চট্টগ্রাম বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

ভালোবাসা দিবস এলো করোনার আবহে

তাসনীম হাসান

১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১২:০৭ অপরাহ্ণ

পৃথিবীতে সবচেয়ে মধুরতম বাক্য কোনটি? এই প্রশ্নের উত্তরে হয়তো প্রায় সবাই তিন শব্দের একটি বাক্যের কথাই শোনাবেন। সেই শব্দগুলো হলো ‘আমি তোমাকে ভালোবাসি’। আজ সেই কথা বলার দিন। আজ যে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস।

করোনার এই দমবন্ধ সময়ে বেঁচে যাওয়া পুরোনো প্রেমিক-প্রেমিকারা হয়তো নতুন করে এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজবেন এই দিনে। আর যারা নতুন তাঁরা হয়তো এক কদম এগিয়ে নির্মলেন্দু গুণের কবিতার লাইনের মতো করে প্রথম সুযোগেই স্ট্রেটকাট বলে দেবেন ‘ভালোবাসি।’

একদিকে শীতের বিদায়। অন্যদিকে বসন্তের আগমন। সেই বিদায়-বরণের মেলবন্ধনে বসন্তের হাত ধরেই এলো ভালোবাসা দিবস। এই দিবসটা অবশ্য এবার ভিন্নভাবে এলো। গত বছর এইদিনে বিশ্বের নানা দেশে করোনা নামের অদৃশ্য ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়লেও বাংলাদেশে তার ছায়া তখনো ফেলতে পারেনি। তাই বিনোদন স্পটগুলোতে ছিল আগের মতোই প্রচুর ভিড়। এবার দেশজুড়ে করোনার আবহেই এলো এই দিবস। কিন্তু এসব কি আর ভালোবাসার সামনে বাধা হতে পারে? সেটি যে হওয়ার নয়। তাই তো গতকাল থেকেই শুরু হয়ে গেছে ফুল কেনা, রঙিন কাপড়ে নিজেকে মুড়িয়ে নেওয়ার প্রতিযোগিতা।

কীভাবে এলো এই দিবস

দুনিয়াজুড়ে এই দিবসকে ঘিরে কত আনুষ্ঠানিকতাই তো হয়। সাংস্কৃতিক আয়োজন তো বটেই। এই দিবসে বিনোদন স্পট থেকে রেস্তোরাঁগুলো হরেক রকম অফারও নিয়ে আসে। কিন্তু কোথা হতে এলো এই দিবস?  এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে গুগল ঘেঁটে জানা গেল একাধিক কারণ। ইউনিভার্সিটি অব কলোরাডো বুল্ডারের অধ্যাপক নোয়েল লেনস্কির বক্তব্যটাই অবশ্য বেশিরভাগ মানুষ মেনে নিয়েছেন। তিনি বলেছেন, প্রায় দুই হাজার বছর আগে তৎকালীন রোমান সাম্রাজ্যে ভালোবাসা দিবস উদ‌যাপন শুরু হয়। সে সময় ভালোবাসা আর প্রাচুর্যের আশায় ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি পালিত হতো লুপারক্যালিয়া নামে এক উৎসব। তবে সে উদ্যাপনের সংস্কৃতিতে ভালোবাসার লেশমাত্র ছিল না, ছিল আদিম বর্বরতা।

ভালোবাসা দিবসের নামকরণ ‘ভ্যালেন্টাইনস ডে’ হওয়ার ক্ষেত্রে রোমানদের ভূমিকা রয়েছে। ২৭০ সালের কোনো এক সময় রোমান সম্রাট দ্বিতীয় ক্লদিয়াস সাম্রাজ্যের তরুণদের বিয়ে না করার নির্দেশ দেন। কিন্তু সম্রাটের আদেশ অমান্য করে ভালোবাসার বাণী প্রচার শুরু করেন ভ্যালেন্টাইন নামে এক সাধু। সম্রাটের নির্দেশ অমান্যের শাস্তি হিসেবে সেই সাধুকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। পঞ্চম শতাব্দীর মাঝামাঝি, পোপ গেলাসিয়াস রোমানদের বর্বর উৎসবের ইতি টানা এবং সাধু ভ্যালেন্টাইনের আত্মত্যাগকে স্মরণীয় করার উদ্দেশ্যেই ফেব্রুয়ারি মাসের ১৪ তারিখকে ভালোবাসা দিবস ঘোষণা করেন।

বিশ্বব্যাপী খ্রিস্টধর্মাবলম্বীদের মধ্যে যা দ্রুতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। অবশ্য ভালোবাসা দিবসকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কৃতিত্বটা শুভেচ্ছা কার্ড তৈরিকারী প্রতিষ্ঠান হলমার্কের। ১৯১৩ সাল থেকে হলমার্ক যখন ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে হাজার হাজার কার্ড তৈরি শুরু করে। তখন থেকেই সেই দিবসটি ছড়িয়ে পড়েয় বিশ্বের প্রতিটি দেশে, প্রতিটি পাড়ায়।

বসন্ত ভালোবাসা উৎসব

আজ সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের জন্য কাউন্সিলর মোরশেদ আলমের উদ্যোগে ও সামাজিক সংগঠন বিজয়কেতনের সহযোগিতায় ব্যতিক্রমী আয়োজন বসন্ত ভালোবাসা উৎসব।

প্রায় ৫শ শিশুকে নিয়ে আজ সকাল সাড়ে নয়টা থেকে সামারা কনভেনশন সেন্টারে শুরু হবে এই আয়োজন। দিনব্যাপী নানান আয়োজনের মধ্যে থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান নাচ, গান, নাটক, কবিতা, যাদু প্রদর্শন এবং মধ্যাহ্ন ভোজের ব্যবস্থা।

পূর্বকোণ/এএ

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট