চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

আসছে ৫ লাখ ২৩ হাজার কোটি টাকার বাজেট

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩০ এপ্রিল, ২০১৯ | ৩:০৫ পূর্বাহ্ণ

২০১৯-২০ নতুন অর্থবছর বাজেটের আকার ৫ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতা গ্রহণের পরে প্রতি বছরান্তেই বাজেটের আকার বেড়েই চলেছে। যেখানে, ২০১০-১১ অর্থবছরের জন্য ১ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ছিল, সেখানে মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে চলতি অর্থবছরের জন্য বাজেট নির্ধারিত হয়েছিল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার। জানা গেছে, আসন্ন বাজেটে অগ্রাধিকার পাবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা খাতসমুহ।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, আগামী ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটের সম্ভাব্য আকার ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকার। সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের বাজেট মনিটরিং কমিটির এক সভায় বিষয়টি প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত করা হয়। তবে শেষ মুহূর্তে বাজেটে কিছুটা পরিবর্তন আসতে পারে বলে অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র মনে করছে।
সূত্র জানায়, আগামী ১৩ জুন বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট পেশ করা হবে। যদিও নিয়ম অনুযায়ী প্রতিবছর জুন মাসের প্রথম বৃহস্পতিবার বাজেট পেশ করা হয়। সে হিসেবে আগামী ৬ জুন (বৃহস্পতিবার) বাজেট পেশ করার কথা। কিন্তু ৬ জুন পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটি থাকায় ১৩ জুন জাতীয় সংসদে বাজেট পেশ করার সম্ভাবনার কথা জানালেন অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র।
জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) বাজেটের আকার ছিল ৪ লাখ ৪২ হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা। যা, বেড়ে দাড়িয়েছে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে (২০১৯-২০) বাজেটের আকার ধরা হচ্ছে ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। এটি আগামী অর্থবছরের জিডিপি’র ১৮ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) মূল বাজেট থেকে ১২ দশমিক ৬ শতাংশ বেশি। ফলে, চলতি অর্থবছরের বাজেট থেকে আগামী বাজেটের আকার বাড়ছে ৫৮ হাজার ৬১৭ কোটি টাকা।
অর্থবিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের বাজেট ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। কিন্তু সংশোধিত বাজেটে মূল বাজেট থেকে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা কাটছাঁট করা হতে পারে বলে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটের আকার দাঁড়াবে ৪ লাখ ৪২ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকা। সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আসন্ন বাজেটে এডিপি’র আকার প্রস্তাব করা হয়েছে ১ লাখ ৯৮ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। এটি জিডিপি’র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ।
এদিকে, চলতি অর্থবছরের (২০১৮-১৯) মূল বাজেটে এডিপি’র আকার ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৭৩ হাজার কোটি টাকা। এটি ছিল বাজেটে প্রাক্কলিত জিডিপি’র ৬ দশমিক ৮ শতাংশ। সংশোধিত বাজেটে এডিপি’র আকার নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। সূত্র জানায়, আগামী বাজেটে টেকসই উন্নয়ন (এসডিজি) এবং আগামী দুই বছরের মধ্যে সরকারের ‘রূপকল্প-২১’ বাস্তবায়নের বিষয়টি বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া, স্বাধীনতার সুবর্ণ রজত জয়ন্তীতে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ দারিদ্র্যমুক্ত করতে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া আসছে বাজেটে কর্মসংস্থান বাড়ানোর বিষয়ে নানা পদক্ষেপ থাকছে। পাশাপাশি এবারের বাজেটে ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ শীর্ষক একটি নতুন প্রকল্প নেওয়া হচ্ছে। এ কর্মসূচির আওতায় গ্রামের কাঁচা রাস্তা পাকা করার পাশাপাশি গ্রামে বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সুবিধা দেওয়া হবে।
সূত্র জানায়, আসছে অর্থবছরের (২০১৯-২০) বাজেটের মনিটরিং কমিটি’র প্রথম সভায় বেশ কয়েকটি খাতকে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এসব খাতের মধ্যে রয়েছে শিক্ষা, স্বাস্থ্য সামাজিক সুরক্ষা, দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির জন্য সমন্বিত উদ্যোগ। এছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের পাশাপাশি সড়ক, রেলপথ ও বন্দরসহ সার্বিক ভৌত অবকাঠামো উন্নয়নে আগামী বাজেটে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন করার পাশাপাশি কৃষি, পল্লি উন্নয়ন, তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর মাধ্যমে সরকারি সেবা দেওয়ার আওতা সম্প্রসারণ করা হবে। এছাড়া বাজেটে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন, সামাজিক সুরক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সক্ষমতা অর্জনের বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হবে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট