চট্টগ্রাম শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪

মাসে বেতন পান ১০ হাজার, বাড়ির বিদ্যুৎ বিল ২০ হাজার!

অনলাইন ডেস্ক

১০ জুন, ২০২১ | ৬:৩০ অপরাহ্ণ

আব্দুল হক মুন্সী চাকরি করেন একটি স্কুলের অফিস সহকারী হিসেবে। মাস শেষে বেতন পান ১০ হাজার টাকা। তা দিয়ে ৫ জনের সংসার ও নিজের খরচ চালাতে তার প্রতিমাসে ধারদেনা করতে হয়। কিন্তু মে মাসের বিদ্যুৎ বিল ২০ হাজার টাকা দেখে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।

জানা গেছে, ছিলারচর এন্তাজউদ্দিন পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী আব্দুল হক মুন্সির বাড়িতে রয়েছে দুটি ফ্যান, তিনটি বাতি ও একটি ফ্রিজ। এসব ব্যবহারে তার বাড়ির বিদ্যুৎ বিল (হিসাব নং-৩৭২-১২৭৩) এসেছে ২০ হাজার টাকা।

জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে আব্দুল হক মুন্সি মাদারীপুর পল্লিবিদ্যুৎ অফিসের একজন নিয়মিত গ্রাহক, কখনো বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখে না।

তা ছাড়া তার সামন্য বেতনের চাকরির টাকা দিয়ে বিদ্যুৎ বিল দিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট হয়। তারপর কখনো বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রাখে না।

দুটি ফ্যান, তিনটি বাতি ও একটি ফ্রিজ ব্যবহার করে পেছনের মাসে বিল এসেছে ২৪৪, ২০৩, ৩৬৬,৩৯৫, ৪৬২ টাকা সর্বোচ্চ। কিন্তু মে মাসে একই বিদ্যুৎ ব্যবহার করলেও তার বিল ১০ মে এসেছে-১৮৮৫ ইউনিট যার মোট বিল হয়েছে প্রায় ২০ হাজার টাকা। যা জুন মাসে পরিশোধ করতে হবে। যদি নির্ধারিত তারিখে পরিশোধ না করা হয়, তাহলে গুনতে হবে বাড়তি আরও ১ হাজার টাকা জরিমানা।

এমন বিদ্যুৎ বিল তৈরি করার আগেই গত ৩০ মে বিদ্যুৎ বিল সংশোধন করে পুনরায় বিল করার আবেদন করা হলেও তার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করে। পুনরায় ১০ জুন আবারও অফিস আবেদন করতে বলেন তদন্ত করার জন্য।

এর আগে মিটার পরিবর্তন করে দিলেও বিল সংশোধন করা হয় নাই। এই বিদ্যুৎ বিলের কথা শুনে চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়েন এই বিদ্যুৎ গ্রাহক। যাদের কাছে যায় তারাই জানান বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হবে।’

আব্দুল হক মুন্সি বলেন, আমি এত টাকা বিলের কথা শুনে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। এমনকি দুদিন পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছিল চিন্তায়। এত টাকা কীভাবে পরিশোধ করবো, আমার বেতনের টাকার দ্বিগুণ টাকা বিদ্যুৎ বিল এসেছে। আমি এই নিয়ে দুই বার আবেদন করেছি কোনো সমাধান পাই নাই। বরং প্রথম অফিসে আসলে কর্তৃপক্ষ জানায় বিলতো আপনার মিটারে উঠছে আমরা কি করতে পারি। বিল পরিশোধ করতে হবে।

‘এই অস্বাভাবিক বিদ্যুৎ বিল সংশোধন করার অভিযোগ করলে একটি তদন্ত করা হয় যে, আমি অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ চালাই কিনা কিন্তু আমার বিদ্যুৎ বিল সংশোধন করা হয় নাই। বরং বৃহস্পতিবার আসলে আমাকে আবারও আবেদন করতে বলে। এই বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতে হলে আমাকে দেনা করে পরিশোধ করতে হবে। আমার বেতনের দুই মাসের টাকা চলে যাবে। আমি আমার সন্তান পরিবার নিয়ে কীভাবে চলবো। আমি এটার একটা সমাধান চাই।’

মাদারীপুর পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির ম্যানেজার প্রকৌশলী সৈয়দ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি নিজেই দেখতেছি এবং তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মাদারীপুর জেলা প্রশাসক ড. রহিম খাতুন জানান, বিষয়টি অত্যন্ত দুঃখজনক, আমি বিষয়টি পল্লিবিদ্যুতের ম্যানেজারকে জানাব দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।

পূর্বকোণ/এএইচ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট