চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

বিদ্যালয়ের টয়লেটে ১০ ঘণ্টা আটকে ছিল বাকপ্রতিবন্ধী ছাত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৭ সেপ্টেম্বর, ২০২১ | ১০:৪৮ অপরাহ্ণ

চাঁদপুরের শাহরাস্তিতে আরেকটি ছুটির ঘণ্টার মতো ঘটনার মর্মস্পর্শী কাহিনীর অবতারণার পূর্বেই উদ্ধার করা হয়েছে ছাত্রীকে। বিদ্যালয়ের টয়লেটে ১০ ঘণ্টা আটকে থাকার পর বাকপ্রতিবন্ধী ছাত্রীকে উদ্ধার করেছেন স্থানীয়রা। উপজেলার হোসেনপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, বৃহস্পতিবার প্রতিদিনের মতো স্কুলে আসে এসএসসি পরীক্ষার্থী শারমিন আক্তার। বিদ্যালয় ছুটির কিছুক্ষণ পূর্বে সে বিদ্যালয়ের টয়লেটে যায়। এর মধ্যে ছুটির ঘণ্টা বেজে উঠলে সব শিক্ষার্থী বাড়িতে চলে যায়। বিদ্যালয়ের আয়া সাহানারা বেগম টয়লেটে তালা লাগিয়ে দেন। এদিকে সবার অজান্তে টয়লেটে আটকা পড়ে যায় শারমিন।

শারমিনের বাবা কচুয়া উপজেলার আশ্রাফপুর হাজিবাড়ির আনোয়ার হোসেন তার মেয়ে বাড়িতে না আসায় খোঁজখবর নিতে শুরু করেন। তিনি শারমিনের সহপাঠীদের বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ের কোনো সন্ধান না পেয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন। শারমিনের মা হাসিনা বেগম মেয়ের সংবাদ শুনে কুমিল্লা থেকে বাড়িতে চলে আসেন।

এদিকে রাত ১০টার পর পার্শ্ববর্তী স্বর্ণকারপাড়ার আল আমিন স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মোবাইল ফোনের আলোর মাধ্যমে টয়লেটের ভেন্টিলেটরে হাত দেখতে পান। তিনি ভয় পেয়ে তাৎক্ষণিক কয়েকজনকে বিষয়টি অবহিত করেন।

পরে এলাকাবাসী বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে টয়লেটের তালা ভেঙে শারমিনকে উদ্ধার করেন। স্থানীয় আবুল কাশেম তার বাড়িতে নিয়ে তাকে প্রাথমিকভাবে সেবা দেন। উদ্ধারের পর শারমিনের বাবাকে সংবাদ দিলে তিনি ছুটে আসেন।

বিদ্যালয়ের আয়া শাহানারা জানান, বিদ্যালয় সাড়ে ১২টায় ছুটির পর তিনি ৪টায় টয়লেটে তালা লাগিয়ে দেন তবে ভিতরে তিনি দেখেননি।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক অমির হোসেন জানান, বিদ্যালয় ছুটি হয় ১২টায় তবে দাপ্তরিক কাজ থাকায় তিনি সাড়ে ৪টায় শিক্ষকদের নিয়ে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। বিদ্যালয়ের টয়লেটটি সামনে থাকলেও তিনি কোনো কিছু আঁচ করতে পারেননি। মেয়েটিকে উদ্ধারের সময় তার মুখে রক্ত দেখতে পান স্থানীয় জনগণ। কথা বলতে না পারায় চিৎকারের চেষ্টা করতে গিয়ে তার মুখ দিয়ে রক্ত বের হয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা।

শারমিনের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, তার মেয়ের বই-পুস্তক শ্রেণিকক্ষে ছিল। কোনো প্রকার না দেখেই তার প্রতিবন্ধী মেয়েকে আটকে রাখা হয়।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শিরিন আক্তার জানান, বিষয়টি তদন্ত করতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কারও গাফিলতি পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আহসান উল্লাহ চৌধুরী জানান, আমি ঘটনাস্থলে রয়েছি। তদন্তসাপেক্ষে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। খবর যুগান্তরের।

পূর্বকোণ/মামুন/পারভেজ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট