চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

জনপ্রতিনিধিরা ক্ষেপেছেন ইউএনওদের বিরুদ্ধে

আইন সংশোধনের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক

৩ জানুয়ারি, ২০২১ | ২:১৭ অপরাহ্ণ

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) আমলাতান্ত্রিক মনোভাব জন প্রতিনিধিদের কাজে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে অভিযোগ করে বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ এসোসিয়েশন বলেছে, উপজেলা পর্যায়ে ইউএনওরা শাসকের ভূমিকা পালন করছেন।

 

সংগঠনটি অভিযোগ করে, জনপ্রতিনিধিদের আলাদা করে কর্মকর্তারা সামন্তবাদী শাসন প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করছেন। কর্মকর্তাদের আইন পরিপন্থী আচরণ ও কাজের কারণে মাঠপর্যায়ে সমন্বয়হীনতা চলছে।

 

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনি মিলনায়তনে গতকাল শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এসব অভিযোগ করে সংগঠনটি। ‘সাংবিধানিক নির্দেশনা ও আইনানুযায়ী প্রতিষ্ঠিত প্রশাসনিক একাংশ নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ কর্তৃত্বহীন, তৃণমূলে জবাবদিহি ও শাসন বিঘ্নিত’ শীর্ষক ব্যানারে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান সংগঠনের সভাপতি হারুন-অর-রশীদ হাওলাদার। এতে বলা হয়, আইনে উপজেলাকে প্রশাসনিক একাংশ ঘোষণা করা হয়েছে। যার প্রশাসনিক কাঠামো নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ। উপজেলা পরিষদ আইনের তৃতীয় তফসিলে ১২টি মন্ত্রণালয়ের উপজেলাধীন ১৭টি বিভাগকে উপজেলা পরিষদের কাছে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের কার্যাবলিসহ হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আইনকে বিবেচনায় না নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর বিভিন্ন সময়ে পরিপত্র জারি করছে। যার মাধ্যমে উপজেলার সব বিভাগের কার্যাবলি নিষ্পত্তির জন্য গঠিত প্রায় শতভাগ কমিটিতে ইউএনওকে সভাপতি করা হয়েছে। এই ১৭টি বিভাগের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তাও ইউএনও। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমোদন ছাড়া সব কাজ কমিটি প্রধানের ক্ষমতাবলে ইউএনও নিয়ন্ত্রণ করছেন। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমোদনক্রমে কাজ সম্পাদনের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে একাধিকবার পরিপত্র ও আদেশ জারি করা হয়। কিন্তু উপজেলা পর্যায় এই নির্দেশনা বা আদেশের কোনো প্রতিপালন হয় না বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।

 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, উপজেলা পরিষদে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি থাকলেও প্রজাতন্ত্রের একজন কর্মকর্তা (ইউএনও) সবকিছু উপেক্ষা করে উপজেলায় শাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। কিছু প্রশাসনিক কর্মকর্তা গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণকে পাশ কাটিয়ে জনপ্রতিনিধিবিহীন জনপ্রশাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠতার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত।

 

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করা হয়, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা সংবিধান, আইন ও প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী এগুলোর বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিলে বিপদে পড়েন। যেকোনো ইস্যু সৃষ্টি করে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নির্বাহী তদন্তের মাধ্যমে অপসারণ করা হয়। এভাবে পরিকল্পিত ছকে স্থানীয় সরকার পর্যায়ে জনপ্রতিনিধি ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা নষ্ট করা হচ্ছে।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হয় ৫ম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এরপর উপজেলা পরিষদ অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিবকে লিখিতভাবে এসব বিষয় জানিয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানানো হয়।

 

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, লিখিত আবেদনের কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। ১৫ জন সচিবের কাছে গত ২০ সেপ্টেম্বর নোটিশ ডিমান্ডিং জাস্টিস পাঠানো হয়েছে। এরও কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সবকিছুতে তাচ্ছিল্য দেখাচ্ছেন বলে লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করা হয়।

 

পূর্বকোণ/পি-মামুন

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট