’র পণ্য খালাসের ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে এনবিআর আইসিডি’র পণ্য খালাসের জন্য নদী পথে পানগাঁওকে বেছে নিয়েছে। এ ব্যাপারে তারা একটি রিপোর্ট তৈরি করবেন এবং পণ্য খালাসের প্রক্রিয়া কেমন হবে তা জানাবেন।
বৈঠকে বন্দর কর্তৃপক্ষ আইসিডি’র পণ্য পরিবহনের জন্য সড়কপথের প্রস্তাব দিলেও বন্দর ব্যবহারকারীরা আপত্তি জানায়। মূলত সড়ক পথে পণ্য পরিবহনে ঝুঁকির কথা চিন্তা করে তারা এই আপত্তি জানায়। যার কারণে সড়কের পরিবর্তে নদী পথে পানগাঁওকে ব্যবহারের কথা ভাবছে এনবিআর।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত এপ্রিল থেকে ঢাকার কমলাপুর ইনল্যান্ড কনটেইনার ডিপোতে (আইসিডি) পণ্য পৌঁছাতে অনেক বেশি সময় লাগছে এবং পণ্যের জট বাঁধছে। পর্যাপ্ত ট্রেন না থাকা ও কমলাপুরের আইসিডিতে কনটেইনার খালাসে সময় বেশি লাগাই জটের মূল কারণ। মে মাসের শুরুতে ঘূর্ণিঝড় ফণীর কারণে মোট নয় দিন রেলে কনটেইনার পরিবহনে ব্যাঘাত ঘটে। এতে জট আরও বেড়ে যায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, বাড়তি সময় লাগায় তাদের কনটেইনারে বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে। বাড়তি মাশুল গুনতে হচ্ছে বন্দরেও। সময়মতো পণ্য হাতে না পেয়ে ব্যবসায়িক ক্ষতির মুখে পড়ছেন তারা। বিশেষ করে ঈদের বাজার ধরার জন্য যারা পণ্য আমদানি করেছিলেন, সময়মতো সেসব পণ্য না পাওয়ার যথাসময়ে তারা বাজারে ছাড়তে পারেননি।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্য নিয়ে আসা কনটেইনারের ৭০ শতাংশই ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার ব্যবসায়ীদের। এসব কনটেইনারের ৩ শতাংশ আসে রেলপথে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ও চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত হয় কমলাপুর আইসিডি। এর মধ্যে ডিপোর পরিচালন কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের তথ্যে দেখা যায়, এখন বন্দর চত্বরে আইসিডিগামী কনটেইনারের সংখ্যা দেড় হাজারের কাছাকাছি। ফলে জাহাজ থেকে নামানোর পর এসব কনটেইনার ঢাকাগামী রেলে তুলতে দুই সপ্তাহের বেশি সময় লাগছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট