চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

যে কারণে টিকাদানে এতো সাফল্য বাংলাদেশের

পূর্বকোণ ডেস্ক

২২ জুন, ২০১৯ | ২:১২ পূর্বাহ্ণ

জন্মের পর কিংবা শিশু বয়সে অজানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু কিংবা পঙ্গুত্ব বরণ এক সময় বাংলাদেশের শিশুদের জন্য ছিলো নিয়মিত ঘটনা। কিন্তু এখন আর সে দৃশ্য দেখা যায় না। বরং টিকাদান কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের ফলে অনেক সংক্রামক রোগই বরং এখন বিলুপ্তির পথে। ঢাকার আদাবর এলাকায় বাস করেন খন্দকার জহুরুল আলম। খুবই অল্প বয়সে প্রথমে জ্বর হয়ে পরে এক অজানা রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। যার ফলে তার জীবন হয়ে উঠেছিলো দুর্বিষহ। বিবিসি বাংলাকে তিনি বলেন, “আমাকে বলা হয়েছিলো টাইফয়েডের কারণে আমার পায়ের এই অবস্থা হয়েছে। আসলে এটা ছিলো পোলিও যা অনেক পরে জানা গেছে। পড়াশোনাও দেরিতে শুরু হয়েছে। ছোট ভাই যখন স্কুলে গেলো তখন দেয়া হলো কারণ আমি তো একা যেতে পারবো না। মানুষ আমার নামও ভুলে যেতো, ল্যাংড়া বলতো। পরে একটি ব্যাংকের চাকরির পরীক্ষা দিতে গেলাম আমাকে ভেতরেই ঢুকতে দেয়া হয়নি”। সরকারি হিসেবে গত ২৪ বছরে শিশু মৃত্যুহার কমেছে ৭৩ শতাংশ। এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবরও তেমন একটা শোনা যায় না। সেন্টার ফর ডিএসঅ্যাবিলিটি ইন ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক এএইচএম নোমান খান বলছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও বাংলাদেশ সরকারের টিকাদান কর্মসূচি পুরো পরিস্থিতিই পাল্টে

দিয়েছে। কিভাবে এলো এই সফলতা। জবাবে সরকারের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মওলা বখশ চৌধুরী বলেন, “১৯৭৯ সালে ইপিআই র যাত্রা শুরু হয়। একটি ওয়ার্ডকে আট ভাগ করে টিকাদানের কাজ শুরু হয়। এখনকার মত সচেতন তখন মানুষ ছিলো না। ফ্রেমওয়ার্ক, শক্তিশালী নজরদারিসহ নানা কারণে মানুষের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়েছে আমাদের নিয়ে”।
বখশ চৌধুরী বলেন আস্থা অর্জনের ক্ষেত্রে প্রাথমিক প্রতিবন্ধকতা টপকাতে অনেক বাধাও পার হতে হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা কিংবা মানুষকে সম্পৃক্ত করেই আজকের পর্যায়ে উপনীত হয়েছে টিকাদান কর্মসূচি যা ১৯৮৫ সালে সর্বজনীন টিকাদান কর্মসূচিতে পরিণত হয়েছিলো। এর সফলতা হলো ১০০ জনের মধ্যে ৮২ জন শিশু ভ্যাকসিনের আওতায় এসেছে।
আর ২০১১ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ভ্যাকসিনের দশক ধরা হয়েছে। প্রতিবছর ২০ হাজার শিশু নিউমোনিয়ায় মারা যায়। এ জন্য নিউমোনিয়ার ভ্যাকসিনও অন্তর্ভুক্ত করার ব্যবস্থা হচ্ছে। রুবেলা থেকে মুক্তির জন্য প্রতি ১০০ জনের মধ্যে ৮৬ জনকে এমআর ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট