চট্টগ্রাম বৃহষ্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪

নির্বাচনের ইতিহাসে ৫ জানুয়ারি এক কালিমালিপ্ত দিন: রিজভী

অনলাইন ডেস্ক

৫ জানুয়ারি, ২০২১ | ৪:১৯ অপরাহ্ণ

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ বলেছেন, বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে ৫ জানুয়ারি এক কালিমালিপ্ত দিন। ২০১৪ সালের এই দিনে ভোটার ও বিরোধীদলের প্রার্থীবিহীন একতরফা বিতর্কিত, প্রতারণামূলক, হাস্যকর ও শতাব্দীর শ্রেষ্ঠ প্রহসনমূলক একদলীয় পাতানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব মজিবর রহমান সরোয়ার, খায়রুল কবির খোকন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

রিজভী আহমেদ বলেন, দেশ-বিদেশে প্রত্যাখ্যাত, জনধিকৃত একদলীয় নির্বাচন করতে গিয়ে আওয়ামী লীগ আবারো নিজেদেরকে সারা দুনিয়ায় হেয় প্রতিপন্ন করে। আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ও দলীয় সন্ত্রাসীদের দিয়ে গণহত্যা, খুন, গুম,নির্যাতন চালিয়েও আওয়ামী লীগ ন্যূনতম ভোট আদায় করতে পারেনি।

লিখিত বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে নিজেদের কলঙ্কিত রেকর্ডকে ভেঙে ফেলে। ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। স্বাধীনতা অর্জনের মাত্র সোয়া এক বছরের মাথায় অনুষ্ঠিত নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জনগণের ওপর বিশ্বাস রাখতে পারেনি। তাদেরকে সন্ত্রাস-ভোট ডাকাতি-কারচুপির আশ্রয় নিতে হয়েছিল। ৩০০ আসনের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিজেরা নিয়েছিল ২৯৩ আসন। মাত্র ৭টি আসন বিরোধী দলকে দেয়া হয়। ৭৩ সালের নির্বাচনে জাসদ ২৩৭টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। জাসদকে মাত্র একটি আসন দেয়া হয়েছিল।

বিএনপির সিনিয়র এই নেতা বলেন, আওয়ামী লীগের ইতিহাসে দুর্নীতি, সন্ত্রাস গণতন্ত্র হত্যা, ভোটাধিকার হরণ এসব নতুন নয়। দেশের ইতিহাসে দেখা যায়, আওয়ামী লীগ কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনী সংস্কৃতি আওয়ামী লীগ কখনোই পাত্তা দেয় না। মানুষের ভোটাধিকার হরণ করতে পরিকল্পিতভাবে ২০১১ সালে সংবিধান থেকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে দিয়েছিল।

তিনি বলেন, কেবলমাত্র আওয়ামী লীগের দ্বারাই নির্বাচনের আগেই সরকার গঠন করার মতো এমন লজ্জাকর আর ন্যাক্কারজনক ও নজীরবিহীন নির্বাচন সম্ভব। সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ সালের একতরফা জাতীয় নির্বাচন সবই ছিল দেশি-বিদেশি গভীর চক্রান্তের নির্বাচন।

রিজভী আরও বলেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য লাকসাম পৌর নির্বাচনে ধানের শীষের মেয়র প্রার্থী মো. বেলাল রহমান মজুমদার ও তার মনোনয়নপত্রের সমর্থনকারী মাহবুবুর রহমান মজুমদার মানিকের ওপর লাকসাম বাজারে প্রকাশ্যে দিবালোকে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের ৪০-৫০ জনের সশস্ত্র একটি দল পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে তাদেরকে গুরুতর জখম করে। রির্টানিং অফিসার বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর সমর্থনকারী উপস্থিতি না থাকায় তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এছাড়াও দলীয় কাউন্সিলর প্রার্থী মো. বেলায়েত হোসেন ও রুহুল আমীনের ওপর সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে তাদেরকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। এতে বেলায়েতের অবস্থা সংকটাপন্ন হওয়ায় তাকে কুমিল্লা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাবনার সাথিয়া পৌর নির্বাচনেও একই চিত্র দেখা গেছে।

 

পূর্বকোণ/আরপি

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট