চট্টগ্রাম শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪

সর্বশেষ:

বাজেট এমনভাবে করে দিয়েছি যাতে সবাই সুফল পায়

নিজস্ব প্রতিবেদক হ ঢাকা অফিস

১৫ জুন, ২০১৯ | ২:০৭ পূর্বাহ্ণ

বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী
৩ কোটি নতুন কর্মসংস্থান
গ্রাম হবে আধুনিক শহর
দ্রুততম সময়ে ফাইভ-জি

বাংলাদেশের ইতিহাসে এটাই সর্ববৃহৎ বাজেট জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সরকারের বিগত দুই মেয়াদে ১০ বছরের যে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে তার মাধ্যমে জনগণের মাঝে আমাদের প্রতি আস্থা বেড়েছে। তার প্রতিফলন ঘটেছে গত ৩০ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে। গতকাল বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৯-২০২০ সালের বাজেট এমনভাবে করে দিয়েছি যাতে সবাই এর সুফল পায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি উন্নীত করা সরকারের লক্ষ্য; এসডিজি বাস্তবায়ন ও সপ্তম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা সামনে রেখে বাজেট প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রস্তাবিত বাজেট সেই লক্ষ্যমাত্রার পথে বাংলাদেশকে নিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
রীতি অনুযায়ী বাজেটোত্তর সংবাদ সম্মেলনে মূল আয়োজক ও বক্তা থাকেন অর্থমন্ত্রী। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। আগেই জানানো হয়েছিল, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সংবাদ সম্মেলন করবেন। তবে সংবাদ সম্মেলন শুরুর আগে মঞ্চে ডেকে নেন প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে। সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর দুইপাশে কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশী, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া ছিলেন। অর্থসচিব আব্দুর রউফ তালুকদার সংবাদ সম্মেলনটি পরিচালনা করেন। বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী প্রস্তাবিত বাজেটের বিভিন্ন দিক এবং সরকারের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন। পরে, সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট পেশ করা হয়েছে। এটি দেশের ৪৮তম এবং বর্তমান সরকারের তৃতীয় মেয়াদের প্রথম বাজেট। ‘সমৃদ্ধ আগামীর পথযাত্রায় বাংলাদেশ : সময় এখন আমাদের, সময় এখন বাংলাদেশের’ শিরোনামে প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ধরা হয় ৫ লাখ ২৩ হাজার ১৯০ কোটি টাকা। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বাজেট এটি।
সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন বাইরে গেলে আগে যারা মনে করত আমরা ভিক্ষুকের জাত হিসেবে যাচ্ছি, এখন আর কেউ তা মনে করে না। এটাই হচ্ছে আমাদের সব থেকে বড় অর্জন। তিনি বলেন, দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলার জন্য যে যুদ্ধ, সেটাই সোনালি যুদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বেকারত্ব ঘুচাতে স্টার্টআপ ফার্ড সৃষ্টি করা হয়েছে। বরাদ্দ দেয়া হয়েছে ১০০ কোটি টাকা। বাজেট ঘাটতি জিডিপির ৫ শতাংশের মধ্যে রাখা হয়েছে। কৃষি খাতের উন্নয়নে ২০ শতাংশ প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে। ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ৯৩ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। উৎপাদন ক্ষমতা ২১ হাজার ১৬৯ মেগাওয়াট। শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ পাবে। গ্রামের উন্নয়নে সরকারের বিশেষ দৃষ্টি অব্যাহত থাকবে। গ্রাম হবে আধুনিক শহর। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়ন আরও গতি পাবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুততম সময়ে ফাইভ-জির ব্যবস্থা করা হবে।
এই বাজেট অর্থনৈতিক অপশাসনের সুবিধাভোগীদের পক্ষে গেছে কি-না, এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নাম উল্লেখ না করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের মানসিকতা অসুস্থ তাদের কিছুই ভালো লাগে না। সব কিছুতেই তারা কিন্তু খোঁজে। তারা কী গবেষণা করেন আমি জানি না। একটা কিছু বলতে হবে। তাই বলেছে। এটা একটা অসুস্থতা। ভালো সমালোচনা করলে আমরা গ্রহণ করবো, আর মন্দ কথা বললে ধর্তব্যে নেব না।’ তিনি আরও বলেন, যখন দেশে একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি থাকে, যখন দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি হয়, সাধারণ মানুষের উন্নতি হয়, তখন তারা কোনো কিছুই ভালো দেখে না। সবকিছুতেই কিন্তু খোঁজে। তারপরও তাদের একটা কিছু বলতে হবে। তো সেটা ভালো। এত সমালোচনা করেও আবার বলবে আমরা কথা বলতে পারি না। এ রোগটাও আছে। এটা অনেকটা অসুস্থতার মতো। বাজেটের সমালোচনার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আমার কথা হচ্ছে, আমার সাধারণ জনগণ খুশি কিনা। সাধারণ মানুষ খুশি কিনা। সাধারণ মানুষের ভালো করতে পারছি কিনা। এটা হচ্ছে বড় কথা। সাধারণ মানুষ এই বাজেটে খুশি কিনা, বাজেটে তাদের উপকার হচ্ছে কিনা সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
গতকাল পৃথক এক সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি দাবি করেছে, আগামী অর্থবছরের (২০১৯-২০) প্রস্তাবিত বাজেট ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। যারা অর্থনৈতিক অপশাসনের সুবিধাভোগী, এই বাজেট তাদের পক্ষে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশেকে দারিদ্র্য মুক্ত করা, উন্নত করা, সমৃদ্ধশালী করা এবং স্বাধীনতার সুফল পাওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আগে বাইরে গেলে বাংলাদেশকে কেউ চিনতো না। এখন আমাদের সবাই চেনে। এটাই আমাদের বড় পাওনা।’
আওয়ামী লীগের বিগত নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ কর্মসূচি বাস্তবায়নে পল্লী এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, গ্রাম যেন উন্নত হয়, সেখানকার মানুষ যেন শহরের মানুষের সুবিধা পায়, সেজন্য আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ‘আমার গ্রাম আমার শহর’ কর্মসূচির আলোকে পল্লী এলাকায় অবকাঠামো উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে দেশজুড়ে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার নতুন সড়ক এবং ৩০ হাজার ৫০০ মিটার ব্রিজ নির্মাণ করা হবে। সেজন্য এখাতে আগামী অর্থবছরে ৬৬ হাজার ২৩৪ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রস্তাবিত বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ রাখা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা কালো টাকা করে ফেলেছেন তাদের টাকাটা তো আগে স্ট্রিমলাইনে আনতে হবে। কোথায় গুঁজেগেজে রেখে দিয়েছে, তার ঠিক নেই, আবার ইঁদুরে খেয়ে না ফেলে? সেটাকে আনার একটা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ‘আর যারা সৎ পথে উপার্জন করে, তাদের এই চিন্তাই নাই ভয়ও নাই। আল্লাহর রহমতে তাদের কোন অসুবিধাও হবে না। তাদের হতাশ হওয়ারও কিছু নেই। কারণ সৎ পথে থাকলে হতাশ হতে হয় না। সততার অনেক পরীক্ষা-অগ্নিপরীক্ষা আমাকে দিতে হয়েছে। আমি কখনো হতাশ হইনি। যারা সৎ থাকে তাদের ভেতরে একটা দৃঢ়তা থাকে, একটা আত্মবিশ্বাস থাকে। যে কোনও অবস্থা মোকাবেলা করার মত একটা শক্তি থাকে। সেই শক্তিটা কিন্তু আমার সবসময় আছে। এটি আমি মনে করি। কাজেই যারা সৎ পথে, তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই। বরং তাদের যেন সুবিধা হয় সেটি আমরা দেখব।’
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে আরেক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, এটার জন্য কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংকের একটা আলাদা কমিটি করা আছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এটর্নি জেনারেল অফিস নিয়ে এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সবাই মিলে এটার ওপর একটা ব্যবস্থা হয়ে গেছে এবং এর এখন আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে। কাজেই যেখানেই এই ধরনের টাকা বা অর্থ পাচার হচ্ছে, সেটা ধরা পড়ছে এবং সেটার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আর কালো টাকা মানে এখানে মাঝে মাঝে যেটা হয়, কিছু অপ্রদর্শিত টাকা থেকে যায়, হয়ত কোন কারণে টাকা হাতে এসে যায় কিন্তু কোন কাজে লাগাতে পারে না। তখনই সেই টাকাটা নানাভাবে পাচার করতে চায়, বা অন্যভাবে ব্যবহার হয়। সেটা যাতে আর না হয়, সেটা বন্ধ করার জন্য এদেরকে একটা বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। আমরা একশোটা অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি করছি। আমাদের যে আইটি পার্কগুলো সেখানে কেউ যদি বিনিয়োগ করে তাকে কিন্তু সুনির্দিষ্ট হারে সুদ দিতে হবে। কেউ বিনিয়োগ করলে আমরা প্রশ্ন করব না।
ব্যাংকের ঋণের সুদের বিষয়ে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ব্যাংকের যে সমস্যাটি, আপনারা জানেন যে আমরা সব সময় চেয়েছি, চেষ্টা করেছি যেন সিঙ্গেল ডিজিটে থাকে। সিঙ্গেল ডিজিটে রাখার জন্য আমরা কিছু সুযোগ করে দিয়েছি। কিন্তু অনেক বেসরকারি ব্যাংক সেটা মানেনি। এবার বাজেটে বলা হয়েছে, এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের এই নিয়মটা মেনে চলতে হবে যেন ঋণটা সিঙ্গেল ডিজিটে হয়। তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে। কারণ এত বেশি চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ বাড়তে থাকলে মানুষ ব্যবসা করতে পারে না। সেদিকটা আমরা বিশেষভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি। আমরা অনেক আইন সংশোধন করব। অনেকগুলো আইন সংশোধন করতে হবে, সেই ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। আমরা চাপে নেই। এটা নিয়ে আমরা মিটিং করি। সরকারি ব্যাংক নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।
কৃষকের ধানের ন্যায্যমূল্যের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধানের গুদাম নির্মাণ হচ্ছে। ধান ক্রয় করার লক্ষ্য আমরা নিয়েছি। প্রায় চার লাখ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করার সিদ্ধান্ত দিয়েছি। কৃষকদের প্রণোদনা দেওয়া হয়। কৃষকদের নিজেদের অল্প অর্থই ব্যয় হয়। বলতে গেলে সরকারই সবচেয়ে বেশি অর্থ দিয়ে থাকে। কৃষকের সব রকমের সুযোগ-সুবিধা আমরা দিয়ে থাকি। আর করেছি বলেই এত ধান উৎপাদন হয়েছে, না হলে এত ধান উৎপাদন হতো না। অতীতেও উৎপাদন হয়নি, এখনো হতো না। কৃষকদের যেটা ভালোমন্দ, সেটা দেখা আমাদের দায়িত্ব। বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ, বিশ্বে ধান উৎপাদনে চতুর্থ। বেশি ধান উৎপাদন করতে পারলে কৃষক বেশি ধান বেচতে পারবে, সরকার তো ধান ক্রয় করছেই।
তিন কোটি কর্মসংস্থান সৃষ্টির বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, কর্মসংস্থান তৈরির কথা আমরা বলেছি, চাকরি দেওয়ার কথা বলিনি। ১০০ কোটি টাকা থোক বরাদ্দ রেখেছি, শিক্ষার কথা বলেছি প্রযুক্তি শিক্ষা, কারিগরি শিক্ষা। আমরা চাই যে প্রশিক্ষণ নিয়ে শিক্ষিত হয়ে নিজের কাজ নিজে করা শুরু করুক। মূলত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আছে, আর আছে বলেই ধান কাটার লোক পাওয়া যায় না। ধান কাটার জন্য লোক পাওয়া যাচ্ছে না কেন? কর্মসংস্থানের সুযোগ আছে বলেই ধান কাটার লোকের অভাব হচ্ছে। আমরা কর্মসংস্থানের কথা বললেই অনেকে চাকরির কথা বলেন। ১৬ কোটি মানুষকে কি চাকরি দেওয়া যায়? কোনো দেশ কি দেয়? মানুষ যেন কাজ করে খেতে পারে, সেই সুযোগটি তৈরি করা।
কৃষিখাতে সরকারের ভর্তুকি-প্রণোদনা অব্যাহত থাকবে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন বাড়াতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ ও প্রণোদনা থাকবে। কৃষি ভুর্তকি, ঋণ ও কৃষিপণ্য রফতানির ক্ষেত্রে প্রণোদনাও থাকবে। তিনি জানান, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে এবারের বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দাবির প্রেক্ষিতে বন্ধ থাকা এমপিওভুক্তির কাজ শুরু হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবার স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে। স্বাস্থ্য উন্নয়নের মাধ্যমে চিকিৎসা ও অন্যান্য সামাজিক সুবিধা নিশ্চিতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ৮টি মেডিকেল কলেজে নিউক্লিয়ার মেডিসিন ইনস্টিটিউট খোলা হবে। দেশের প্রত্যেকটি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছে দেওয়ার জন্য কাজ চলছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা আমরা অর্জন করবো, সে লক্ষ্যে কাজ করছে সরকার।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পত্রিকা, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কোন মালিক কোন ব্যাংকের কত টাকা ঋণ নিয়ে কত টাকা শোধ দেননি বা খেলাপি হয়েছেন, সেটি বের করলেই এ প্রশ্নের আর উত্তর দেওয়া লাগবে না। খেলাপি ঋণের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। তিনি বলেন, পত্রিকা বা ইলেকট্রনিক মিডিয়ার মালিকেরা কত ঋণ নিয়েছেন, সেটির একটি হিসাব নেওয়া হবে এবং তাঁদের টাকাটা শোধ দিয়ে তাঁদের পত্রিকায় লেখেন, এটি আমার অনুরোধ থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা এখানে পত্রিকায় কাজ করেন, তাদের একটি কথা জিজ্ঞেস করব, আপনারা কি একটি খবর নেবেন যে আপনাদের পত্রিকার মালিকেরা কে কোন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন এবং শোধ দিয়েছেন কিনা? আপনারা দয়া করে সব ব্যাংক থেকে এই তথ্যটি বের করেন, যত মিডিয়া এখানে আছেন, যত পত্রিকা…প্রত্যেকেই বলবেন (মালিকদের) যে এটা আমি অনুরোধ করেছি। তিনি বলেন, যেহেতু আমাদের সুদের হার অনেক বেশি। যেহেতু চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ হয়। আরেকটি বিষয় রয়ে গেছে, যখন হিসাব দেওয়া হয় তখন চক্রবৃদ্ধি হারে সেটি ধরে হিসাব দেওয়া হয়। যার ফলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ অনেক বড় দেখায়।
প্রশ্নোত্তর পর্ব শেষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হয়, বাজেটের ওপরে খুব একটা বেশি বলার আপনাদের নেই। কারণ আমরা বাজেট এমনভাবে করে দিয়েছি, যা সব মানুষেরই কাজে লাগবে। এই বাজেট যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয় সেই ব্যাপারে সকলে আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবে। যেন বাংলাদেশটাকে আমরা অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারি।

শেয়ার করুন

সম্পর্কিত পোস্ট