চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

রেলের ওয়ার্কশপে যুক্ত ১০২ মেশিন

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ এপ্রিল, ২০১৯ | ২:৫২ পূর্বাহ্ণ

রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সক্ষমতা বাড়াতে চলছে ৩১৮ কোটি টাকার বৃহৎ প্রকল্প। এর আওতায় পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে যোগ হয়েছে অবকাঠামো তৈরির ১০২টি আধুনিক মেশিন। ১৯৪৭ সালে তৈরি হওয়া এ ওয়ার্কশপে এর আগে ৩৪৫টি মেশিন থাকলেও সক্ষমতা বাড়াতে আরো ১০২টি নতুন মেশিন যোগ করা হয়েছে। ২০১৬ সালের শেষ দিকে ৩১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পটির কাজ শুরু করা হয় ৩ ধাপে। আর এ প্রকল্পের আওতায় দেশ-বিদেশ থেকে ক্রয় করা হয় এসব মেশিনগুলো। শতকোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় করে আনা হয় জাপান, জার্মানি, আমেরিকা, ইতালি ও চায়নার তৈরি মেশিনগুলো। যার মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল মেশিন হল জাপানের তৈরি ‘হুইল বোরিং মেশিন’, জার্মানির তৈরি ‘হুইল লেট মেশিন’ ও ইতালির তৈরি ‘হুইল প্রেস মেশিন’। রেলওয়ে সূত্রে জানা যায় প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ক্রয় করা হয় অত্যাধুনিক মেশিন ৩টি।
মেশিনগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে পাহাড়তলী রেলওয়ে কারখানার কর্ম ব্যবস্থাপক (নির্মাণ) সাইফুল ইসলাম পূর্বকোণকে বলেন, কারখানার কর্ম সক্ষমতা বাড়াতে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় কারখানায় বিভিন্ন দেশ থেকে ১০২টি নতুন আধুনিক মেশিনের সংযোজন করা হয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে ৩টি আধুনিক মেশিন। মেশিনগুলো হল জাপানের তৈরি ‘হুইল বোরিং মেশিন’, জার্মানির তৈরি ‘হুইল লেদ মেশিন’ ও ইতালির তৈরি ‘হুইল প্রেস মেশিন’। ইতালির তৈরি হুইল প্রেস মেশিনটির মাধ্যমে রেলের চাকা খোলা ও লাগানো হয়। জাপানের তৈরি হুইল বোরিং মেশিনটির মাধ্যমে চাকা কেটে সাইজ করা হয়। সরু রেল লাইনে চাকার ঘর্ষণে যে উঁচু নিচু ব্যবধানের সৃষ্টি হয় তা পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে কাজ করে জার্মানির তৈরি হুইল লেট মেশিন। এছাড়া আমেরিকা থেকে আনা হয় ‘এক্সেপটো ফডো মিটার’ ও ‘ইঞ্জিন টেস্টিং প্লান্ট’। চায়না থেকে আনা হয় ‘ওভার হেড ক্রেন’ ও ‘টাভারছাড়’। এছাড়া অত্যাধুনিক অন্য মেশিনগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘টায়ার রোলিং’, ‘এয়ার কম্প্রেসার’, ‘শেয়ারিং মেশিন’, ‘ফোল্ডিং প্রেস মেশিন’, ‘ওয়েল্ডিং মেশিন’, ‘কাটিং মেশিন’, ‘পাঞ্চিং মেশিন’ ও ‘লিফটিং জ্যাক’। আর এসব অত্যাধুনিক মেশিন দিয়ে কাজ শুরু হলে কাজের গতি ও কারখানার সক্ষমতা দুটোই বৃদ্ধি পাবে বলেও জানান তিনি’।
পাহাড়তলী ওয়ার্কশপে ৩ ধাপে চলমান এ উন্নয়ন প্রকল্প সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ৭২ বছরের পুরনো জরাজীর্ণ ভবনগুলো ও ওয়ার্কশপের ভিতরে থাকা প্রায় ৯ কিলোমিটার রেললাইন জুড়ে চলছে উন্নয়ন প্রকল্পের বাকি দুই ধাপের কাজ। জরাজীর্ণ ভবনগুলোতে চলছে নির্মাণকাজ। আর রেললাইনগুলো চারপাশ খুঁড়ে চলছে পাকা করা ও নতুন লাইন বসানোর কাজ।
এদিকে কারখানা উন্নয়নের এ প্রকল্পের কাজ চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক মিজানুর রহমান। তিনি পূর্বকোণকে বলেন, ‘পাহাড়তলী ওয়ার্কশপের সক্ষমতা বাড়াতে চলছে ৩১৮ কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। ২০১৬ সালের শেষ দিকে শুরু করা হয় এ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। ইতিমধ্যে এ প্রকল্পের প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে এ কাজ সম্পন্ন হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি’।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট