চট্টগ্রাম শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪

সর্বশেষ:

সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

কায়সার হামিদ মানিক

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ | ১২:০০ অপরাহ্ণ

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান নিয়ে উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গা নেতারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। কারণ ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারে সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে নারী-পুরুষ ও শিশুদের হত্যা, নারীদের গণধর্ষণ করলে ১২ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা প্রাণ বাঁচাতে বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। যেহেতু আবারও যখন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা গেল তাহলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে মিয়ানমান অনিচ্ছা প্রকাশ করতে পারে।

আন্তর্জাতিক চাপ মিয়ানমার মানে কিনা সন্দেহ রয়েছে জানিয়ে তুমব্রু শুন্য রেখায় অবস্থানরত রোহিঙ্গা নেতা দিল মোহাম্মদ, উখিয়ার কুতুপালং রেজিস্টার্ড ক্যাম্পের চেয়ারম্যান হাফেজ জালাল আহমদ, কুতুপালং ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা সিরাজুল মোস্তফা, হামিদ হোসন, টেকনাফ মোছনি ক্যাম্পের নুরুল ইসলাম বলেন, এই মুহূর্তে রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে ফেরত গেলে আবারও জোর জুলুমের শিকার হতে হবে। তারা মিয়ানমারে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে সামরিক বাহিনী অপসারণ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এছাড়া সেখানে গণতন্ত্র রক্ষায় এগিয়ে আসতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান।

সোমবার (গতকাল) ভোরে মিয়ানমারের নেত্রী অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উয়িন মিন্ট এবং ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র নেতাদের আটক করে জরুরি অবস্থা জারি করেছে দেশটির সেনাবাহিনী। ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়া হিসেবে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

নিজেদের নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশনে এক ভাষণে মিয়ানমার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, ‘নির্বাচনে জালিয়াতি’র প্রতিক্রিয়ায় এ অভিযান চালানো হয়েছে। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং-এর কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে এবং এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নিয়েছেন দেশটির সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ এবং সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয়াং সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েকদিন ধরে চলমান দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পর এ ঘটনা ঘটল। এর আগে ১৯৬২ সালে এক অভ্যুত্থানের পর দেশটি টানা ৪৯ বছর সামরিক বাহিনীর হাতে শাসিত হয়েছে। গত বছর ৮ নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি নিরঙ্কুশ জয় পায়।

এদিকে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর কক্সবাজার, বান্দরবান-মিয়ানমার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। গতকাল (সোমবার) ভোর থেকেই সীমান্তের গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন পয়েন্টে নিরাপত্তা জোরদার করে বিজিবি। বিশেষ করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তুমব্রু, ঘুমধুম, চাকঢালা ও কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়ানের অধিনায়ক কর্নেল আলী হায়দার আজাদ আহম্মদ জানিয়েছেন, সীমান্তে বিজিবি সতর্ক অবস্থায় থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। যাতে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখছে বিজিবি।

বিজিবি কক্সবাজার রিজিয়নের রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাজেদুর রহমান জানিয়েছেন, সীমান্ত পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর রাখা হচ্ছে।

পূর্বকোণ/পি-আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট