স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে করোনা ভ্যাকসিন ক্রয় ও সংরক্ষণ বাবদ মোট ৪ হাজার ৩১৪ কোটি ৪৯ লাখ ১৭ হাজার টাকা সংস্থান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে বাস্তবায়নের জন্য প্রস্তাবিত ‘কোভিড-১৯ ইমার্জেন্সি রেসপন্স এন্ড প্যানডামিক প্রিপারেডেন্সে প্রথম সংশোধিত প্রকল্পের আওতায় এমন উদ্যোগ নেয়া হবে। প্রস্তাবিত প্রকল্পের আওতায় ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত ভ্যাকসিন কিনতে খরচ হবে ৩ হাজার ৩০ কোটি টাকা। বাকি অর্থ পর্যায় ক্রমে খরচ হবে প্রকল্পের আওতায়।

প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার (৫ জানুয়ারি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। এ সভায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান উপস্থিত থাকবেন। অন্যদিকে শেরে-বাংলা নগর মন্ত্রিসভা কমিটি পরিষদ (এনইসি) সম্মেলনকক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-সচিবরা উপস্থিত থাকবেন।

এদিকে, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি-ডিসেম্বরের মধ্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার সম্ভাবনা আছে বলে পরিকল্পনা কমিশনকে অবগত করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তবে, কোভ্যাক্স কর্তৃক নির্ধারিত কোনো দেশ থেকে ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে তা এখনো জানা যায়নি।

ভ্যাকসিন কেনা প্রসঙ্গে প্রকল্পের পরিচালক ডা. মোহাম্মদ আজিজুর রহমান সিদ্দিকী জানান, প্রকল্পের আওতায় ৪ হাজার ৩১৪ কোটি টাকা ভ্যাকসিন ক্রয়, পরিবহন ও সংরক্ষণ বাবদ রাখা হচ্ছে। প্রকল্পটি মঙ্গলবার একনেক সভায় চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হবে।

ভ্যাকসিন দেওয়ার অনুমোদিত নীতিমালা সর্বসাধারণের বোধগম্যভাবে সারসংক্ষেপ আকারে প্রণয়ন এবং ভ্যাকসিনেশন প্রক্রিয়ার একটি সহজবোধ্য ফ্লো-চার্ট ডিপিপিতে সংযুক্ত করতে হবে। ভ্যাকসিন দেয়ার বিষয়ে প্রতিটা উপজেলায় প্রচারের জন্য ব্যানার, মাইকিং ও প্রকাশনা খাতে প্রয়োজনীয় বরাদ্দ রাখতে নির্দেশ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

এছাড়া ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন এলাকার জন্য একটি করে মোট দুটি মোবাইল ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ভ্যানের সংস্থান রাখতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দ্বৈততা পরিহারপূর্বক গঠিত ১০ শয্যার ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট এবং ১০টি জেলায় মেডিক্যাল বর্জ্য ব্যাবস্থপনা প্ল্যান্ট স্থাপনের নির্দেশ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

২০২০ সালের ১৮ এপ্রিল করোনা মোকাবিলায় বিশ্বব্যাংকের জরুরি ঋণ ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়েছিল। সেসময় প্রকল্পটি খুব জরুরি বিবেচনায় দ্রুত অনুমোদনের উদ্যোগ নেয়া হয়।

সমগ্র বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবে আক্রান্ত ও মৃত্যু ক্রমশঃ বাড়তে থাকায় কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি), বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ১০ কোটি ডলারের লেন্ডিং করতে সম্মত হয়েছে, যা এ প্রকল্পের মাধ্যমে ব্যয় করা হবে।

প্রকল্পটির মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৬ হাজার ৭৮৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ এবং বিশ্বব্যাংক ও এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক (এআইআইবি) ঋণ ৬ হাজার ৬১৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা। এপ্রিল ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য প্রথম সংশোধন করা হবে।

পূর্বকোণ/এএ