চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

মিন্নির বাবার প্রশ্ন: কেন সাক্ষী থেকে আসামি করা হল?

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ জুলাই, ২০১৯ | ১:৩৭ অপরাহ্ণ

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী ও নিহত রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে মঙ্গলবার সকালে জিজ্ঞাসাবাদের নামে ডেকে এনে গ্রেপ্তার দেখানোর ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছে মিন্নির পরিবার। 

পরিবারের দাবি মিন্নি বেশ কিছুদিন যাবত মানসিক চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মানসিকভাবে অসুস্থ মিন্নিকে আসামি সনাক্ত করার নামে একটানা ১২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদে আরো মানসিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।

মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন বুধবার বরগুনার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের জানান, আমার মেয়েকে কি কারণে সাক্ষী থেকে আসামি করা হয়েছে আমি তার সঠিক তদন্ত চাই। তিনি অভিযোগ করেন খুনিদের সহযোগীরা নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের মামলা ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য নাটক সাজিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি আইনগতভাবে লড়াই করবেন বলে জানান সাংবাদিকদের।

প্রসঙ্গত, রিফাত হত্যার পেছনে তার স্ত্রী মিন্নির হাত রয়েছে উল্লেখ করে শনিবার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান নিহত রিফাতের বাবা আব্দুল হালিম দুলাল শরীফ।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মিন্নি আগে নয়ন বন্ডকে বিয়ে করেছিল। ওই বিয়ে গোপন করে রিফাত শরীফকে বিয়ে করে মিন্নি। বিষয়টি আমাদের জানায়নি মিন্নি ও তার পরিবার। কাজেই রিফাত শরীফ হত্যার পেছনে মিন্নির মদদ রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনলে সব বিষয় পরিষ্কার হয়ে যাবে।

এ ঘটনার পর পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করে মিন্নি দাবি করেন, মামলায় অভিযুক্ত আসামিদের আড়াল করতেই আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমার শ্বশুর অসুস্থ মানুষ। তিনি কখন কোথায় কী বলেন তার কোন ঠিক নেই। তবে আমার মনে হচ্ছে তাকে দিয়ে কোন মহল স্বার্থ হাসিল করার জন্য আমাকে জড়িয়ে মামলাটিকে হালকা করার চেষ্টা হচ্ছে। যাতে করে আসামিরা ছাড়া পেয়ে যেতে পারে। আর আমার যদি নয়নের সাথে বিয়েই হবে তবে যখন রিফাতের সাথে বিয়ে হয়েছিলো তখন নয়ন কেন বাধা দেয়নি।

রিফাত হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত ২ জুলাই ভোররাতে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়। এখন পর্যন্ত এজাহারভুক্ত তিনজনসহ সাত আসামি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দী দিয়েছে। এ ঘটনায় বর্তমানে ছয়জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।

২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

 

 

পূর্বকোণ/ময়মী

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট